প্রবৃদ্ধি কমার আভাস, মূল্যস্ফীতিও নিম্নমুখী হবে: এডিবি

৭ জানুয়ারির ভোটকে ঘিরে অনিশ্চয়তার ঝুঁকিও জিডিপি কমার কারণ হতে পারে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Dec 2023, 03:38 PM
Updated : 19 Dec 2023, 03:38 PM

নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার পাশাপাশি অর্থনীতির সূচকগুলো সার্বিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থায় না থাকায় চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস আবারও কমিয়েছে এডিবি।

তবে মূল্যস্ফীতি নিয়ে কিছুটা ভালো সংবাদ দিয়ে ম্যানিলাভিত্তিক উন্নয়ন সহযোগী এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলেছে, আগামী কয়েক মাসে মূল্যস্ফীতির হার নিম্নমুখী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সংস্থাটির সবশেষ প্রকাশিত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক-ডিসেম্বর ২০২৩ প্রতিবেদনে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তবে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আগের পূর্বাভাসের চেয়ে জিডিপি কমে কত হবে এবং কোন মাসে মূল্যস্ফীতির হার কমে কত হবে তা প্রতিবেদনে বলা হয়নি। এর আগে এপ্রিলের পূর্বাভাসে তা সাড়ে ৬ শতাংশ হওয়ার কথা বলেছিল সংস্থাটি।

জুনে শেষ হতে যাওয়া চলতি অর্থবছরের পূর্বাভাসে প্রবৃদ্ধি কমার কারণ হিসেবে প্রধান রপ্তানিবাজারগুলোর অর্থনীতিতে ধীরগতির কারণে রপ্তানি কমে যাওয়া এবং উৎপাদন খাতে মাঝারি প্রবৃদ্ধি, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সরবরাহ না থাকা, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কথা তুলে ধরা হয়েছে।

পাশাপাশি ৭ জানুয়ারির ভোটকে ঘিরে অনিশ্চয়তার ঝুঁকিও এর কারণ হতে পারে বলে মনে করছে এডিবি।

মূল্যস্ফীতি কমে আসার কারণগুলোর বিষয়ে বলা হয়েছে, নানা পদক্ষেপের পরও গত জুলাই-অক্টোবব সময়ে খাদ্যপণ্যের উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে দুই অঙ্কের কাছাকাছি মূল্যস্ফীতি হয়। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অব্যাহত রাখা, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর উদ্যোগ, বিশ্ব বাজারে পণ্যমূল্য নিম্নমুখী হওয়া এবং ফসলের উৎপাদন বাড়ার আভাস মূল্যস্ফীতির পারদ কমাতে ভূমিকা রাখবে।

চলতি অর্থবছরে সরকার সাড়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। বাজেটে এ ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনের বছরে অর্থনীতির চলমান অবস্থায় তা অর্জিত হওয়া নিয়ে অর্থনীতিবিদরা সংশয় প্রকাশ করে আসছিলেন।

এডিবির পাশাপাশি আরেক উন্নয়ন সহযোগী বিশ্ব ব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমবে বলে তাদের নিয়মিত প্রতিবেদনগুলোতে জানিয়েছিল।

আইএমএফ ১০ অক্টোবরের পূর্বাভাসে ৬ শতাংশ, ওই মাসে বিশ্ব ব্যাংক ৫ দশমিক ৬ শতাংশ এবং গত এপ্রিলে আইএমএফ সাড়ে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল।

এর আগে গত এপ্রিলে প্রকাশিত এডিবির আউটলুকে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির হার চলতি অর্থবছর শেষে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে।

বাজেটে চলতি অর্থবছর শেষে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে সরকার। তবে মূল্যস্ফীতির পারদ চড়তে থাকায় পরে সরকার তা সংশোধন করে কমিয়ে ৭ শতাংশের মধ্যে রাখতে চাইছে সরকার।

বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ মালদ্বীপের প্রবৃদ্ধি কমার আভাস দিয়েছে এডিবি। এ অঞ্চলের বড় অর্থনীতির দুই দেশ ভারত ও চীনের প্রবৃদ্ধি অপরিবর্তিত থাকবে। ২০২৪ সালে ভারতে প্রবৃদ্ধি হবে ৬ শতাংশ এবং চীনে ৪ দশমিক ২ শতাংশ।

সবশেষ আউটলুকে দক্ষিণ এশিয়ার পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রেখে বলা হয়, এ অঞ্চলে ২০২৪ সালে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। আগামি বছরে এশিয়ায় প্রবৃদ্ধি হবে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ২০২৩ সালে তা আগের পূর্বাভাস থেকে সামান্য বেড়ে হবে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ।

অপরদিকে চলতি বছর দক্ষিণ এশিয়ায় মূল্যস্ফীতি হতে পারে পারে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বরের পূর্বাভাসও একই ছিল। বাংলাদেশ ও নেপালের উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণেই তা কমার বদলে একই রকম থাকবে। তবে ২০২৪ সালে তা কমে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ হবে।