সাতই মার্চে চট্টগ্রামে নানা আয়োজন

আওয়ামী লীগ, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নানা আয়োজনে পালিত হল সাতই মার্চ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 March 2021, 03:23 PM
Updated : 7 March 2021, 03:23 PM

রোববার বিকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে আলোচনা সভা করে নগর আওয়ামী লীগ।

সভায় নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, “সাতই মার্চ বাঙালি জাতিসত্তার জাগরণের ঐতিহাসিক দলিল। এই দিনটি জাতীয় দিবস পালনের সরকারি নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও আমরা ঘরে ঘরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে পারিনি। এই ব্যর্থতাকে স্বীকার করে আগামীতে এই দিনটিকে সম্মান ও শ্রদ্ধায় অভিষিক্ত করতে দলীয় নেতাকর্মীদের সজাগ হতে হবে।

“দলীয় শৃঙ্খলা যদি কেউ না মানেন তিনি অবশ্যই দলীয় প্রতিপক্ষ। যাদের সমর্থনে দলে অনুপ্রবেশ করেছেন তারা অবশ্যই দলের নীতি আদর্শচ্যুত হবেন। এদেরকে যারা প্রশ্রয় দিচ্ছেন তাদেরকেও একই পরিণতি ভোগ করতে হবে। আজ তারাই আমাদের প্রতিপক্ষ।”

নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, “১৯৭১ সালের সাতই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ একটি ঐতিহাসিক অর্জন। তাই এ দিনটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ দিয়ে গেছেন। তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাঙালি জাতিকে বিশ্বে একটি মর্যাদা এনে দিয়েছে।

“আমাদের মাঝে আত্ম সমালোচনা ও কটাক্ষ আছে। এগুলোর সুযোগ নেয় কিছু অবাঞ্চিত ব্যক্তি। তারাই এখন আমাদের প্রধান প্রতিপক্ষ। এরা মিটিং মিছিলে আসেন না, বড় বড় কথা বলেন, ব্যানার ও পোস্টার ও সংবাদপত্র বিবৃতিতে থাকেন সরব। তারা কখনও তৃণমূল নয়, সুযোগ সন্ধানী।”

নগর কমিটির প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, সুনীল কুমার সরকার, ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, নির্বাহী সদস্য সৈয়দ আমিনুল হক, হাজী বেলাল আহমেদ প্রমুখ।

চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর সেক্টর কমান্ডারাস ফোরামের আয়োজনে ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ও বাঙালির সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় দোস্ত বিল্ডিংয়ের কার্যালয়ে।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংগঠনের নগর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সরফরাজ খান চৌধুরী বাবুল বলেন, বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ আজ বিশ্ব ঐতিহ্যের অমূল্য দলিল। মূলত এই ভাষণের পর থেকেই বাঙালি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সাতই মার্চের ভাষণ আজ মুক্তিকামী মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস।

সংগঠনের জেলা সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম মন্টুর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার।

নূরে আলম সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজল আহমেদ, জাহিদ হোসেন শরীফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাদশা মিয়া, জেলা পরিষদ সদস্য আখতার মাহমুদ পারভেজ, মো. সেলিম চৌধুরী, আবদুল মালেক খান, সাহেদ মুরাদ শাকু, এডভোকেট সাইফুন্নাহার খুশী, হাজী সেলিম রহমান, মো. জসীম উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার পলাশ বড়ুয়া, মনোয়ার জাহান মনি প্রমুখ।

চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাটিয়ারি ক্যাম্পাসে আয়োজিত সেমিনারে মুখ্য আলোচক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. ইসমাইল খান।

সেমিনারে তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চ ভাষণের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে সকল অপশক্তিকে পরাজিত করতে হবে। বঙ্গবন্ধু উজ্জীবনী ভাষণে সেদিন বাঙালি জাতিকে প্রবঞ্চক পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে মুক্তির সংগ্রামে ধাবিত করেছিলেন।”

সেমিনারে বিশেষ আলোচক ছিলেন বিআইটিআইডির পরিচালক এম এ হাসান, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দেলোয়ার হোসেন, পরিচালক অর্থ মাসুদুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার হাসিনা নাসরিন ও উপ-পরিচালক পরিকল্পনা (উন্নয়ন) বিদ্যুৎ বড়ুয়া।

রোববার দুপুরে থিয়েটার ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সাতই মার্চের ভাষণ একটি শোষিত নির্যাতিত, অবদমিত ও নিরস্ত্র জাতিকে সশস্ত্র জাতিতে পরিণত করে অধিকার প্রতিষ্ঠা ও স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে মুক্তিযুদ্ধে উদ্দীপ্ত করেছিল।

“আমরা যারা রণাঙ্গনে ছিলাম এবং অস্ত্র হাতে হানাদার বাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণটি ছিল আমাদের জন্য যুদ্ধজয়ের মন্ত্রণা।”

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, হাসান মুরাদ বিপ্লব, পুলক খাস্তগীর, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, ভারপ্রাপ্ত সচিব ও প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক প্রমুখ।

আলোচনা সভার আগে বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণের উপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয় এবং সভা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।