২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজন মারা গেছেন। এই সময়ে ডেঙ্গু পজিটিভ হয়েছেন ১২ জন।
Published : 10 Sep 2024, 07:07 PM
চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত দুজন নারীর মৃত্যু হয়েছে একদিনে। চলতি মাসে এখন পর্যন্ত রোগটিতে মারা গেছে চারজন, যাকে উদ্বেগজনক বলে মনে করছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে আলাদা ওয়ার্ড চালুর নির্দেশ দিয়েছেন জেলার সিভিল সার্জন।
গত কিছুদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় এইডিস মশার লার্ভা অনুকূল পরিবেশ পেয়েছে, যাতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
তাই আঙিনা, বাগান, ছাদ এবং পরিত্যক্ত টব ও অন্যান্য সামগ্রীতে যাতে পানি জমে না থাকে সে বিষয়ে সচেতন হতে বাসিন্দাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সোমবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাকিলা আকতার ও শান্তা সরদার নামের দুজন নারী মারা গেছেন।
শাকিলা কক্সবাজারের চকরিয়ার বাসিন্দা। শান্তা বাসা চট্টগ্রাম কোতয়ালী থানা এলাকায়।
সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাদের মধ্যে একজনের ডেঙ্গু শক সিনড্রোমের কারণে রক্তচাপ দ্রুত কমে গিয়ে অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ফেইল করে মৃত্যু হয়েছে। অন্যজনের হৃদ্রোগ ছিল। ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার পর উনার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়।”
এই দুইজনসহ চলতি মাসের প্রথম নয় দিনে চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে চারজন মারা গেল, চলতি বছর কোনো এক মাসে যা সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যু।
সিভিল সার্জন বলেন, “মৃত্যুর বিষয়টি অ্যালার্মিং। পুরো স্বাস্থ্য বিভাগে ডেঙ্গু নিয়ে অ্যালার্ট করেছি। আমি নিজে আজ ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভিজিট করেছি।
“প্রত্যেক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
চলতি মাসে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে, মাসের প্রথম নয় দিনেই শনাক্ত হয়েছে ১১৬ জন, যাদের ১২ জনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে গত ২৪ ঘণ্টায়।
অগাস্টে মোট ২০২ জন এবং জুলাইতে ১৯৮ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিল চট্টগ্রাম জেলায়।
সিভিল সার্জন বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির পানি জমে থাকছে। সেখানেই মশার বিস্তার হচ্ছে। তাই আমাদের নিজের আঙিনা, বাগানের খোলা অংশ, ফেলে রাখা টব বা পাত্র এবং ছাদ পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।”
২০২৩ সালে চট্টগ্রাম জেলায় সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিল সেপ্টেম্বর মাসে ৩ হাজার ৮৯২ জন। সেই মাসে ২১ জন ডেঙ্গু রোগী মারা গিয়েছিল।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে সব মিলিয়ে ৭১৪ জন। তাদের মধ্যে নগরীর বাসিন্দা ৩৯২ জন। বাকি ৩২২ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।