চট্টগ্রামে চুরি করা দুই শিশু ফেনী ও লক্ষ্মীপুর থেকে উদ্ধার

দুই শিশুর একজনকে চুরি করা হয় ২২ সেপ্টেম্বর, আরেকজন চুরি হয় ২৭ অক্টোবর।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2022, 01:00 PM
Updated : 23 Nov 2022, 01:00 PM

চট্টগ্রামের বন্দর ও ইপিজেড এলাকা থেকে চুরি করা দুই শিশুকে ফেনী ও লক্ষ্মীপুর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার চট্টগ্রামের ইপিজেড ও বন্দর থানা পুলিশের আলাদা অভিযানে লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ ও ফেনী সদর উপজেলা থেকে দুই শিশুকে উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার করা শিশুদের একজনের বয়স তিন বছর, আরেকজনের আট মাস।

পুলিশ জানায়, এই দুই শিশুর উদ্ধারের ঘটনায় মোট আট জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ছয় জনকে আগেও বিভিন্ন মামলায় ধরা হয়েছিল।

দুই শিশুর মধ্যে তিন বছর বয়েসী শিশুকে গত ২২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের বন্দর থানার কলসীদিঘীর পাড় এলাকা থেকে এবং অন্য শিশুকে ২৭ অক্টোবর ইপিজেড থানার নিউমুরিং এলাকা থেকে চুরি করা হয় বলে পুলিশ জানায়।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (বন্দর) শাকিলা সোলতানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত ২২ সেপ্টেম্বর বন্দর থানার কলসীদিঘীর পাড় এলাকা থেকে জেমি নামের তিন বছর বয়েসী এক শিশুকে চুরি করে নিয়ে যায় এক যুবক।

“এ ঘটনায় শিশুটির বাবার করা মামলায় অভিযোগ করা হয়, নানীর সাথে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম আসার পথে ট্রেনে এক যুবকের সাথে পরিচয় হয়। ওই যুবক চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে নেমে তাদের সঙ্গে কলসীদিঘীর পাড় পর্যন্ত যায়। এ সময় সে পেছন থেকে জেমিকে নিয়ে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।”

উপ-কমিশনার শাকিলা বলেন, “এই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে কয়েক দফায় কুমিল্লার লাকসাম, চৌদ্দগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়। এক পর্যায়ে মঙ্গলবার মিরসরাই উপজেলার বারৈয়াহাট এলাকা থেকে জয়নাল আবেদীন ওরফে সুমনকে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়।

“তার দেওয়া তথ্যে ফেনী সদর উপজেলা থেকে আমেনা আক্তার নামে এক নারীর হেফাজত থেকে শিশু জেমিকে উদ্ধার করা হয়।”

পুলিশ কর্মকর্তা শাকিলা জানান, “আমেনা আক্তার নিঃসন্তান। আটক সুমন এই চুরি করা শিশু জেমিকে তার শ্যালিকার মেয়ে বলে ‘দত্তক’ দিয়েছিল। বিনিময়ে সুমন তার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নেয়।”

এদিকে, গত ২৭ অক্টোবর ইপিজেড থানার নিউমুরিং এলাকা থেকে চুরি করা শিশুকে লক্ষীপুরের চন্দ্রগঞ্জ উপজেলা থেকে উদ্ধার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

চট্টগ্রাম ইপিজেড থানার ওসি আব্দুল করিম বিডনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, “সাত মাস বয়েসী শিশুকে নিয়ে নিউমুরিং এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন তার বাবা-মা। ওই বাসায় এক রুমে সাবলেট নিয়েছিলেন কামরুল হাসান-তানিয়া দম্পতি ও মামুন নামের আরেকজন।

“গত ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় ওই শিশুকে ঘর থেকে চুরি করা হয়। শিশুর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই দিনই কামরুল হাসান, তার স্ত্রী তানিয়া ও তাদের পরিচিত রুবেল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ইপিজেড থানার এসআই আশীষ কুমার দে জানান, “গ্রেপ্তারদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বায়েজিদ থানার আমিন জুট মিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আরও দুই জনকে। পরে নোয়াখালীর সেনবাগ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সীমা আক্তারকে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা শিশুটিকে লক্ষীপুরের চন্দ্রগঞ্জে রাখার তথ্য জানায়।

“মঙ্গলবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চন্দ্রগঞ্জ থেকে রোমানা আক্তার নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করে তার হেফাজত থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।”

গ্রেপ্তার নারী-পুরুষরা শিশু পাচার চক্রের সদস্য জানিয়ে এসআই আশীষ বলেন, “ওই শিশুকে চুরি করে পরদিনই চন্দ্রগঞ্জে রোমানার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।

“প্রথমে ছয় জনকে গ্রেপ্তারের পর তাদের তথ্যে আমরা একাধিকবার চন্দ্রগঞ্জে অভিযান চালিয়েছি কিন্তু ওই শিশুকে উদ্ধার করা যায়নি। রোমানা বারবার শিশুটিকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে ছিলেন।”