‘বিদেশি প্রভুর প্রেসক্রিপশনে’ ক্ষমতা নির্ধারণ হবে না: নাছির

“ক্ষমতাধর বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর মনে রাখা উচিত, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র,” বলেন এই আওয়ামী লীগ নেতা। 

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 May 2023, 02:52 PM
Updated : 19 May 2023, 02:52 PM

বাংলাদেশের ক্ষমতায় কে আসবে বা কে যাবে, কোনো ‘বিদেশি প্রভুর’ ইংগিতে তা নির্ধারণ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।  

শুক্রবার চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত 'বিএনপি জামায়াতের নৈরাজ্য ও নাশকতাবিরোধী' সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।  

সাবেক মেয়র নাছির বলেন, “কোনো বিদেশি প্রভুর প্রেসক্রিপশনে নয়, ক্ষমতায় কে আসবে বা কে যাবে তা এদেশের জনগণ তাদের ভোটধিকারের মাধ্যমে নির্ধারণ করে দেবে। ক্ষমতাধর বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর মনে রাখা উচিত, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র।  

"দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো বিদেশি শক্তির নাক গলানোর সুযোগ নেই। ক্ষমতাধর একটি দেশ বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি দেখে হতবাক। এটা তাদের সহ্য হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় থাকুক ওই দেশটি চায় না। ক্ষমতাবান সেই দেশটির চরিত্র ও ভূমিকা কারো অজানা নয়।" 

মুক্তিযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কথা মনে করিয়ে দিয়ে নাছির বলেন, “১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে ওই দেশটি পাকিস্তানের পক্ষে বঙ্গপোসাগরে সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল। বৈশ্বিক প্রতিবাদ ও নিন্দার মুখে ওই সপ্তম নৌবহরকে ফিরে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল।  

" যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ও পাকিস্তানের পক্ষে ভেটো দিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের পক্ষে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন পাল্টা ভেটো প্রদান করায় তাদের স্বার্থ হাসিল হয়নি এবং তারা পরাজিত হয়। পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে এরা স্বাধীন বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরুদ্ধে পরাজিত পাকিস্তানের সাথে ষড়যন্ত্র করে।" 

আওয়ামী লীগ নেতা নাছির বলেন, "১৯৭৩ সালে নগদ মূল্যে আমেরিকা থেকে বাংলাদেশ খাদ্য সামগ্রী কিনেছিল। বাংলাদেশে একটি কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির কুমতলবে আমেরিকা খাদ্যবাহী জাহাজটিকে ফিরিয়ে নেয় এবং প্রচার করে যে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষে লক্ষ লক্ষ লোক মারা যাবে। 

"এই সাময়িক দুর্ভিক্ষ বঙ্গবন্ধু মোকাবিলা করে সফলতার সাথে বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সৌভাগ্যবশত সে বছর বাম্পার ফসল উৎপাদিত হয়। এটাও তাদের সহ্য হয়নি। তাই ১৯৭৫ সালে মার্কিনি গোয়েন্দা সংস্থা সিআই ও পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার পরিকল্পনায় ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।" 

সমাবেশে চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ বলেন, "আমরা শান্তি চাই। কিন্তু নাশকতা ও নৈরাজ্য চাই না। এবার রাজপথে শুধু সমাবেশ করে নয়, প্রতিটি ইউনিটে, ওয়ার্ডে ও থানায় নাশকতা- নৈরাজ্যকারীদের সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করা হবে।" 

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, "বিএনপি-জামায়াত বুঝে গেছে শেখ হাসিনা বেঁচে থাকলে এদেশকে তাদের এজেন্ডা অনুযায়ী পাকিস্তান বানানো যাবে না। একুশ বার শেখ হাসিনার প্রাণনাশের ব্যর্থ চেষ্টার পরও আল্লাহর রহমতে তিনি বেঁচে গেছেন। এটা বিএনপি জামাতের মাথাব্যথার বড় কারণ।  

"আগামী ২৪ জানুয়ারীর মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা ও শেখ হাসিনার বিজয় ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।" 

নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনীর সঞ্চালনায় সমাবেশে নগর কমিটির সহ সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য শফর আলী, কার্যনির্বাহী সদস্য আবুল মনছুর, কামাল উদ্দীন আহমেদ, জাফর আলম চৌধুরী, মো. ইলিয়াছ, নেছার উদ্দীন আহমেদ মঞ্জু বক্তব্য দেন।