কিশোরের কাছ থেকে মোবাইল ছিনতাই, বাসের চালকসহ গ্রেপ্তার ৪

তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভুক্তভোগীর স্বজন।

যাত্রীর কাছ থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে চট্টগ্রামে চালকসহ একটি বাস আটকে পুলিশে দিয়েছে জনতা।

নগরীর বন্দর থানার ২ নম্বর মাইলের মাথা এলাকায় শনিবার রাতে এ ঘটনায় তিনজনকে ধরে পিটুনি দেয় জনতা। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাত্রীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল উদ্ধার এবং আরেকজনকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার চারজন হলেন- মাহমুদুল করিম (২০), মো. রাকিব ওরফে মেহেদী (১৯), সাইদুল ইসলাম জিসান (১৯) ও মো. মফিজ (২৯)। তাদের মধ্যে মাহমুদুল বাসটির মূল চালক ও মফিজ ছিলেন বদলি চালক।

বন্দর থানার ওসি সঞ্জয় কুমার সিনহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, রাঙামাটির ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর শনিবার চট্টগ্রামে তার বোনের বাসায় বেড়াতে আসে। ষোলশহর ২ নম্বর গেইট থেকে ওই কিশোর মাইলের মাথা এলাকায় যাবার জন্য ১০ নম্বর রুটের একটি বাসে উঠেছিলেন।

ওই কিশোরের অভিযোগ, বাস চালকের সহকারীরা তাকে গন্তব্যে না নামিয়ে পেছনে বসিয়ে রেখে কাঠগড় এলাকায় নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর বাসটি সেখান থেকে ফেরার পথে ইপিজেড এলাকা থেকে কয়েক জন নারী যাত্রীও তোলেন। এ সময় বাসের একজন ওই কিশোরের কাছ থেকে কথা বলার জন্য মোবাইল ফোনটি নিয়ে অন্য এক জনকে দিয়ে দেন। ওই যুবক বাস থেকে নেমে গেলে ভুক্তভোগী কিশোর চিৎকার শুরু করে, তখন তাকে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়।

ওসি সঞ্জয় জানান, ওই কিশোরের চিৎকারের কারণে বাসে থাকা যাত্রীরাও চিৎকার শুরু করলে রাস্তায় থাকা লোকজন বাসটি আটকে ফেলে এবং চালক ও তার সহকারীদের মারধর শুরু করে। পরে পুলিশ গিয়ে বাসসহ তিন জনকে ধরে থানায় নিয়ে আসে।

বাস চালক ও সহকারীরা মিলে কৌশলে এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা সঞ্জয় সিনহা বলেন, “কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে কাঠগড়গামী ১০ নম্বর রুটের বাসটির মূল চালক মাহমুদুল। বাসটি ষোলশহর থেকে কাঠগড় যাওয়ার সময় মাহমুদুল চালকের আসনে ছিলেন। জিসান ও মফিজ ছিলেন তার সহকারী। বয়সে ছোট বলে তারা ওই কিশোরকে ধমক দিয়ে গন্তব্যে আসার পরও বাস থেকে নামতে না দিয়ে কাঠগড় নিয়ে চলে যায়।

“কাঠগড় থেকে ফেরার পথে মাহমুদুল তার বদলি হিসেবে মফিজকে বাসটি চালাতে দেন। পথে মেহেদীকে বাসে ‍তুলে নেন। কিছু দূর আসার সময় মাহমুদুল টেলিফোন করার কথা বলে ওই কিশোরের কাছ থেকে মোবাইল সেটিটি নিয়ে নেন।”

ভুক্তভোগী কিশোরের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, ওই কিশোর মোবাইল ফেরৎ চাইলে মাহমুদুল সেটি মেহেদীকে দিয়ে দেয় এবং মেহেদী বাস থেকে নেমে পড়ে। এ সময় মাইলের মাথা এলাকায় ওই কিশোর যাত্রীকে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়ার সময় তার সাথে বাসে থাকা নারী যাত্রীরা চিৎকার শুরু করে।

ওসি সঞ্জয় সিনহা জানান, জনতার হাত থেকে ওই তিন জনকে আটক করে থানায় আনার পর জিজ্ঞাসাবাদে তারা মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। পরে তাদের দেওয়া তথ্যে চান্দগাঁও থানার পাঠানিয়া গোদা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনিয়ে মোবাইল সেটটিসহ মেহেদীকে আটক করা হয়।

এ ঘটনায় ওই কিশোরের দুলাভাই বাদী হয়ে গ্রেপ্তার চার জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন।