ভারতের এই বোলিং আক্রমণই রোহিতের চোখে সেরা

শামি-বুমরাহ-জাদেজাদের বোলিংয়ে মুগ্ধ ভারত অধিনায়ক।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Nov 2023, 04:46 PM
Updated : 18 Nov 2023, 04:46 PM

আগে ব্যাটিং করে কোনো দল ভারতের বিপক্ষে করতে পারেনি তিনশ। রান তাড়ায়ও কোনো দল যেতে পারেনি খুব একটা কাছে। তাদের বিপক্ষে সবচেয়ে ছোট হারও ৭০ রানের। এতেই অনেকটা স্পষ্ট ভারতের বোলারদের দাপট। বিশ্বকাপ জুড়ে আলো ঝলমলে পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে চলেছেন মোহাম্মদ শামি। নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক করে যাচ্ছেন জাসপ্রিত বুমরাহ, কুলদিপ ইয়াদাভ, রবীন্দ্র জাদেজা ও মোহাম্মদ সিরাজ। এই বোলিং-লাইনই অধিনায়ক ও খেলোয়াড় হিসেবে সেরা মানছেন অধিনায়ক রোহিত শার্মা।    

স্রেফ ৬ ম্যাচ খেলেই উইকেট সংগ্রাহকদের তালিকার চূড়ায় উঠে এসেছেন শামি। মাত্র ৯.১৩ গড় ও ১০.৯ স্ট্রাইক রেটে নিয়েছেন ২৩ উইকেট। ইতিহাসের প্রথম বোলার হিসেবে এক আসরে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন তিনবার। সেরা ৭/৫৭।

বুমরাহ নিয়েছেন ১৮ উইকেট। এই পেসার ওভার প্রতি দিয়েছেন কেবল ৩.৯৮ রান! আরেক পেসার সিরাজ নিয়েছেন ১৩ উইকেট। দুই স্পিনার জাদেজা ও কুলদিপ মিলে নিয়েছেন ৩১ উইকেট। দুই জনই রান দিয়েছেন সাড়ে চারের নিচে। 

বিশ্বকাপে যে বোলিং করে যাচ্ছেন শামি-বুমরাহরা, সেটা যে কোনো অধিনায়কের জন্যই স্বপ্নের মতো। টানা ১০ জয়ে ফাইনালে ওঠার পেছনে তাদের অবদানের কথা বরাবরই বলা হচ্ছে ভারত দলের পক্ষ থেকে। এবার বোলারদের প্রশংসায় রোহিত দিলেন আরও বড় স্বীকৃতি। বলেছেন, এই বোলিং আক্রমণই খেলোয়াড় ও অধিনায়ক হিসেবে তার দেখা সেরা।

“হ্যাঁ, এটা আমি বলতে পারি। এই টুর্নামেন্টে বোলাররা আমাদের জন্য খুব ভালো কাজ করছে। টুর্নামেন্টের শুরুতে আমরা প্রথম চার বা পাঁচ ম্যাচে রান তাড়া করেছিলাম। সে সময় ভারতের কন্ডিশনে প্রতিপক্ষকে তিনশ রানের নিচে থামিয়ে রাখা দারুণ একটি ব্যাপার। এটা সহজ কিছু নয়। তবে আমাদের পেসার ও স্পিনাররা সেটা নিখুঁতভাবে করেছে।”

“আর টুর্নামেন্টের পরের ধাপে যখন আমাদের ডিফেন্ড করতে হয়েছে, তখনও সেটা খুব নিখুঁতভাবে করেছে তারা। আমি মনে করি, ওরা খুবই পেশাদার। তারা জানে, তাদের কাছে প্রত্যাশাটা কী। দ্বিতীয় অংশে খেলা তিন পেসার শামি, সিরাজ ও বুমরাহ জানে তাদের জন্য চাওয়াটা কী এবং তারা কাজটা কীভাবে করতে চায়। মিডল অর্ডারে যখন উইকেটের প্রয়োজন হয়েছে তখন স্পিনাররা আক্রমণে এসেছে আর তারা সেটা করেছে। আমার মনে হয়, নিজেদের কাজে এবং দলের জন্য কাজটা সম্পন্ন করায় তারা খুবই পেশাদার ছিল।”

প্রথম ৫ ম্যাচে রান তাড়া করে জিতেছে ভারত। পরের ৫ ম্যাচে জিতেছে আগে ব্যাট করে। কোনো ম্যাচেই লম্বা সময়ের জন্য তাদের জয় নিয়ে ভাবতে হয়নি। হার্দিক পান্ডিয়ার চোটে শামি একাদশে আসার পর কাজটা হয়ে গেছে আরও সহজ। 

নিয়মিত পারফর্ম করে গেলেও একাদশে নিয়মিত সুযোগ মিলছিল না শামির। বিশ্বকাপের ঠিক আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সুযোগ পেয়ে এক ম্যাচে নেন ৫ উইকেট, আরেকটিতে একটি। তবুও বিশ্বকাপে প্রথম চার ম্যাচে বাইরেই থাকতে হয় তাকে।

বোলিং ও ব্যাটিংয়ে বিকল্প বাড়াতে ভারত খেলছিল দুই পেস বোলিং অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া ও শার্দুল ঠাকুরকে একাদশে রেখে। বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজের বোলিংয়ে ফিল্ডিং করতে গিয়ে পান্ডিয়া চোট পেলে বাধ্য হয়ে পরিবর্তন আনে। বাদ পড়েন শার্দুল। দুই অলরাউন্ডারের জায়গায় একজন করে বিশেষজ্ঞ পেসার ও ব্যাটসম্যান খেলায় ভারত।

রোহিত ভালো করেই জানেন, বেঞ্চে বসে থাকার সেই সময়টা মোটেও সহজ ছিল না শামির জন্য। বিশ্বকাপে সব সময়ই তার রেকর্ড ভালো, টুর্নামেন্টর ঠিক আগে অমন বোলিংয়ে ৫ উইকেট। তারপরও বাইরে থাকা, সেখান থেকে এসে এমন ভয়ঙ্কর সুন্দর বোলিং খুবই কঠিন। তাই দল অন্ত:প্রাণ শামির জন্য ভারত অধিনায়কের শ্রদ্ধা অগাধ।

“আমাদের সিনিয়র একজন বোলার হিসেবে টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে খেলতে না পারাটা শামির জন্য খুব কঠিন ছিল। তবে দলের প্রয়োজনে সে সবসময়ই তৈরি ছিল। যেভাবেই হোক সিরাজ, বুমরাহদের সহায়তা করার জন্য সে তৈরি ছিল।”

“এটা খুব পরিষ্কার যে, সে কেন খেলছে না এই ব্যাপারে তার সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছিল। তবে অবশ্যই, সাইডলাইনে থাকলেও সে নিজের বোলিং নিয়ে কাজ করে গেছে। আর ফলাফল সবার সামনেই, সে কীভাবে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এটা দেখাচ্ছে বিশ্বকাপ শুরুর আগে এবং এখনও শামির অবস্থা কেমন। একাদশে ফিরে সে যেভাবে আমাদের হয়ে কাজটা করেছে সেটা সহজ নয়।”