সেঞ্চুরিতে প্রাইম ব্যাংকের নায়ক এনামুল-নাসির

আগের ম্যাচে আউট হয়েছিলেন পঞ্চাশ পেরিয়ে। এবার আর ভুল করেননি এনামুল হক বিজয়। চার-ছক্কার বৃষ্টিতে করলেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। তিন অঙ্কের স্বাদ পেলেন নাসির হোসেনও। পরে বোলারদের নৈপুণ্যে রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাবকে হারিয়ে দিল প্রাইম ব্যাংক।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2022, 01:20 PM
Updated : 18 March 2022, 01:20 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে শুক্রবার প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের জয় ৮৬ রানে। ৩১৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় রূপগঞ্জ থমকে যায় ২২৮ রানে।

প্রাইম ব্যাংকের বড় সংগ্রহে সবচেয়ে বড় অবদান ওপেনার এনামুলের। ১২৫ বলে ৮টি করে চার-ছক্কায় ১২৭ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা তিনিই।

পায়ে টান লাগায় মাঠ ছাড়ার আগে ১০৩ বলে ১২ চার ও ২ ছক্কায় ১০৫ রান করেন নাসির। তৃতীয় উইকেটে এনামুলের সঙ্গে তার জুটি ১৯৬ রানের।

দলটির হয়ে বোলিংয়ে আলো ছড়ান যুব বিশ্বকাপ জয়ী বাঁহাতি স্পিনার রকিবুল হাসান। ৪৪ রানে তার প্রাপ্তি ৪ উইকেট।

বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে প্রাইম ব্যাংক। ইনিংসের প্রথম বলেই ফরহাদ রেজাকে পুল করে ছক্কায় ওড়ান এনামুল, পঞ্চম বলে গ্লান্স করে চার। পরের ওভারে তিনি পরপর চার-ছক্কা মারেন শফিকুল ইসলামকে।

রানের খাতা খুলতে পারেননি আরেক ওপেনার শাহাদাত হোসেন। তৃতীয় ওভারে তরুণ এই ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করে দেন ফরহাদ। তিন নম্বরে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ভারতীয় ব্যাটসম্যান অভিমন্যু ইশ্বরন (২১)।

এরপরই এনামুল ও নাসিরের ওই জুটি। দুজনের দারুণ ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যায় প্রাইম ব্যাংক। আরিফুল হককে পুল করে ছক্কা মেরে এনামুল ফিফটি পূর্ণ করেন ৫৯ বলে। এরপর বাবা অপরাজিথকে পরপর দুই ছক্কা মারেন স্লগ সুইপে।

এনামুল হক জুনিয়রকে ছক্কায় উড়িয়ে নাসির পঞ্চাশ পা রাখেন ৫২ বলে। শফিকুল ইসলামকে কাভারে খেলে ১০৭ বলে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে দ্বাদশ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন এনামুল। তাকে ফিরিয়েই বড় জুটিটি ভাঙেন ফরহাদ। ওই ওভারেই চার মেরে নাসির তুলে নেন সেঞ্চুরি, ১০১ বলে।

পরের বলে দুই রান নেওয়ার সময় খোড়াচ্ছিলেন নাসির। বাইরে গিয়ে ফিজিওর শুশ্রুষা নেওয়ার পর আবার ক্রিজে ফেরেন। তখনই আবার টান লাগে পায়ে। এবার আর চালিয়ে যেতে পারেননি, মাঠ ছাড়েন তিনি।

শেষের দাবি মেটাতে পারেননি শামসুর রহমান ও অলক কাপালি। নাহিদুল ইসলামের ১৫ বলে ২০ রানের সুবাদে তিনশ ছাড়ায় প্রাইম ব্যাংকের সংগ্রহ।

বোলিংয়ে প্রথম সাফল্য আসে নাহিদুলের হাত ধরেই। প্রথম ওভারে এই অফ স্পিনার ফিরিয়ে দেন মিজানুর রহমানকে।

দ্বিতীয় উইকেটে জাকির হাসান ও অপরাজিথের জুটিতে এগিয়ে যায় রূপগঞ্জ। ১৮ ওভারে দলটির স্কোর স্পর্শ করে একশ। জাকির ফিফটির পর ইনিংস টেনে নিতে পারেননি আর। তাকে ফিরিয়ে ১০৫ রানের জুটি ভাঙেন রকিবুল। ৫৯ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৬৩ রান করেন কিপার-ব্যাটসম্যান।

বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ফজলে মাহমুদ রাব্বি (৩২)। অধিনায়ক মার্শাল আইয়ুব যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। ফিফটি করে অপরাজিথ চালিয়ে যাচ্ছিলেন লড়াই। কিন্তু রান আউটে তার বিদায়ের পরই ম্যাচ থেকে একরকম ছিটকে যায় রূপগঞ্জ।

৯৩ বলে ৭ চারে অরপরাজিথ করেন সর্বোচ্চ ৭৯ রান। ৫৮ রানের মধ্যে শেষ ৭ উইকেট হারিয়ে ৩৪ বল বাকি থাকতে গুটিয়ে যায় রূপগঞ্জ।

দুই ম্যাচের দুটিতেই জিতল প্রাইম ব্যাংক। সমান ম্যাচে রূপগঞ্জ প্রথম হারের স্বাদ পেল।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব: ৫০ ওভারে ৩১৪/৬ (এনামুল ১২৭, শাহাদাত ০, অভিমন্যু ২১, নাসির ১০৫, শামসুর ৬, কাপালি ৪, মেহেদি ১৭*, নাহিদুল ২০; ফরহাদ ৮-০-৫৫-২, শফিকুল ১০-০-৫১-২, মুকিদুল ৯-০-৫৫-০, এনামুল জুনিয়র ৫-০-৩৯-১, শরিফউল্লাহ ১০-০-৪৬-০, আরিফুল ৬-০-৪০-০, অপরাজিথ ২-০-২৫-০)

রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব: ৪৪.২ ওভারে ২২৮ (মিজানুর ৪, জাকির ৬৩, অপরাজিথ ৭৯, ফজলে মাহমুদ ৩২, মার্শাল ৩, আরিফুল ১৮, শরিফউল্লাহ ০, ফরহাদ রেজা ১৩, শফিকুল ৪*, এনামুল জুনিয়র ২, মুকিদুল ৩; নাহিদুল ৬-০-৪৫-১, মেহেদি ৮-০-৩৮-০, দেলোয়ার ৪-০-১৬-০, রকিবুল ১০-১-৪৪-৪, রুবেল ৭-০-৪২-১, কাপালি ৯.২-১-৪২-৩)

ফল: প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ৮৬ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: এনামুল হক।