বেঙ্গালোরে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে ২৫২ রানে ভারতের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে দিয়েও স্বস্তিতে নেই শ্রীলঙ্কা। দিন শেষ করেছে তারা ৬ উইকেট হারিয়ে ৮৬ রান নিয়ে। এখনও ১৬৬ রানে পিছিয়ে সফরকারীরা।
দিবা-রাত্রির এই টেস্টে লঙ্কান স্পিনারদের দাপটের দিনে পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে ৯২ রানের ইনিংস খেলেন শ্রেয়াস। তার দারুণ ইনিংসেই মূলত আড়াইশ রান পার করতে পারে স্বাগতিকরা।
ভারতের ১০ উইকেটের ৮টিই নেন স্পিনাররা। একটি ছিল রান আউট। সর্বোচ্চ তিনটি করে শিকার লাসিথ এম্বুলদেনিয়া ও প্রাভিন জয়াবিক্রমার।
শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন ভারতের পেসাররা। জাসপ্রিত বুমরাহ নেন তিনটি, মোহাম্মদ শামির শিকার দুই উইকেট।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই ‘নো’ বলে রান আউটে কাটা পড়েন মায়াঙ্ক আগারওয়াল। টিকতে পারেননি রোহিত শর্মাও। এম্বুলদেনিয়ার ঝুলিয়ে দেওয়া বলে পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করার চেষ্টায় স্লিপে ধরা পড়েন ভারত অধিনায়ক।
শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টায় বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি বিরাট কোহলি ও হনুমা বিহারি। পরপর দুই ওভারে ফেরেন দুইজনই। জয়াবিক্রমার বলে কট বিহাইন্ড হন বিহারি (৩১), ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা এলবিডব্লিউ করে দেন কোহলিকে (২৩)।
আউট হওয়ার পর হতভম্ব হয়ে যান কোহলি, বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন ক্রিজে। ধনাঞ্জয়ার বল অনেকটা নিচু হয়ে আঘাত হানে সাবেক ভারত অধিনায়কের প্যাডে। ভারত লাঞ্চ বিরতিতে যায় ৪ উইকেটে ৯৩ রান নিয়ে।
দলের ওপর থেকে চাপ সরিয়ে দিতে পাল্টা আক্রমণ চালান রিশাভ পান্ত। ধনাঞ্জয়াকে টানা দুই চারের পর জয়াবিক্রমাকে মারেন দুটি। একবার জীবনও পান তিনি ১৮ রানে। তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিং থামান এম্বুলদেনিয়া। ৭ চারে ২৬ বলে ৩৯ রান করা পান্ত হন বোল্ড।
এরপর আক্রমণ শুরু করেন শ্রেয়াস। দ্রুত রান তোলায় মনোযোগ দেন তিনি। তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা রবীন্দ্র জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, আকসার প্যাটেল, শামি।
জয়াবিক্রমাকে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে মারার চেষ্টায় হন স্টাম্পড। থামে তার ৯৮ বল স্থায়ী ৯২ রানের ইনিংস। যেখানে ৪ ছক্কার সঙ্গে ছিল ১০টি চার।
ভারতের হয়ে আর কেউ ছুঁতে পারেন ৪০ রানও। একটিও পঞ্চাশ রানের জুটি পায়নি স্বাগতিকরা।
প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার স্পিনাররা দাপট দেখালেও দ্বিতীয় ভাগে জ্বলে ওঠেন ভারতের পেসাররা। গত বছরের জানুয়ারির পর টেস্ট খেলতে নামা কুসল মেন্ডিস ও লাহিরু থিরিমান্নেকে পরপর দুই ওভারে দারুণ দুটি আউটসুইঙ্গারে ফেরান বুমরাহ। দুবারই স্লিপে দারুণ ক্যাচ নেন শ্রেয়াস।
আক্রমণে এসে প্রথম বলেই দিমুথ করুনারত্নের স্টাম্প এলোমেলো করে দেন শামি। ব্যাট ও প্যাডের ফাঁক গলে বোল্ড হন লঙ্কান অধিনায়ক। ধনাঞ্জয়াও শামির শিকার। দলে ফেরা আকসারের বলে আকাশে তুলে দিয়ে অশ্বিনের হাতে ধরা পড়েন চারিথ আসালাঙ্কা।
এক প্রান্ত আগলে রেখে লঙ্কানদের টানছিলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। দ্বিতীয় স্পেলে আক্রমণে এসে তার প্রতিরোধ ভাঙেন বুমরাহ। অফ স্টাম্পের বাইরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে শট খেলে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দেন ২ ছক্কা ও ৩ চারে ৪৩ রান করা ম্যাথিউস।
দিনের শেষ ১১ বল নিরাপদে কাটিয়ে দেন নিরোশান ডিকভেলা ও এম্বুলদেনিয়া। ১৩ রান নিয়ে খেলছেন লঙ্কান কিপার ব্যাটসম্যান ডিকভেলা। এখনও রানের খাতা খুলতে পারেননি এম্বুলদেনিয়া।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত ১ম ইনিংস: ৫৯.১ ওভারে ২৫২ (মায়াঙ্ক ৪, রোহিত ১৫, বিহারি ৩১, কোহলি ২৩, পান্ত ৩৯, শ্রেয়াস ৯২, জাদেজা ৪, অশ্বিন ১৩, আকসার ৯, শামি ৫, বুমরাহ ০*; লাকমল ৮-৩-১২-১, বিশ্ব ৩-০-১৮-০, এম্বুলদেনিয়া ২৪-২-৯৪-৩, জয়াবিক্রমা ১৭.১-৩-৮১-৩, ধনাঞ্জয়া ৭-১-৩২-২)
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৩০ ওভারে ৮৬/৬ (মেন্ডিস ২, করুনারত্নে ৪, থিরিমান্নে ৮, ম্যাথিউস ৪৩, ধনাঞ্জয়া ১০, আসালাঙ্কা ৫, ডিকভেলা ১৩*, এম্বুলদেনিয়া ০*; বুমরাহ ৭-৩-১৫-৩, অশ্বিন ৬-১-১৬-০, শামি ৬-১-১৮-২, জাদেজা ৬-১-১৫-০, আকসার ৫-১-২১-১)