ক্রলির দুর্দান্ত সেঞ্চুরি, অপেক্ষায় রুট

ইংলিশ টপ অর্ডারের আঁধার ফুঁড়ে অবশেষে আলোর বিচ্ছুরণ! জ্যাক ক্রলি ও জো রুটের ব্যাটের জ্যোতি দলকে এনে দিল আলো ঝলমলে দিন। ইংল্যান্ড টেস্ট দলের নতুন শুরুর পথচলায় আস্থা রাখার প্রতিদান দিয়ে ক্রলি উপহার দিলেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। ক্যারিবিয়ান বোলারদের হতাশ করে তিন অঙ্ক ছোঁয়ার কাছাকাছি অধিনায়ক রুটও।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 March 2022, 05:24 AM
Updated : 12 March 2022, 12:21 PM

ক্রলি ও রুটের দুর্দান্ত জুটি অ্যান্টিগা টেস্টে ইংল্যান্ডকে পৌঁছে দিল নিরাপদ অবস্থানে। শুক্রবার চতুর্থ দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ইংলিশদের রান ১ উইকেটে ২১৭।

প্রথম ইনিংসে ৬৪ রানের ঘাটতি পুষিয়ে এখন তারা এগিয়ে ১৫৩ রানে। বৃষ্টিতে দিনের খেলা শেষ হয় প্রায় ২৪ ওভার আগেই।

দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরিতে ক্রলি অপরাজিত ১১৭ রানে, রুট দিন শেষ করেন ৮৪ রানে। দ্বিতীয় উইকেটে দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ১৯৩।

অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, দ্বিতীয় উইকেটে শতরানের জুটি পেল ইংল্যান্ড ৩৯ ইনিংস পর! সবশেষ ২০২০ সালের জুলাইয়ে ররি বার্নস ও জো রুট ১১২ রান যোগ করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই ওল্ড ট্রাফোর্ডে।

সকালে ৯ উইকেটে ৩৭৩ রান নিয়ে দিন শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যোগ করে আর কেবল ২ রান। দিনের তৃতীয় বলেই জ্যাক লিচ ফিরিয়ে দেন ক্যারিবিয়ানদের শেষ ব্যাটসম্যান জেডেন সিলসকে।

ম্যাচে তখনও ইংল্যান্ডের জন্য শঙ্কার জায়গা ছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের লিড ৬৪ রানের, গোটা প্রায় দুই দিন তখনও বাকি। ইংলিশ টপ অর্ডারের অবস্থা ভঙ্গুর। শঙ্কা তাদের আরও বেড়ে যায়, যখন কেমার রোচ দারুণ সুইঙ্গিং ডেলিভারিতে ফিরিয়ে দেন অ্যালেক্স লিসকে।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৭ সেঞ্চুরিতে ৭ হাজারের বেশি রান করে টেস্ট ক্যাপ পাওয়া লিস অভিষেকে করলেন ৪ ও ৬।

তবে শুরুর নড়বড়ে ভাবটা কাটিয়ে ইংল্যান্ড এগিয়ে যায় ক্রলি ও রুটের ব্যাটের দৃঢ়তায়। নতুন বলে রোচ সুইং আদায় করতে পারলেও অন্য কোনো ক্যারিবিয়ান পেসার সেভাবে হুমকি হয়ে উঠতে পারেননি। উইকেট থেকে মেলেনি বোলারদের খুব একটা সহায়তা। উইকেট ভাঙবে ধারণা করা হলেও তা হয়নি। বরং স্পিনার ভিরাসামি পেরমল চতুর্থ দিনেও কোনো প্রভাব রাখতে পারেননি। তার ১০ ওভারে আসে ৫১ রান!

ক্রলি ২০২০ সালের অগাস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে সাউথ্যাম্পটনে খেলেছিলেন ২৬৭ রানের ইনিংস। এরপর ব্যর্থতার অনেক প্রহর পেরিয়ে আবার পেলেন আরেকটি টেস্ট সেঞ্চুরির স্বাদ। ১৮১ বলে তিনি স্পর্শ করেন শতরান।

দুই সেঞ্চুরির মাঝের ২১ ইনিংসের মধ্যে ১২টিতেই তিনি আউট হন দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগে। ব্যাটিং টেকনিকের গলদও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। দলে জায়গা হারানো, আবার সুযোগ পাওয়া, ব্যর্থ হয়ে বাদ পড়া, এই পালা চলতে থাকে কয়েক দফায়।

সবশেষ গত অ্যাশেজের মাঝামাঝি আবার একাদশে ফেরেন। সিডনিতে খেলেন ৭৭ রানের ইনিংস। তিন টেস্টে ফিফটি করতে পারেন ওই একটিই, তবু অ্যাশেজ শেষে দলের ভাঙাগড়ার খেলায় তিনি টিকে যান কোনোরকমে। এবার এই সেঞ্চুরিতে আবার ইঙ্গিত দিলেন ওপেনিংয়ে জায়গা থিতু করে নেওয়ার। 

এই ইনিংসের পথে টেস্ট ক্রিকেটে হাজার রানও পূর্ণ হয় তার ১৯তম টেস্টে।

রুট ফর্মেই ছিলেন। গত বছর রানের রেকর্ড গড়েন। কিন্তু অ্যাশেজে তিনবার ফিফটি পেরিয়েও সেঞ্চুরির দেখা পাননি। শেষ দিন শুরু করবেন তিনি তিন অঙ্কে চোখ রেখেই।

বৃষ্টির কারণে ২৪ ওভারের মতো খেলা ভেস্তে না গেলে হয়তো ম্যাচে উত্তেজনা থাকত আরও বেশি। এখন সবচেয়ে সম্ভাব্য ফল ড্র। তবু শেষ দিনে খানিকটা আশা নিয়েই শুরু করবে ইংল্যান্ড, নাটকীয় কিছু যদি হয়!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩১১

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৩৭৫

ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: ৬৩.২ ওভারে ২১৭/১ (লিস ৬, ক্রলি ১১৭*, রুট ৮৪*; রোচ ১৩-২-৩১-১, সিলস ১২-২-৫১-০, হোল্ডার ১০-২-২৪-০, জোসেফ ১৪-৩-৩৫-০, পেরমল ১০-০-৫১-০, ব্র্যাথওয়েট ৪-০-১৪-০, বনার ০.২-০-৬-০)