মিরাজ নামার সময়ই ডমিঙ্গো বলেছিলেন ‘দেড়শ রানের জুটি হবে’

ম্যাচের পর অধিনায়ক তামিম ইকবালের কণ্ঠে ছিল সরল স্বীকারোক্তি, জয়ের আশা তিনি ছেড়ে দিয়েছিলেন। বড় পরাজয়ের অপেক্ষায় ছিলেন সম্ভবত প্রায় সবাই। তবে বাংলাদেশের ড্রেসিং রুমের একজনের দাবি, ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ের পরও তিনি বিশ্বাস হারাননি! মেহেদী হাসান মিরাজ উইকেটে যাওয়ার সময়ই নাকি কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলেছিলেন, এবার বড় জুটি হবে!

ক্রীড়া প্রতিবেদকচট্টগ্রাম থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Feb 2022, 12:34 PM
Updated : 24 Feb 2022, 12:34 PM

স্মরণীয় জয়ের পরদিন সংবাদ সম্মেলনে সেই গল্প শোনালেন ডমিঙ্গো নিজেই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২১৬ রান তাড়ায় যখন ৪৫ রানে ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ, বিব্রতকর হারের শঙ্কা তখন চেপে বসেছে। তবে ড্রেসিং রুমে বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্স অ্যানালিস্ট শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরনকে তখনই জয়ের কথা বলেছিলেন বলে দাবি ডমিঙ্গোর।

“জানি না তখন নাফিস (লজিস্টিক ম্যানেজার নাফিস ইকবাল) আশেপাশে ছিল কিনা, কিন্তু যখন মিরাজ উইকেটে যাচ্ছে, তখন শ্রীকে বলছিলাম যে, ‘শ্রী, এই দুজন দেড়শ রানের একটি জুটি গড়লে কেমন হবে?’ শ্রী তখন মজা করে বলছিল, ‘তারপরও ১৫ রান দরকার হবে তাসকিন-শরিফুলদের নিয়ে!’ দেখুন, মিরাজের ব্যাটিংয়ে এখন অনেক আস্থা আছে (দলের)। একটি টেস্ট সেঞ্চুরি করেছে, বিপিএলে দারুণ ব্যাটিং করেছে। নিউ জিল্যান্ডেও ভালো ব্যাট করেছে।”

“জানি এখন শুনলে স্টুপিডের মতো মনে হবে এবং বিশ্বাস করা কঠিন। কিন্তু কিছুটা বিশ্বাস তখনও ছিল (জয়ের)। আমি অন্তত বিশ্বাস করেছি। উইকেট ভালো, রান রেট কোনো সমস্যা ছিল না। আমি জানি, আফিফ কতটা ভালো ক্রিকেটার। টি-টোয়েন্টিতে দেখিয়েছে সে কতটা দারুণ। সাদা বলে বাংলাদেশের সেরাদের একজন হতে যাচ্ছে সে। ওদেরকে এরকম ব্যাটিং করতে দেখা তাই সন্তুষ্টির। ওই জুটি নিয়ে আমি গর্বিত।”

মিরাজ উইকেটে যাওয়ার সময় জয়ের বিশ্বাস থাকলেও সঙ্গে ছিল শঙ্কার দোলাচল। মিরাজ ও আফিফের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে শঙ্কাগুলো আস্তে আস্তে দূর হয়ে উজ্জ্বল হতে থাকে সম্ভাবনা। একটা পর্যায়ে ফ্লাড লাইট বিভ্রাটে খেলা বন্ধ থাকে মিনিট পনের। তখন মোমেন্টাম চলে যাওয়ার ভয়ও কিছুটা পেয়ে বসেছিল বাংলাদেশ কোচকে। তবে আফিফ ও মিরাজের দারুণ ব্যাটিংয়ে আবার স্বস্তি ফেরে কোচের মনে।

“যখন আর ৬০ রানের মতো প্রয়োজন, তখন সত্যিকার অর্থে মনে হলো যে ভালো সম্ভাবনা আছে। কারণ, মোমেন্টাম আমাদের সঙ্গে ছিল। ওদের বোলিংয়ে বিকল্প কমে যাচ্ছিল। উইকেটের আচরণও ভালো ছিল। আলো চলে যাওয়ার সময়টায় অবশ্য আমি একটু নার্ভাস ছিলাম। মনে হচ্ছিল, মোমেন্টাম হারিয়ে ফেলতে পারি।”

“আলোর বিভ্রাটের আগে খুব ভালো দুই-তিন ওভার কেটেছে আমাদের। ভাবছিলাম তখন, ‘উফ, আশা করি মোমেন্টাম নষ্ট হবে না।’ এরপর আফিফ একটু আঘাত পেল… তবে ওই সময়টায় ওরা দারুণ পরিণত ব্যাটিংয়ে পার করেছে। ৫০-৬০ রান যখন লাগবে, তখন সত্যিই বিশ্বাস করতে শুরু করলাম যে এখন সম্ভব।”

শেষ পর্যন্ত সেই সম্ভাবনাই সত্যি হয়েছে। সপ্তম উইকেটে আফিফ ও মিরাজের ১৭৪ রানের রেকর্ড গড়া জুটিতে ধরা দিয়েছে স্মরণীয় জয়।