ম্যাক্সওয়েল-ইংলিসের ব্যাটে অস্ট্রেলিয়ার চারে চার

প্রতিপক্ষের মূল তিন পেসার না থাকলেও বড় সংগ্রহ দাঁড় করাতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। মাঝারি রান নিয়েও লড়াই করেন বোলাররা। তবে চমৎকার জুটিতে তাদের আক্রমণ সামাল দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান গ্লেন ম‍্যাক্সওয়েল ও জশ ইংলিস।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Feb 2022, 11:58 AM
Updated : 18 Feb 2022, 01:13 PM

মেলবোর্ন ক্রিকেট মাঠে শুক্রবার চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে ৬ উইকেটে জিতেছে বিশ্ব চ‍্যাম্পিয়নরা। টানা চার জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে লঙ্কানদের হোয়াইটওয়াশ করার মঞ্চ তৈরি করে রেখেছে অ্যারন ফিঞ্চের দল।

পেস ত্রয়ী মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স, জশ হেইজেলউডকে বিশ্রাম দেওয়া ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম তিন উইকেটেই ত্রিশ ছাড়ানো জুটি পায় শ্রীলঙ্কা। তবে এরপরও টস হেরে ব‍্যাটিংয়ে নামা দলটি গড়তে পারেনি বড় সংগ্রহ।

সফরকারীদের ১৩৯ রান ম্যাক্সওয়েল ও ইংলিসের ৭১ রানের জুটিতে ১১ বল আগেই পেরিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।

২০ বলে ২ ছক্কা ও ৩ চারে ৪০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ফেরেন ইংলিস। ম্যাক্সওয়েল মাঠ ছাড়েন দলের জয় সঙ্গে নিয়ে। ৩৯ বলে ৩ চারে ৪৮ রান করা এই অলরাউন্ডারই জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

শেষটা আরও একবার হতাশার হলেও ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালোই ছিল শ্রীলঙ্কার। দানুশকা গুনাথিলাকা ও পাথুম নিসানকার ব্যাটে ৪ ওভারে তারা তুলে ফেলে ৩৫ রান। সেখানেই অবশ্য শেষ উদ্বোধনী জুটি, অ্যাশটন অ্যাগারের বলে ফেরেন গুনাথিলাকা। পাওয়ার প্লেতে আসে ৪১ রান।

দারুণ ছন্দে থাকা নিসানকার সঙ্গে দলের রান বাড়ানোয় মনোযোগ দেন কুসল মেন্ডিস। ম্যাক্সওয়েলকে ছক্কায় ওড়ানোর পর মেন্ডিস আরেকটি মারেন কেন রিচার্ডসনকে।

বিপজ্জনক হয়ে ওঠা ৪১ রানের এই জুটি ভাঙে রান আউটে। লং-অন বাউন্ডারি থেকে ম্যাক্সওয়েলের বুলেট গতির থ্রো এলোমেলো করে দেয় স্টাম্প। ২৭ রানে বিদায় নেন মেন্ডিস।

চারিথ আসালাঙ্কাকে নিয়ে আবার জুটি গড়ার চেষ্টা চালান নিসানকা। কিন্তু সম্ভাবনাকে পূর্ণতা দিতে পারেনি এই জুটিও। আসালাঙ্কার বিদায়ে জুটি থামে ৩৪ রানে।

৭ উইকেট হাতে থাকলেও শেষ চার ওভারে ঝড় তুলতে পারেননি লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। এই সময়ে ২৭ রান তুলতে হারায় আরও ৫ উইকেট।

পঞ্চাশ ছোঁয়ার আগেই অ্যাডাম জ্যাম্পার বলে স্টাম্পড হয়ে ফেরেন নিসানকা। তার ৪৬ রানের ইনিংসে ৪ চারটি। দিনেশ চান্দিমাল, দাসুন শানাকারা মেটাতে পারেননি পরিস্থিতির দাবি।

গত মার্চের পর অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে দারুণ বোলিং করেন জাই রিচার্ডসন। কেবল ২০ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। মিতব্যয়ী বোলিংয়ে অ্যাগারের ১৪ রান দিয়ে শিকার একটি।

পুঁজি অল্প হলেও দুর্দান্ত বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়াকে শুরুতে চাপে ফেলে দেয় লঙ্কানরা। পাওয়ার প্লেতে কেবল দুটি বাউন্ডারি মারতে পারে স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। মাহিশ থিকশানাকে ফিরতি ক্যাচ দেওয়া বেন ম্যাকডারমটকে হারিয়ে তারা এই সময়ে তোলে ৩০ রান।

পাওয়ার প্লের পরের ওভারে দলে ফেরা লাহিরু কুমারার শর্ট বল পুল করে বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন ফিঞ্চ। ওপেনিংয়ে নেমে ধুঁকতে থাকা অ্যাগারও কুমারার শিকার।

৪৯ রানে ৩ উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়াকে টানেন ম্যাক্সওয়েল ও ইংলিস। সব দুঃশ্চিন্তা উড়িয়ে দেন দারুণ ব্যাটিংয়ে। ম্যাক্সওয়েল ছিলেন কিছুটা শান্ত, আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে রান বাড়ান ইংলিস।

দল যখন জয়ের কাছে দুশমন্থ চামিরার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ইংলিস। পরে মার্কাস স্টয়নিস ও ম্যাক্সওয়েল শেষ করেন বাকিটা।

মেলবোর্নেই আগামী রোববার সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে দুই দল। লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো পাঁচ টি-টোয়েন্টির সিরিজ খেলতে নেমেই প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার হাতছানি অস্ট্রেলিয়ার সামনে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ১৩৯/৮ (নিসানকা ৪৬, গুনাথিলাকা ১৭, মেন্ডিস ২৭, আসালাঙ্কা ২২, চান্দিমাল ২, শানাকা ১, করুনারত্নে ১৪*, চামিরা ১, থিকশানা ৩, ভ্যান্ডারসে ৫*; স্যামস ২-০-১৪-০, জাই রিচার্ডসন ৪-০-২০-২, কেন রিচার্ডসন ৪-০-৪৪-২, ম্যাক্সওয়েল ২-০-২১-০, অ্যাগার ৪-০-১৪-১, জ্যাম্পা ৪-০-২৬-১)

অস্ট্রেলিয়া: ১৮.১ ওভারে ১৪৩/৪ (অ্যাগার ২৬, ম্যাকডারমট ৯, ফিঞ্চ ২, ম্যাক্সওয়েল ৪৮*, ইংলিস ৪০, স্টয়নিস ৮*; থিকশানা ৪-০-২০-১, কুমারা ৪-০-২২-২, চামিরা ৪-০-৩৩-১, করুনারত্নে ২.১-০-২২-০, ভ্যান্ডারসে ৪-০-৪৩-০)

ফল: অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে জয়ী

সিরিজ: ৫ ম্যাচের সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ৪-০ তে এগিয়ে

ম্যান অব দা ম্যাচ: গ্লেন ম্যাক্সওয়েল