আইপিএল খেলতে না চাওয়ার কারণ জানালেন স্টোকস

টেস্ট ক্রিকেটে সাম্প্রতিক সময়ে ইংল্যান্ডের করুণ অবস্থা নাড়িয়ে দিয়েছে বেন স্টোকসের ভাবনার জগত। আইপিএলের অর্থের ঝনঝনানি তাই স্পর্শ করছে না ইংলিশ অলরাউন্ডারকে। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পূর্ণ মনোযোগ দিতে ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন তিনি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Feb 2022, 03:44 PM
Updated : 8 Feb 2022, 04:21 PM

সবশেষ অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ৪-০তে বিধ্বস্ত হওয়ার পর আইপিএলের ২০২২ আসরের মেগা নিলামে নাম না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন জো রুট। টেস্ট ক্রিকেটে নিজের পুরো সময় দিতেই ইংলিশ অধিনায়কের এই সিদ্ধান্ত ছিল। ওই সময়ই শোনা যায় স্টোকসও হাঁটতে যাচ্ছেন রুটের পথে। যদিও তখন নিজে কিছু বলেননি এই ক্রিকেটার।

পরে আইপিএল নিলামের ক্রিকেটারদের চূড়ান্ত তালিকায়ও দেখা যায়নি স্টোকসের নাম। টুর্নামেন্টটিতে বেশ চাহিদা রয়েছে তার। ২০১৭ সালে হয়েছিলেন আসরের মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার। পরের মৌসুমের নিলামে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক দিয়ে তাকে দলে নেয় রাজস্থান রয়্যালস। দলটির হয়ে এখন পর্যন্ত ৩১ ম্যাচ খেলে একটি করে সেঞ্চুরি ও ফিফটিতে করেছেন ৬০৪ রান। বল হাতে নিয়েছেন ১৬ উইকেট।

এবারের নিলামেও ঝড় ওঠার প্রবল সম্ভাবনা ছিল স্টোকসকে ঘিরে। খেলতে চাইলে দল পেয়ে যেতেন সহজেই। নতুন দল লাক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টের মেন্টর গৌতম গম্ভীর তো বলেছেন, মার্কাস স্টয়নিসকে না নিয়ে স্টোকসের সঙ্গে চুক্তি করতেন তারা।

কিন্তু স্টোকস মনোযোগ দিতে চান টেস্ট ক্রিকেটে। গত এক বছরে তাদের টেস্ট পারফরম্যান্স একদমই ভালো নয়। এই সময়ে ১৫ ম্যাচ খেলে ইংল্যান্ডের জয় কেবল দুটিতে। তবে সবশেষ অ্যাশেজে বাজেভাবে হারার পর ভাবনা বদলে গেছে বলে ডেইলি মিররে নিজের কলামে লিখেছেন স্টোকস।

“এবারের অ্যাশেজ খুবই হতাশার কেটেছে। তবে আমাদের এখান থেকে শিখতে হবে এবং যে অবস্থানে আমরা থাকতে চায় সেখানে ফিরতে দল তৈরি শুরু করতে হবে। এটা সময়ের ব্যাপার, সময় লাগবে অবশ্যই। এমনকি সাদা বলের দলটিও বিশ্বকাপ জয়ের মতো অবস্থায় পৌঁছতে সময় নিয়েছে।”

“আমাদের টেস্ট দল নিয়েও এখন একই পথে হাঁটা জরুরি। যেখানে সবাই প্রয়োজনীয় উন্নতি করতে এবং আবারও সেরা দলগুলোর একটি হতে শতভাগ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।”

২০১৫ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার-ফাইনালেই উঠতে পারেনি ইংল্যান্ড। গ্রুপ পর্বে ৬ ম্যাচের মধ্যে জিতেছিল কেবল ২ ম্যাচ, হেরেছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে। এরপর নিজেদের সাদা বলের ক্রিকেট নিয়ে ভাবনায় বদল আনে ইংল্যান্ড। কাজ শুরু করে ঘরের মাঠের পরের বিশ্বকাপকে সামনে রেখে। সাফল্যও পায় তারা। ২০১৯ সালের ওই আসরে ফাইনালে নিউ জিল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো জেতে ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা।

টেস্ট দল নিয়েও সেভাবে এগোনোর তাগিদ দিলেন স্টোকস। রুটের সঙ্গে সেই পথে এগিয়ে যেতে কাজ করতে চান তিনি।

“এটা (টেস্ট ক্রিকেট) নিয়ে আমার দৃষ্টিভঙ্গি এমন। টেস্ট ক্রিকেট আমার কাছে সবচেয়ে ওপরে। আমি জো রুটের সঙ্গে কাজ করতে চাই, লক্ষ্য ছোঁয়ার অভিযানে আমাদের অধিনায়ক হিসেবে সেই সেরা।”

“এই কারণে আমি সময় নিয়ে ভেবেছি আইপিএলে খেলব কি-না। মনে হলো, এটা অর্থের বিষয় নয়। বরং আমার কাছে কোনটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, সেটিই আসল। যদি সেখানে (আইপিএল) পুরোপুরি মনোনিবেশ করতে না পারি, তাহলে কোনো দলের সঙ্গে চুক্তি করা ঠিক হবে না।”

আগামী মার্চে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তিনটি টেস্ট খেলবে ইংল্যান্ড। এরপর জুনে রয়েছে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি টেস্ট। আসছে ম্যাচগুলোকে সামনে রেখে নিজেকে পুরোপুরি প্রস্তুত রাখার উদ্দেশ্যে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্টে কিছু ম্যাচ খেলতে চান স্টোকস।