বিপিএলে সোমবার চট্টগ্রামে ফরচুন বরিশালকে ১৪৫ রানে থামিয়ে দেয় খুলনা। উইকেট ব্যাটিং সহায়ক, সঙ্গে রাতের শিশির ভেজা বল। সব মিলিয়ে তখন খুলনাই ফেভারিট।
কিন্তু প্রথম ১০ ওভারে জয়ের দিকে এগিয়ে যাওয়ার বদলে খুলনার টপ অর্ডার খুঁড়ে ফেলে খাদ! দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও আন্দ্রে ফ্লেচার যেন শট খেলতেই ভুলে যান। পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারালেও রান ওঠে স্রেফ ২২।
মুজিব উর রহমান ও সাকিব আল হাসানের সামনে স্রেফ মাথা নিচু করে পড়ে থাকেন সৌম্য ও ফ্লেচার। দুজনই যেন চাইছিলেন, কোনোরকমে বরিশালের দুই স্পিনারের ওভারগুলো পার করে দিতে।
দুজন পরেও পারেননি লম্বা ইনিংস খেলে পুষিয়ে দিতে। সৌম্য আউট হন ২২ বলে ১৩ রান করে, ফ্লেচার ২৩ বলে ১২। তিনে নেমে রনি তালুকদার করতে পারেন ১২ বলে ৬।
দ্রুত রান তোলার জন্য ওপরে নামানো থিসারা পেরেরাও যখন বিদায় নিলেন স্রেফ ৩ বল খেলে, ১০ ওভারে তখন খুলনার রান ৪ উইকেটে ৩৫!
এরপর ইয়াসির আলি চৌধুরি ৩৪ বলে ৫৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেললেও পারেনি দল। মুশফিক যদিও ২২ বলে ৩৩ করেন, তবে পরিস্থিতির দাবি ছিল আরও ঝড়ো কিছু।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মুশফিক আঙুল তুললেন সৌম্য-ফ্লেচারদের দিকেই।
“আমি জানি না, টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কী হয়েছিল। উইকেটে এমন কোনো অস্বস্তির উপকরণ ছিল না। আমরা (ব্যাটিংয়ে) প্রথম ৮-১০ ওভারেই ম্যাচ হেরে গেছি।”
“এই রান তাড়া করার মতোই ছিল। সবশেষ দুই ম্যাচে আমরা সুযোগ হাতছাড়া করেছি। মুজিব ও সাকিবকে সামলাতে সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে খেলতে হয়। হয় আউট হতে হবে, নয়তো রান করতে হবে। ২০-৩০ বলে খেলে রানও করছে না, আউটও হচ্ছে না, এরকম করলে তো চলবে না।”
সাকিব ৪ ওভারে ১০ রানে ২ উইকেট নেন। সঙ্গে ব্যাটিংয়ে ৪১ রানের জন্য জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। আফগান রহস্য স্পিনার মুজিব ৪ ওভারে একটি মেডেনসহ দেন কেবল ১৩। কোনো উইকেট না পেলেও তার বলে একটি ক্যাচ হাতছাড়া করেন ক্রিস গেইল।
যার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে কিছুটা আশা জাগায় খুলনার, সেই ইয়াসির আলি চৌধুরিও ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বললেন, টপ অর্ডারেই পিছিয়ে পড়েছে দল।
“এটা তাদের নিজেদের পরিকল্পনা। জানি না, কী হয়েছিল ওই সময়। সাকিব আল হাসান, মুজিব ভাই বোলিং করছিল ওই সময়। ওরা দুজন (ফ্লেচার-সৌম্য) মাঝখানে ছিল, ওরাই ভালো বুঝতে পারছিল যে কী হচ্ছিল। বাইরে থেকে অনেক কথাই বলা যায়। ওরা টেনে নিতে পারলে আমাদের জন্য সহজ হতো।”
“সাকিব ভাই, মুজিব ভাই বিশ্বমানের বোলার। এমন তো নয় যে তারা ফেলে দেওয়ার মতো বোলার। শুরুর দিকে আরেকটু আগ্রাসী বা ১০-১২ রান যদি এদিক-সেদিক হতো বা যোগ হতো, তাহলে আজতে হয়তো আমরা জিতে যেতে পারতাম।”