২০ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন ব্রেসনান

চোটের থাবায় টিম ব্রেসনানের সম্ভাবনাময় আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার থমকে গিয়েছিল অনেক আগেই। খেলা চালিয়ে যাচ্ছিলেন ঘরোয়া ক্রিকেটে। প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন আরেকটি মৌসুমের। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও শরীরটা আর সায় দিচ্ছে না। তাই ২০ বছরের পেশাদার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টেনে দিলেন ২০১০-১১ মৌসুমে ইংল্যান্ডের অ্যাশেজ জয়ের নায়কদের একজন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Jan 2022, 02:19 PM
Updated : 31 Jan 2022, 03:14 PM

গত বছর ওয়ারউইকশায়ারের অষ্টম কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন ব্রেসনান। কাউন্টি ক্লাবটির মাধ্যমেই বিবৃতিতে সোমবার অবসরের ঘোষণা দেন ৩৬ বছর বয়সী ক্রিকেটার।   

“এটি খুবই কঠিন সিদ্ধান্ত। কিন্তু শীতকালীন অনুশীলনে ফেরার পর আমার মনে হয়েছে এটিই সঠিক সময়। আমার ২১তম পেশাদার বছরের প্রস্তুতির জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি। কিন্তু গভীরভাবে অনুভব করে দেখলাম, আমি সেই মানদণ্ডে পৌঁছাতে পারছি না, যেটা আমি ও আমার সতীর্থরা নির্ধারণ করেছি।”

“যে খেলাটিকে ভালোবাসি তার জন্য আমার যে ক্ষুধা ও উত্সাহ তা কখনোই ফুরাবে না, কিন্তু আমার মন ২০২২ মৌসুমের জন্য খেলতে প্রস্তুত, শরীর নয়।”

২০১০-১১ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ায় ও ২০১৩ সালে দেশের মাটিতে অ্যাশেজ জয়ী ইংল্যান্ড দলের অংশ ছিলেন ব্রেসনান। ২০১১ সালে টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে ওঠা ইংল্যান্ড দলের সদস্যও ছিলেন তিনি। তিন সংস্করণ মিলিয়ে জাতীয় দলে হয়ে খেলেছেন ১৪২ ম্যাচ। ২৩ টেস্টে উইকেট ৭২টি, ৮৫ ওয়ানডেতে ১০৯টি ও ৩৪ টি-টোয়েন্টিতে তার উইকেট ২৪টি।

২০০৯ সালে লর্ডসে তার টেস্ট অভিষেক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। পরের বছর অস্ট্রেলিয়ায় স্টিভেন ফিনের বদলি হিসেবে ডাক পান বক্সিং ডে টেস্টের দলে। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়াকে ৯৮ রানে অলআউট করতে তিনি রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। দ্বিতীয় ইনিংসে ৫০ রানে নেন ৪ উইকেট। ইনিংস ব্যবধানে ম্যাচ জিতে ইংলিশরা নিশ্চিত করে অ্যাশেজ ট্রফি ধরে রাখা।

বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাট হাতেও ব্রেসনান ছিলেন বেশ কার্যকর। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক থেকে ২০১২ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের টানা ১৩ টেস্ট জয়ের অংশ ছিলেন তিনি। ছিলেন ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য। কিন্তু কনুইয়ের চোট লম্বা হতে দেয়নি আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। মোট তিনবার অস্ত্রোপচার করানোর পর বেশ ভুগেছেন আগের গতিতে বল করতে। ইংল্যান্ডের হয়ে তার সবশেষ ম্যাচ ২০১৫ সালে, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২১৩ ম্যাচে তার রান ৭ হাজার ১৩৮। সেঞ্চুরি ৭টি। হাত ঘুরিয়ে উইকেট ৫৭৫টি। ইনিংসে পাঁচ উইকেট ৯ বার। ২৮১ লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে ব্যাটিংয়ে ৩ হাজারের বেশি রানের পাশাপাশি বল হাতে উইকেট ৩১৬টি। ১৯১ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে তার প্রাপ্তি ১৯৬ উইকেট। 

কাউন্টি ক্রিকেটে ওয়ারউইকশায়ারের আগে তিনি লম্বা সময় খেলেছেন ইয়র্কশায়ারে, ২০০১ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে ইয়র্কশায়ারের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ে রাখেন অবদান। সব মিলিয়ে ক্যারিয়ার নিয়ে গর্বের শেষ নেই তার।

“আগামীতে সবসময় আমি খুব গর্বভরে আমার ক্যারিয়ারের দিকে ফিরে তাকাব। আমার হোম কাউন্টি, ওয়ারউইকশায়ার ও দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা পরম সম্মানের বিষয়। আমার বিশ্বাসই হতো না যে আমি কতটা ভাগ্যবান, দারুণ কিছু ক্রিকেটারের সঙ্গে ও বিপক্ষে খেলতে পেরেছি এবং উপভোগ করেছি।”

“জীবনের পরবর্তী অধ্যায়ের জন্য রোমাঞ্চ বোধ করছি এবং এখানে সব মনোযোগ দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, যেমনটি আমি এত বছর ধরে ক্রিকেট মাঠে করেছি।”