অ্যাশেজের অ্যাডিলেইড টেস্টের দ্বিতীয় দিন সকালে সেঞ্চুরি পূরণ করেন লাবুশেন। মাত্র ২০ টেস্ট খেলেই তার ৬ সেঞ্চুরি হয়ে গেল। সঙ্গে ফিফটিও আছে ১১টি। এই ইনিংস শেষে টেস্ট ব্যাটিং গড় ৬২.৪৮!
তবে এখনও পর্যন্ত তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে লড়িয়ে ও কঠিনতম পরীক্ষায় উতরে সেঞ্চুরি সম্ভবত এটিই। ম্যাচের প্রথম দিন থেকেই ইংলিশ বোলাররা দারুণ বোলিংয়ে আটকে রাখেন অস্ট্রেলিয়ানদের। ফিফটি ছুঁতেই লাবুশেনের লাগে ১৫৬ বল!
সেখান থেকে শতরান পর্যন্ত পথ পাড়ি দেওয়াটাও সহজ ছিল না। দুই দফায় জীবন পান। অল্পের জন্য বেঁচে যান কয়েক দফায়। পাশাপাশি নিজের টেকনিক, টেম্পারামেন্টের ছাপও রাখেন যথেষ্টই। আরেকবার দেখান নিজের জাত।
প্রথম দিন শেষ সেশনে তিনি ৯০ রানে পা রাখেন ২৩৩ বল খেলে। এরপর থেকেই শুরু অপেক্ষা। দিনের শেষ ৩২ বলে রান করেন তিনি স্রেফ ১। দিন শেষ করেন ২৭৫ বলে ৯৫ রান নিয়ে।
নব্বইয়ের ঘরে ৫৩ বল কাটানোর পর অবশেষে অবশেষে হয় তার অপেক্ষার। দ্বিতীয় দিন সকালে জিমি অ্যান্ডারসনের বল দ্বিতীয় স্লিপের পাশ দিয়ে গলিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন তিনি ২৮৭ বল খেলে।
২০০২ সালে ক্রিকেটে ‘বল বাই বল’ হিসাব রাখার শুরু হওয়ার পর থেকে নব্বই থেকে তিন অঙ্কে যেতে লাবুশেনের চেয়ে বেশি বল খেলতে হয়েছে কেবল মাইকেল ভনকে। ২০০৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যান্ডিতে ইংলিশ ব্যাটসম্যানের অপেক্ষা ছিল ৬৮ বলের।
সেঞ্চুরির পর অলিভার রবিনসনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। তবে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বলটি ছিল ‘নো।’
রবিনসন নিজের পরের ওভারেই শেষ পর্যন্ত ভাঙতে পারেন কঠিন এই প্রতিরোধ। ভেতরে ঢোকা বল পড়তে ভুল করে না খেলে ছেড়ে দেন লাবুশেন। বল লাগে প্যাডে। ইংলিশদের এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে রক্ষা পাননি ব্যাটসম্যান। ৩০৫ বলে ৮ চারে ১০৩ রানে শেষ হয় তার ইনিংস।
ক্যারিয়ারের প্রথম ৫ টেস্টে স্রেফ একটি ফিফটির পর একাদশে জায়গা হারানো লাবুশেনের টেস্ট ক্যারিয়ারের পুনরুজ্জীবন ২০১৯ অ্যাশেজ দিয়ে। সেবার লর্ডস টেস্টের একাদশে না থাকলেও ম্যাচের মাঝপথে তিনি সুযোগ পান স্টিভেন স্মিথের কনকাশন বদলি হিসেবে। দ্বিতীয় ইনিংস ব্যাটিংয়ে নেমে করেন ফিফটি। পরের দুই টেস্টে খেলেন ৭৪, ৮০ ও ৬৭ রানের ইনিংস। আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ছুটতে থাকে লাবুশেনের রান রথ।
ওই বছরই পাকিস্তান ও নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে টানা তিন টেস্টে খেলেন ১৮৫, ১৬২ ও ১৪৩ রানের ইনিংস। কিউইদের বিপক্ষে সিরিজে ডাবল সেঞ্চুরির স্বাদও পেয়ে যান। এই বছরের শুরুতে ভারতের বিপক্ষেও পান সেঞ্চুরি। এবার প্রথম অ্যাশেজ সেঞ্চুরির দেখাও পেয়ে গেলেন ২৭ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।