আইসিসি হল অব ফেমে জয়াবর্ধনে-পোলক-ব্রিটিন

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের আগে আইসিসির হল অব ফেমে নতুন তিন জনকে যোগ করার ঘোষণা দিয়েছে আইসিসি। দারুণ সমৃদ্ধ ক্রিকেট ক্যারিয়ারের জন্য এই সম্মাননা পাচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক পেস বোলিং অলরাউন্ডার শন পোলক, শ্রীলঙ্কার সাবেক ব্যাটসম্যান মাহেলা জয়াবর্ধনে ও ইংল্যান্ড নারী দলের সাবেক ব্যাটার জ্যানেট ব্রিটিন।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Nov 2021, 02:22 PM
Updated : 13 Nov 2021, 02:22 PM

দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে রোববার মাঠে গড়াবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের ফাইনাল। এই সংস্করণে নিজেদের প্রথম বৈশ্বিক শিরোপা ঘরে তুলতে মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ড।

ম্যাচটি শুরুর আগে সাবেক তিন তারকাকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই স্বীকৃতি দিবেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের টানা দুই বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েড।

এবারের তিন জনসহ এখনও পর্যন্ত মোট ১০৬ জন সাবেক ক্রিকেটারকে হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করল আইসিসি। নিজের সবশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অন্তত পাঁচ বছর পর এই স্বীকৃতির জন্য বিবেচিত হন ক্রিকেটাররা।

শ্রীলঙ্কার তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে হল অব ফেমে জায়গা পেলেন জয়াবর্ধনে। চলতি বছরই তার সতীর্থ ও বন্ধু কুমার সাঙ্গাকারা এই স্বীকৃতি পান। এর আগে পেয়েছিলেন দেশটির কিংবদন্তি স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরন।

শ্রীলঙ্কার গ্রেট ক্রিকেটারদের একজন জয়াবর্ধনে। দেশটির ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন এই ব্যাটসম্যান। শ্রীলঙ্কাকে আইসিসির আরও চারটি আসরের ফাইনালে তোলার পেছনে বড় অবদান ছিল তার।

লঙ্কানদের হয়ে ১৪৯ টেস্টে ৩৪ সেঞ্চুরিতে জয়াবর্ধনের রান ১১ হাজার ৮১৪। প্রথম লঙ্কান ক্রিকেটার হিসেবে সাদা পোশাকে ১০ হাজার রানের কীর্তিও তার। এই সংস্করণে দেশের হয়ে তার চেয়ে বেশি রান আছে কেবল সাঙ্গাকারার। ২০০৬ সালে সাঙ্গাকারার সঙ্গেই টেস্ট ক্রিকেটের সর্বোচ্চ ৬২৪ রানের জুটি গড়েন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। ওই ম্যাচে খেলা জয়াবর্ধনের ৩৭৪ রানের ইনিংসটি এখনও শ্রীলঙ্কার হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ।

ওয়ানডে খেলেছেন ৪৪৮টি। এখানেও দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি, ১৯ সেঞ্চুরিতে করেন ১২ হাজার ৬৫০ রান। ৫৫ টি-টোয়েন্টিতে তার রান এক হাজার ৪৯৩, সেঞ্চুরি আছে একটি।

শনিবার দেওয়া আইসিসির বিবৃতিতে এই সম্মান পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলা জয়াবর্ধনে।

“আইসিসি হল অব ফেমে জায়গা পেয়ে আমি রোমাঞ্চিত। শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি সাঙ্গা ও মুরালি এবং অতীতের আরও অনেক গ্রেট ক্রিকেটারদের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে পারা বিশেষ সম্মানের।”

“এই স্বীকৃতির জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমার এই পথচলায় যারা আমাকে সাহায্য করেছে; আমার পরিবার, বন্ধু, সব কোচ ও সতীর্থরা এবং সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট ভক্ত যারা আবেগ-ভালোবাসা দিয়ে সমর্থন করেছেন এবং ক্যারিয়ারে আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন, সবাইকে নিয়ে এই মুহূর্ত উপভোগ করতে চাই।”

দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটের সবসময়ের সেরা অলরাউন্ডারদের একজন পোলক। টেস্ট ও ওয়ানডেতে তিন হাজার রান ও ৩০০ উইকেটের ডাবলের কীর্তি গড়া প্রথম ক্রিকেটার তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার ৮২৩ উইকেটের ধারেকাছেও নেই দক্ষিণ আফ্রিকার আর কেউ।

১০৮ টেস্টের ক্যারিয়ারে তার রান ৩ হাজার ৭৮১, সেঞ্চুরি দুটি। ২৩.১১ গড়ে উইকেট ৪২১টি। আর ৩০৩ ওয়ানডেতে এক সেঞ্চুরিতে রান করেছেন ৩ হাজার ৫১৯। এই সংস্করণে নামের পাশে উইকেট আছে ৩৯৩টি, বোলিং গড় ২৪.৫০। পাঁচ বছরেরও বেশি সময় পোলক ছিলেন আইসিসির ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ বোলার।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে ২০০৮ সালে বিদায় জানানো পোলক টি-টোয়েন্টি খেলেছেন কেবল ১২টি।

গ্রেট সব ক্রিকেটারদের সঙ্গে হল অব ফেমে যুক্ত হতে পেরে গর্বিত ১৯৯৫ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। 

“আমার ক্যারিয়ারের এই স্বীকৃতির জন্য আমি আইসিসিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। গ্রেট সব ক্রিকেটার যারা এরই মধ্যে আইসিসি হল ফেমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, তাদের পাশে জায়গা পাওয়া অসাধারণ সম্মানের।”

মৃত্যুর পর আইসিসি হল অব ফেমের স্বীকৃতি পেলেন ব্রিটিন। ২০১৭ সালে ৫৮ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ১৯৭৯ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের হয়ে ২৭ টেস্ট ও ৬৩ ওয়ানডে খেলা এই ক্রিকেটার। নারীদের ক্রিকেটকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি।

টেস্টে ব্রিটিনের রান এক হাজার ৯৩৫, সেঞ্চুরি আছে ৫টি। নিজের সময়ে ইংলিশ নারী দলের সফল ব্যাটারদের একজন ছিলেন তিনি। সমান সেঞ্চুরিতে ওয়ানডেতে রান করেন ২ হাজার ১২১।