ব্যাটির আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের নাম। তার টেস্ট অভিষেক কিংবা প্রায় এক যুগ পর চমক জাগিয়ে আবার এই সংস্করণে ফেরা, সবই যে বাংলাদেশের বিপক্ষে। আবার টেস্টে ব্রায়ান লারার সেই মহাকাব্যিক ৪০০ রানের ইনিংসের প্রসঙ্গ উঠলেও চলে আসে তার নাম।
এই মাসেই ৪৪ বছর পূর্ণ করতে যাওয়া ব্যাটি গত দুই মৌসুমে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কাউন্টি দল সারেকে নেতৃত্ব দেন। শুক্রবার ক্লাবটির মৌসুম শেষের অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে অবসরের কথা জানান তিনি। তবে ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ হয়ে যাচ্ছে না একবারেই। সারের সহকারী কোচের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন তিনি।
দুই মেয়াদে সারের হয়ে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ব্যাটি ম্যাচ খেলেছেন ৩৭৭টি। যেখানে তার উইকেট ৫৩৪টি। ১১৪ উইকেট নিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে জেড ডার্নব্যাকের সঙ্গে যৌথভাবে ক্লাবটির সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি।
২০০৩ সালের বাংলাদেশ সফরে পেয়ে যান স্বপ্নের টেস্ট ক্যাপও। ওই সফরের পর ৩টি টেস্ট খেলেন শ্রীলঙ্কায়। পরের বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে অ্যান্টিগায় তার টানা দুই বলে ছক্কা ও চার মেরেই ম্যাথু হেইডেনের ৩৮০ রান ছাড়িয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড পুনরুদ্ধার করেছিলেন লারা। পরে তার বলে সিঙ্গেল নিয়েই টেস্টে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্যারিবিয়ান তারকা ছুঁয়েছিলেন ৪০০ রানের মাইলফলক।
এরপর ব্যাটি জায়গা হারান দলে। ২০০৫ সালে বাংলাদেশের ইংল্যান্ড সফরে আবার দলে ডাক পান। পেসারদের দাপট আর বাংলাদেশের ভঙ্গুর ব্যাটিংয়ে প্রথম টেস্টে বোলিংয়ের সুযোগই পাননি তিনি। পরের টেস্টেও দারুণ কিছু করতে না পারায় আবার দলে জায়গা হারান।
ব্যাটি অবশ্য ধৈর্য হারাননি। কাউন্টি ক্রিকেটে পারফর্ম করে যান ধারাবাহিকভাবে। অনেকেই যখন তার টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষ দেখে ফেলেছিলেন, সবাইকে অবাক করে দিয়ে ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ সফরে ডাক পেয়ে যান তিনি টেস্ট দলে, ৩৯ ছুঁই ছুঁই বয়সে।
চট্টগ্রামে দলের জেতা ম্যাচে তিনি উইকেট নিয়েছিলেন ৪টি। ঢাকায় পরের টেস্টেই এই সংস্করণে প্রথমবার ইংল্যান্ডকে হারায় বাংলাদেশ। ব্যাটি অবশ্য সে ম্যাচে একাদশে সুযোগ পাননি। পরে একটি টেস্ট খেলেন তিনি ভারত সফরে। যেটি হয়ে আছে তার ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট।
সব মিলিয়ে ৯ টেস্ট খেলে তার উইকেট ১৫টি। ১০ ওয়ানডেতে তার শিকার পাঁচ উইকেট। ইংল্যান্ডের হয়ে একটি টি-টোয়েন্টিও খেলেছেন তিনি। তবে পাননি কোনো উইকেট।
বিদায় বেলায় ব্যাটি ধন্যবাদ দিলেন তার দীর্ঘ পথচলায় সম্পৃক্ত সবাইকে। জানালেন, ক্যারিয়ারের নতুন অধ্যায় নিয়ে দারুণ রোমাঞ্চিত তিনি।
“২০ বছরের বেশি সময় ধরে পেশাদার ক্রিকেট খেলার সৌভাগ্য হয়েছে আমার...জানি দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আমি কতটা ভাগ্যবান।”
“যারা আমার উপভোগ্য এই ক্যারিয়ারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন, সতীর্থ, কোচ, পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং ভক্ত সবাইকে আমি ধন্যবাদ দিতে চায়। এখন অসাধারণ এই ক্লাবে নতুন অধ্যায় শুরু করা নিয়ে আমি রোমাঞ্চিত। সামনে যেসব চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ আসবে তার জন্য মুখিয়ে আছি।”