গত মৌসুমের দল থেকে সাকিব আল হাসান ও তাসকিন আহমেদকে ধরে রাখছে মোহামেডান। সঙ্গে দলটিতে যোগ দিচ্ছেন মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ ও সৌম্য সরকার। মোহামেডানের ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ও পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের বাসায় রোববার রাতে ক্লাবের চুক্তিতে সই করেন সাকিব ছাড়া অন্য চার জন।
আইপিএল খেলতে রোববার রাতে ঢাকা ছাড়েন সাকিব। সময়-সুযোগ মতো তিনি চুক্তিতে সই করবেন বলে নিশ্চিত করেছেন মোহামেডানের কর্মকর্তা এজিএম সাব্বির। এছাড়াও দুই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ ও শুভাগত হোমও চুক্তি করেছেন বলে নিশ্চিত করলেন মোহামেডানের এই পরিচালক।
মুশফিক গত আসরে খেলেন আবাহনী লিমিটেডে। চোটের কারণে শেষ কয়েক ম্যাচে খেলতে না পারলেও দলকে শিরোপা জয়ের পথে নেতৃত্ব দেন তিনি। এবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবে যোগ দিয়ে তিনি বললেন, ছেলেবেলার প্রিয় ক্লাব মোহামেডানের সোনালি সময় ফিরিয়ে আনায় ভূমিকা রাখতে চান তারা।
“মোহামেডান অবশ্যই শীর্ষ দলগুলির একটি। শেষ কয়েক বছরে তারা সাফল্য পায়নি। এজন্যই এবার পরিকল্পনা করেছে ভালো ক্রিকেটারদের নিতে। আমি সৌভাগ্যবান ও সম্মানিত বোধ করছি। অবশ্যই চেষ্টা থাকবে শিরোপার জন্য লড়াই করার। অনেক ভাগ্যের ব্যাপার যদিও থাকে লিগে। তবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য যে ধরনের দল দরকার (তা গড়া হয়েছে)…দল হিসেবে পারফর্ম করতে পারলে অবশ্যই শিরোপা আমাদের হবে।”
“মোহামেডানের জৌলুস একমাত্র খেলোয়াড়রাই ফিরিয়ে আনতে পারে। যদি ভালো ফল করতে পারি, তাহলে সমর্থকরা আবার ক্লাবের পাশে থাকবে। আশা করি, এবার এক নম্বরে থেকে শেষ করতে পারব।”
মাহমুদউল্লাহ গত আসরে নেতৃত্ব দিয়েছেন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে। মোহামেডানের সুসময় ফেরানোর তাগিদ তার কণ্ঠেও।
“মোহামেডান সবসময়ই ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেক বড় নাম। আগে একবারই এই ক্লাবে খেলার সৌভাগ্য হয়েছিল। এবার দ্বিতীয় বছর হবে। অনেক ভালো ক্রিকেট খেলে আমরা যেন মোহামেডানের সমর্থকদের চ্যাম্পিয়নশিপের স্বাদ দিতে পারি, এটাই থাকবে লক্ষ্য।”
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সবশেষ আসর শেষ হয়েছে গত ২৬ জুন। সামনের আসরের সম্ভাব্য সময় ধরা হয়েছে আগামী মার্চ। তবে লিগ যখনই হোক, জাতীয় দলের নিয়মিত এই ক্রিকেটারদের লিগে পাওয়া নিয়ে বড় সংশয়ের অবকাশ আছে।
সামনে জাতীয় দলের প্রচণ্ড ব্যস্ত মৌসুম। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে দেশে ফিরেই খেলতে হবে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২ টেস্ট ও ৩ টি-টোয়েন্টির সিরিজ। এরপর ডিসেম্বরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুটি টেস্ট, ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে নিউ জিল্যান্ড সফরে ২ টেস্ট, ৩ টি-টোয়েন্টি।
ফেব্রুয়ারি-মার্চে দেশের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩ ওয়ানডে ও ২ টি-টোয়েন্টি। ঢাকা লিগের সম্ভাব্য সময় যেটি, সেই মার্চ-এপ্রিলে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর। যেখানে আছে ২ টেস্ট, ৩ ওয়ানডে। এরপর জুন-জুলাইয়ে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর, জুলাই-অগাস্টে জিম্বাবুয়ে সফর।
মোহামেডানের কর্মকর্তা এজিএম সাব্বির জানালেন, জাতীয় ক্রিকেটারদের নিয়মিত পাওয়া যাবে না ধরেই শক্তির গভীরতা বাড়াচ্ছেন তারা। জাতীয় দলের পাশাপাশি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও ব্যস্ত সাকিবকে নিয়ে নিজেদের ভাবনাও জানালেন তিনি।
“আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এত ব্যস্ত সূচি আছে, সিনিয়র ক্রিকেটারদের অনেককে দেখা যাবে সেখানে ব্যস্ত। সেক্ষেত্রে তাদের অনুপস্থিতিতে দল যেন দুর্বল না হয়ে যায়, সেটার বিকল্প পরিকল্পনাও আমরা করছি।”
“সাকিবকে নিয়ে…এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দেখেন ভারত যা করেছে, মহেন্দ্র সিং ধোনিকে রেখেছে (মেন্টর হিসেবে)। তো সাকিবের উপস্থিতিই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সাকিব সবগুলি ম্যাচ খেলতে পারবে, এই নিশ্চয়তা সে বা আমরা কেউই দিতে পারছি না। তার অনেক ব্যস্ত সূচি। যখনই সুযোগ হবে, সে খেলবে। আর খেলুক বা না খেলুক, দলের সঙ্গে সে থাকবে সবসময়। সম্পৃক্ত থাকবে, পরামর্শ দেবে, খেলবে, সবকিছুই করবে।”