ব্যাটিং ব্যর্থতায় বাংলাদেশের বড় হার

ভালো শুরুর পর বোলাররা পারেননি বাকিটা দ্রুত শেষ করতে। ষষ্ঠ উইকেটে পঞ্চাশ ছোঁয়া এক জুটিতে চ্যালেঞ্জিং এক লক্ষ্য দেয় নিউ জিল্যান্ড। প্রথম তিন ওভারে পাঁচ বাউন্ডারির পর দিক হারায় বাংলাদেশ। পরে আর কক্ষপথে ফিরতে পারেনি স্বাগতিকরা। নিজেদের সর্বনিম্ন রান কোনোমতে এড়াতে পারলেও শেষ পর্যন্ত বড় ব্যবধানেই হেরেছে বাংলাদেশ। তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৫২ রানে জিতে ব্যবধান কমিয়েছে নিউ জিল্যান্ড।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Sept 2021, 09:32 AM
Updated : 5 Sept 2021, 01:30 PM

৫২ রানে হার

প্রথম ৩ ওভারে পাঁচ বাউন্ডারি। এরপর যেন বাউন্ডারির কথা ভুলে গেল বাংলাদেশ। একের পর এক ব্যাটসম্যান ক্রিজে গেলেন আর এলেন। এক প্রান্ত আগলেন মুশফিকুর রহিম। তিনি খুব বেশি কিছু করতে পারলেন না। বাংলাদেশ হারল ৫২ রানে।

শেষ ওভারে কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে ছক্কায় ওড়ানোর চেষ্টায় ক্যাচ দেন মুস্তাফিজুর রহমান। ২ বল বাকি থাকতে ৭৬ রানে গুটিয়ে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে এর চেয়ে তাদের কম রান আছে আর কেবল একটি।

২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ আউট হয়েছিল ৭০ রানে। এই সংস্করণে তাদের সবচেয়ে কম রানের চারটি ইনিংসই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে। ৭৬ ও ৭৮ রানের দুটি ইনিংস আছে বাংলাদেশের।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউ জিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১২৮/৫ (অ্যালেন ১৫, রাচিন ২০, ল্যাথাম ৬৫*, ইয়াং ২০, ডি গ্র্যান্ডহোম ০, ল্যাথাম ৫, নিকলস ৩৬*, ব্লান্ডেল ৩০*; মেহেদি ৪-০-২৭-১, নাসুম ২-০-১০-০, মুস্তাফিজ ৪-১-২৯-১, সাকিব ৪-০-২৪-০, সাইফ ৪-০-২৮-২, মাহমুদউল্লাহ ৪-০-১০-১)

বাংলাদেশ: ১৯.৪ ওভারে ৭৬ (নাঈম ১৩, লিটন ১৫, মেহেদি ১, সাকিব ০, মুশফিক ২০*, মাহমুদউল্লাহ ৩, আফিফ ০, সোহান ৮, সাইফ ০, নাসুম ১, মুস্তাফিজ ৪; ডাফি ৪-০-১৫-০, এজাজ ৪-০-১৬-৪, ম্যাকনকি ৪-০-১৫-৩, রাচিন ৪-০-১৩-১, কুগেলাইন ৩-০-১৪-১, ডি গ্র্যান্ডহোম ০.৪-০-৩-১)

তেড়েফুড়ে মেরে বোল্ড নাসুম

বড় হার প্রায় নিশ্চিত। ব্যবধান যতটা সম্ভব কমাতে চেয়েছিলেন নাসুম আহমেদ। তবে সফল হলেন না তিনি। তেড়েফুড়ে স্কট কুগেলাইনকে মারতে গিয়ে বোল্ড হয়ে গেলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

৫ বলে ১ রান করেন নাসুম।

১৮ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৯ উইকেটে ৭১।

ম্যাকনকির তৃতীয় শিকার সাইফ

একটি চার মারার পর বেশিক্ষণ টিকলেন না মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। এলবিডব্লিউ হয়ে গেলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

অফ স্পিনার কোল ম্যাকনকির স্লাইডার ব্যাটে খেলতে পারেননি তিনি। আম্পায়ার জোরালো আবেদনে সাড়া দিলে রিভিউ নেন সাইফ। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায়, বল লাগতো লেগ স্টাম্পে। অষ্টম উইকেটের সঙ্গে রিভিউও হারায় বাংলাদেশ।

১৬ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৮ উইকেটে ৬৬। ক্রিজে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গী নাসুম আহমেদ।

ছক্কার চেষ্টায় অক্কা সোহান

পরিস্থিতির দাবি বড় শট। সেই চেষ্টাতেই ফিরলেন নুরুল হাসান সোহান। বাংলাদেশ হারাল সপ্তম উইকেট।

তৃতীয় ওভারের পর থেকে নেই কোনো বাউন্ডারি। ওভার প্রতি প্রয়োজন ১০ রানের বেশি। এখন আর দেখেশুনে খেলার সময় নেই। আক্রমণে ফেরা কোল ম্যাকনকিকে ছক্কায় ওড়াতে চাইলেন সোহান। কিন্তু টাইমিং হলো না তেমন একটা। লংঅন থেকে এগিয়ে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে চমৎকার ক্যাচ মুঠোয় নিলেন টম ব্লান্ডেল।

১১ বলে ৮ রান করেন সোহান।

১৪ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৭ উইকেটে ৫৯। ক্রিজে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গী মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন।

রান আউট হতে হতে বাঁচলেন সোহান

রান নিবেন কি নিবেন না নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রান আউট হতে বসেছিলেন নুরুল হাসান সোহান। ডাইভ দিয়েও সময় মতো পৌঁছাতে পারেননি বলেই ধরে নিয়েছিলেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান। হাঁটাও ধরেছিলেন প্যাভিলিয়নের দিকে। কিন্তু অনেক দিক থেকে বারবার রিপ্লে দেখেও আম্পায়ার নিশ্চিত হতে পারেননি আউট কি না। তাই ‘বেনিফিট অব ডাউট’ পেলেন ব্যাটসম্যান।

১১ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৬ উইকেটে ৪৮। মুশফিকুর রহিম ও সোহানের এই জুটির দিকেই তাকিয়ে বাংলাদেশ।

বোল্ড হয়ে ফিরলেন নাঈম

কিছুক্ষণ ধরেই গায়ের জোরে শট খেলার চেষ্টা করছিলেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। সেই চেষ্টাই কাল হলো এই ওপেনারের জন্য। বাঁহাতি স্পিনার রাচিন রবীন্দ্রর বল স্টাম্পে টেনে এনে বোল্ড হলেন তিনি।

অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে আরও বেরিয়ে যাওয়া বল লেগে টেনে খেলতে চেয়েছিলেন নাঈম। ঠিক মতো পারেননি। ব্যাটের কানায় লেগে এলোমেলো করে দেয় স্টাম্প।

১৯ বলে দুই চারে ১৩ রান করেন নাঈম।

৭ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৪ উইকেটে ৩২। ক্রিজে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গী অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।

পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট

প্রথম ৩ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে এসেছিল ২৪ রান। পরের ৩ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যোগ করতে পেরেছে কেবল ৬ রান।

সব মিলিয়ে পাওয়ারহীন বাংলাদেশের পাওয়ার প্লে। ৬ ওভার শেষে তাদের স্কোর ৩ উইকেটে ৩০।

ধীরে ধীরে বাড়ছে রান রেটের চাপ। ওভার প্রতি এখন থেকে প্রয়োজন সাতের বেশি।

১৫ বলে ১২ রানে খেলছেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। মুশফিকুর রহিমের রান ৪ বলে ১।

শূন্যতেই শেষ সাকিব

ভালো শুরুর পর হুট করে যেন দিক হারিয়েছে বাংলাদেশ। ২ রানের মধ্যে হারিয়েছে তিন উইকেট। লিটন দাস, মেহেদি হাসানের পর ফিরে গেছেন সাকিব আল হাসানও।

এজাজ প্যাটেলের বলে ঝুঁকি নিয়ে ছক্কার চেষ্টা করেছিলেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার। তেমন একটা টাইমিং হয়নি। লং অন থেকে বেশ কিছুটা এগিয়ে ক্যাচ মুঠোয় জমান কোল ম্যাকনকি।

৪ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৩ উইকেটে ২৬। ক্রিজে মোহাম্মদ নাঈম শেখের সঙ্গী মুশফিকুর রহিম।

টিকলেন না মেহেদি

দ্রুত কিছু রানের আশায় মেহেদি হাসানকে তিনে পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ। কাজে লাগেনি ফাটকা। এজাজ প্যাটেলের বাড়তি লাফানো বলে শর্ট মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।

৪ বলে তিনি করেন ১ রান।

শুরুতেই ফিরলেন লিটন

আত্মবিশ্বাসী শুরু করলেও ইনিংস বড় করতে পারলেন না লিটন দাস। কোল ম্যাকনকির বলে ফিরলেন এলবিডব্লিউ হয়ে।

প্রথম ওভারের শেষ দুই বলে জ্যাকব ডাফিকে বাউন্ডারি মেরে শুরু করেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। পরের ওভারের প্রথম বলে এজাজ প্যাটেলকে বাউন্ডারি মেরে রানের খাতা খোলেন লিটন।

তৃতীয় ওভারে ম্যাকনকিকে মারেন টানা দুই চার। পঞ্চম বলে আগেভাগেই সুইপ খেলে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি লিটন। জোরালো আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দিলে রিভিউ না নিয়ে ফিরে যান ডানহাতি এই ওপেনার।

তিন চারে ১১ বলে তিনি করেন ১৫।

৩ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ১ উইকেটে ২৪। ক্রিজে নাঈমের সঙ্গী মেহেদি হাসান।

সিরিজ জিততে ১২৯ রান চাই বাংলাদেশের

ষষ্ঠ উইকেটে দারুণ এক জুটিতে নিউ জিল্যান্ডকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিলেন টম ব্লান্ডেল ও হেনরি নিকলস। ৫৫ বলে দুই জনে গড়েছেন ৬৬ রানের জুটি।

৬২ রানে ৫ উইকেট হারানো নিউ জিল্যান্ড এই দুই জনের দৃঢ়তায় ২০ ওভারে ৫ উইকেটেই করেছে ১২৮ রান। ৩০ বলে তিন চারে ৩০ রান করেছেন ব্লান্ডেল। ২৯ বলে তিন চারে ৩৬ রান এসেছে নিকলসের ব্যাট থেকে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউ জিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১২৮/৫ (অ্যালেন ১৫, রাচিন ২০, ল্যাথাম ৬৫*, ইয়াং ২০, ডি গ্র্যান্ডহোম ০, ল্যাথাম ৫, নিকলস ৩৬*, ব্লান্ডেল ৩০*; মেহেদি ৪-০-২৭-১, নাসুম ২-০-১০-০, মুস্তাফিজ ৪-১-২৯-১, সাকিব ৪-০-২৪-০, সাইফ ৪-০-২৮-২, মাহমুদউল্লাহ ৪-০-১০-১)

জুটির পঞ্চাশ

বিপর্যয় থেকে দলকে টেনে নিয়ে হেনরি নিকোলস ও টম ব্লান্ডেলের জুটি স্পর্শ করল ফিফটি। শেষ দিকে কয়েকটি বাউন্ডারিতে জুটির পঞ্চাশ এলো ৪৬ বলে। তাতে নিকোলসের অবদান ২৯, ব্লান্ডেলের ২১। 

নিউ জিল্যান্ডের ১০০

৫ উইকেট হারানোর পর হেনরি নিকোলস ও টম ব্লান্ডেলের জুটি এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে নিউ জিল্যান্ডকে। খুব ঝড়ো ব্যাটিং অবশ্য করতে পারছেন না দুজন। মুস্তাফিজের বলে নিকোলসের বাউন্ডারিতে দলের রান ১০০ ছুঁয়েছে ১৭.৩ ওভারে।

উইকেটশূন্য সাকিব

একটি উইকেট নিলেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি উইকেটের রেকর্ডে লাসিথ মালিঙ্গাকে স্পর্শ করতেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সেই উইকেট ধরা দিল না এই ম্যাচে। ৪ ওভারের স্পেল শেষে ২৪ রান দিয়ে তার উইকেট নেই।

১০৬ উইকেট নিয়েই ম্যাচ শেষ করলেন সাকিব। মালিঙ্গার উইকেটে ১০৭টি। 

ল্যাথামকে টিকতে দিলেন না মেহেদি

আগের ম্যাচে দারুণ ব্যাটিংয়ে নিউ জিল্যান্ডকে শেষ বল পর্যন্ত ম্যাচে রাখা টম ল্যাথাম এবার বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না। ফিরতি ক্যাচ নিয়ে নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ককে দ্রুত ফেরালেন মেহেদি হাসান।

বেরিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন ল্যাথাম। বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের মুভমেন্ট দেখেই বল টেনে দেন মেহেদি। কাজ হয়ে যায় তাতেই। সহজ ক্যাচ দেন ল্যাথাম। ৯ বলে তিনি করেন ৫।

১১ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ৫ উইকেটে ৬২। ক্রিজে হেনরি নিকলসের সঙ্গী টম ব্লান্ডেল।

রাচিনের প্রতিরোধ ভাঙলেন মাহমুদউল্লাহ

নিজের শততম টি-টোয়েন্টিতে বল হাতেও সাফল্য পেলেন মাহমুদউল্লাহ। এক প্রান্ত আগলে রাখা ওপেনার রাচিন রবীন্দ্রকে বোল্ড করে দিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

এগিয়ে এসে মিডউইকেট দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন রাচিন। কিন্তু বলে ব্যাটে করতে পারেননি এই তরুণ। আঘাত হানে লেগ স্টাম্পে।

২০ বলে দুই চারে ২০ রান করেন রাচিন।

১০ ওভারে  নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ৪ উইকেটে ৬০।

সাইফের জোড়া আঘাত

স্পিনারদের ভালোভাবেই সামাল দিচ্ছেন নিউ জিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। তবে তাদের ভোগাচ্ছেন বাংলাদেশের পেসাররা। মুস্তাফিজুর রহমানের পর নিজের প্রথম ওভারে উইকেট পেয়েছেন মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার উইল ইয়াংয়ের পর এলবিডব্লিউ করেছেন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকেও।

সাইফের প্রথম ৩ বলে ছয় রান নেন ইয়াং। চতুর্থ বলটি ফ্লিক করার চেষ্টায় ব্যাটে খেলতে পারেননি। আম্পায়ার জোরালো আবেদনে সাড়া দিলে রিভিউ নেন তিনি। তাতে পাল্টায়নি সিদ্ধান্ত, বরং রিভিউ নষ্ট করে ফিরেন এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। ভাঙে ২৭ বল স্থায়ী ৩০ রানের জুটি।

২০ বলে তিন চারে ইয়াং করেন ২০।  

এক বল পর এলবিডব্লিউ হয়ে যান ডি গ্র্যান্ডহোম। তিনিও রিভিউ নেন। আম্পায়ার্স কলের জন্য নষ্ট হয়নি তার রিভিউ। তবে শূন্য রানেই ফিরে যেতে হয় তাকে।

৭ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ৩ উইকেটে ৪৬। ক্রিজে রাচিন রবীন্দ্রর সঙ্গী অধিনায়ক টম ল্যাথাম।

পাওয়ার প্লেতে নিউ জিল্যান্ডের পাওয়ার

সুরটা বেঁধে দিয়েছিলেন ফিন অ্যালেন। তিনি বেশি দূর যেতে না পারলেও দারুণ সঙ্গত করছেন রাচিন রবীন্দ্র ও উইল ইয়াং। পাওয়ার প্লেতে ওভার প্রায় সাত করে রান তুলেছে নিউ জিল্যান্ড।

৬ ওভারে সফরকারীদের স্কোর ১ উইকেটে ৪০।

স্পিনারদের ৫ ওভারেই এসেছে এই ৪০ রান। পেসারদের একমাত্র ওভারটি মেডেন নিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান।

মুস্তাফিজের চেয়ে এগিয়ে কেবল বুমরাহ-কুলাসেকারা

আব্দুর রাজ্জাককে পেছনে ফেলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি মেডেন ওভারের কীর্তি নিজের করে নিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। ৫১তম ম্যাচ খেলতে নামা বাঁহাতি এই পেসার করেছেন পাঁচটি মেডেন ওভার।

৪টি মেডেন নিয়ে এতদিন বাঁহাতি রাজ্জাকের পাশে ছিলেন মুস্তাফিজ। তৃতীয় সর্বোচ্চ তিনটি মেডেন ওভার আছে সাকিব আল হাসানের।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি- ৭টি মেডেন ওভার আছে ভারতীয় পেসার জাসপ্রিত বুমরাহর। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬টি মেডেন ওভার করেছেন লঙ্কান পেসার নুয়ান কুলাসেকারা। মুস্তাফিজসহ আট জন বোলারের মেডেন আছে পাঁচটি করে।

বিপজ্জনক অ্যালেনকে ফেরালেন মুস্তাফিজ

প্রথম ওভারে মারলেন দুটি চার। পরের ওভারে আরেকটি। ফিন অ্যালেনের সামনে আর স্পিনার দিলেন না মাহমুদউল্লাহ। আগেভাগেই আক্রমণে আনলেন মুস্তাফিজুর রহমানকে। প্রথম বলেই বাঁহাতি এই পেসার ফিরিয়ে দিলেন অ্যালেনকে।

প্যাডে পাওয়া ফুল লেংথ ডেলিভারির ফায়দা তুলতে পারেননি ডানহাতি ব্যাটসম্যান। একটু আগেভাগে শট খেলে মিড অনে মাহমুদউল্লাহকে দেন সহজ ক্যাচ।

তিন চারে ১০ বলে ১৫ রান করেন অ্যালেন।

উইকেটে-মেডেনে শুরু করলেন মুস্তাফিজ। ৩ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ১ উইকেটে ১৬। ক্রিজে রাচিন রবীন্দ্রর সঙ্গী উইল ইয়াং।

কিপিংয়ে সোহান, আউটফিল্ডে মুশফিক

কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলেছিলেন, প্রথম দুই ম্যাচে কিপিং করবেন নুরুল হাসান সোহান। পরের দুই ম্যাচে মুশফিকুর রহিম। তাদের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে ঠিক হবে পঞ্চম ম্যাচে উইকেটের পেছনে কে দাঁড়াবেন।

সে হিসেবে তৃতীয় ম্যাচে কিপিং করার কথা ছিল মুশফিকের। কিন্তু তিনি ফিল্ডিং করছেন কাভার। উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়েছেন সোহান।

নিউ জিল্যান্ড দলে তিন পরিবর্তন

বাঁচা-মরার ম্যাচে তিনটি পরিবর্তন এনেছে নিউ জিল্যান্ড। ব্যাটিংয়ে যুক্ত হচ্ছে ফিল অ্যালেনের বারুদ। এক ম্যাচ পর ফিরছেন জ্যাকব ডাফি। সিরিজে প্রথমবার খেলছেন স্কট কুগেলাইন।

বাদ পড়েছেন ডগ ব্রেসওয়েল, হামিশ বেনেট ও বেন সিয়ার্স। আগের দুই ম্যাচেই খেলেছেন ব্রেসওয়েল। দ্বিতীয় ম্যাচে ফিরেছিলেন বেনেট আর সেই ম্যাচে অভিষেক হয়েছিল আরেক পেসার বেন সিয়ার্সের।

নিউ জিল্যান্ড একাদশ: ফিন অ্যালেন, রাচিন রবীন্দ্র, টম ল্যাথাম (অধিনায়ক), উইল ইয়াং, টম ব্লান্ডেল, হেনরি নিকোলস, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, কোল ম্যাকনকি, এজাজ প্যাটেল, জ্যাকব ডাফি, স্কট কুগেলাইন।

অপরিবর্তিত বাংলাদেশ দল

প্রথম দুই ম্যাচে জেতা বাংলাদেশ একাদশে আনেনি কোনো পরিবর্তন। বাইরেই থেকে গেছেন পেসার শরিফুল ইসলাম ও ওপেনার সৌম্য সরকার।

বাংলাদেশ একাদশ: লিটন কুমার দাস, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, শেখ মেহেদি হাসান, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, মুস্তাফিজুর রহমান, নাসুম আহমেদ।

টস

প্রথম দুই ম্যাচে টস জিতে দুই দলই বেছে নিয়েছিল ব্যাটিং। নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক টম ল্যাথাম এবারও জিতে নিলেন ব্যাটিং। প্রথম টি-টোয়েন্টি হয়েছিল যে উইকেটে ম্যাচ হচ্ছে সেটাতেই। সেবার স্রেফ ৬০ রানে অলআউট হয়ে ৭ উইকেটে হেরেছিল নিউ জিল্যান্ড।

সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ

চলতি সিরিজের আগে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে জয় ছিল না একটিও। প্রথম দুই ম্যাচে প্রত্যাশিত জয়ে প্রথমবারের মতো দেশটির বিপক্ষে সিরিজ জয়ের দুয়ারে মাহমুদউল্লাহর দল।

শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার বিকাল চারটায় শুরু হবে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি।

অনেক প্রাপ্তির হাতছানি এই ম্যাচে। খেলতে নামলেই বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে একশ ম্যাচের মাইলফলক স্পর্শ করবেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।

১ উইকেট পেলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি উইকেটের মালিক শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গার পাশে বসবেন সাকিব আল হাসান। ২ উইকেট পেলে রেকর্ড নিজের করে নেওয়ার পাশাপাশি স্পর্শ করবেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৬০০ উইকেটের মাইলফলক। ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে গড়বেন ১২ হাজার রান ও ৬০০ উইকেটের অনন্য ডাবল।