প্রথম দিনেই শেষ ভারত, স্বস্তিতে নেই ইংল্যান্ডও

সারাদিনই সিম মুভমেন্ট পেলেন পেসাররা। তাতে কঠিন পরীক্ষাতেই পড়তে হলো দুই দলের ব্যাটসম্যানদের। আগে ব্যাটিং করে ভারত থমকে গেল দুইশ রানের নিচে। শেষ বেলায় জো রুটসহ তিন উইকেট হারিয়ে স্বস্তিতে নেই ইংল্যান্ডও।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Sept 2021, 06:36 PM
Updated : 2 Sept 2021, 06:36 PM

চতুর্থ টেস্টের প্রথম দিনে উইকেট পড়েছে ১৩টি। ভারতকে ১৯১ রানে গুটিয়ে দেওয়া ইংল্যান্ড দিন শেষ করেছে ৩ উইকেটে ৫৩ রানে।

বিরাট কোহলির ফিফটি এবং ইংলিশদের বেশ কিছু ক্যাচ হাতছাড়ার পরও দেড়শর নিচে গুটিয়ে যেতে বসেছিল ভারত। আটে নেমে ৩৬ বলে ৫৭ রানের বিস্ফোরক ইনিংসে দলকে দুইশ রানের কাছে নিয়ে যান শার্দুল ঠাকুর।

দলে ফেরা ক্রিস ওকস ৪ উইকেট নেন ৫৫ রান। অলিভার রবিসন ৩৮ রানে নেন ৩ উইকেট।

দারুণ ছন্দে থাকা জো রুটকে চমৎকার এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে দেন উমেশ যাদব। ইংলিশ অধিনায়ক প্রথমবারের মতো সিরিজে আউট হলেন ত্রিশের নিচে।

কেনিংটন ওভালে কন্ডিশন বুঝে টিকে থাকার দিকেই ছিল ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মনোযোগ। আগের টেস্টেই প্রথম ইনিংসে স্রেফ ৭৮ রানে গুটিয়ে যাওয়া দলটি সাবধানী ব্যাটিংয়ে শুরু করে। কিন্তু ওকস-রবিসনদের সুইংয়ের সামনে সুবিধা করতে পারেনি।

চমৎকার এক ডেলিভারিতে রোহিত শর্মাকে কট বিহাইন্ড করে শিকার ধরেন ওকস। দেরিতে মুভমেন্ট করা রবিনসনের এক ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হয়ে থামেন আরেক ওপেনার লোকেশ রাহুল।

চেতেশ্বর পুজারাকে দ্রুত থামান জেমস অ্যান্ডারসন। চমৎকার প্রথম স্পেলে কোহলির উইকেটও পেতে পারতেন ওকস। ব্যক্তিগত ২৩ রানে ররি বার্নসের হাতে জীবন পান ভারত অধিনায়ক।

পাঁচে রবীন্দ্র জাদেজাকে নামিয়ে একটা বাজিই ধরেছিল ভারত। কাজে লাগেনি তা। ওকসের বলে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের চমৎকার এক ক্যাচ মুঠোয় জমান রুট।

অজিঙ্কা রাহানে এক প্রান্তে ছিলেন নড়বড়ে। আরেক প্রান্তে জমে গিয়েছিলেন কোহলি। সিরিজে দ্বিতীয়বারের মতো ফিফটিতে পৌঁছালেও ইনিংস বড় করতে পারেননি ভারত অধিনায়ক। রবিনসনের বলে ধরা পড়েন বেয়ারস্টোর গ্লাভসে। কোহলির ৯৬ বলে খেলা ৫০ রানের ইনিংস গড়া ৮ চারে।

নড়বড়ে রাহানের ভোগান্তি থামান ক্রেইগ ওভারটন। ৯ রানে ওকসের বলে জীবন পেয়েও সেই ওভারেই ফেরেন রিশাভ পান্ত। তার কাছ থেকে যে ব্যাটিং সফরকারীদের প্রত্যাশিত ছিল সেটা দেখা যায় শার্দুলের ব্যাটে। ক্রিজে গিয়েই বোলারদের ওপর চড়াও হন তিনি।

৪৩ রানে তিনিও একবার জীবন পান। রবিনসনের বলে ক্যাচ গ্লাভসে জমাতে পারেনি বেয়ারস্টো। সেই ওভারেই চার-ছক্কা মেরে ৩১ বলে ফিফটিতে পৌঁছান শার্দুল। ভারতের হয়ে যা দ্বিতীয় দ্রুততম ফিফটি।

এরপর অবশ্য বেশিদূর যেতে পারেননি তিনি। ওকসের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে শেষ হয় ৩৬ বলে তিন ছক্কা ও সাত চারে খেলা ৫৭ রানের ঝড়ো ইনিংস।

১ রান যোগ করতে শেষ ৩ উইকেট হারিয়ে ১৯১ রানে গুটিয়ে যায় ভারত।

ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ইংল্যান্ডের। চতুর্থ ওভারে ৫ বলের মধ্যে দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দেন জাসপ্রিত বুমরাহ। ভারতের এই পেসারের বল স্টাম্পে টেনে এনে বোল্ড হন বার্নস। বাজে শটে শূন্য রানে ফেরেন হাসিব হামিদ।

আগের ম্যাচে শতরানের উদ্বোধনী জুটি এনে দেওয়া দুই ব্যাটসম্যান ফেরেন ৬ রানের ভেতর।

ক্রিজে গিয়ে আস্থার সঙ্গে খেলছিলেন রুট। সাবধানী ব্যাটিংয়ে তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন দাভিদ মালান। শুরুর ধাক্কা সামলে সাবলীলভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিল ইংল্যান্ড।

অনেকটা হুট করে উমেশের এক বল ভেতরে ঢুকে রুটের ব্যাট এড়িয়ে আঘাত হানে স্টাম্পে। আগের তিন টেস্টেই সেঞ্চুরি করা ইংল্যান্ড অধিনায়ক ফেরেন ২১ রানে। সিরিজে যা তার সর্বনিম্ন।

দিনের বাকি সময়টা ওভারটনকে নিয়ে কাটিয়ে দেন মালান। সিরিজে নিজেদের সেরা ব্যাটসম্যানকে হারানোর পর প্রথম ইনিংসে লিড নেওয়ার চ্যালেঞ্জ স্বাগতিকদের সামনে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত ১ম ইনিংস: ৬১.৩ ওভারে ১৯১ (রোহিত ১১, রাহুল ১৭, পুজারা ৪, কোহলি ৫০, জাদেজা ১০, রাহানে ১৪, পান্ত ৯, শার্দুল ৫৭, উমেশ ১০, বুমরাহ ০, সিরাজ ১*; অ্যান্ডারসন ১৪-৩-৪১-১, রবিনসন ১৭.৩-৯-৩৮-৩, ওকস ১৫-৬-৫৫-৪, ওভারটন ১৫-২-৪৯-১)

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ওভারে ১৭ ওভারে ৫৩/৩ (বার্নস ৫, হামিদ ০, মালান ২৬*, রুট ২১, ওভার ১*; উমেশ ৬-১-১৫-১, বুমরাহ ৬-২-১৫-২, শার্দুল ৩-১-১১-০, সিরাজ ২-০-১২-০)