ম্যাচ শেষ করার ‘ক্ষুধা’ নিয়ে নেমেছিলেন শামীম

অভিষেক ম্যাচে ছিল খানিকটা ঝলক। পরের ম্যাচে যেন পূর্ণতা। শুরুরটিতে আশা জাগিয়েও শামীম হোসেন পারেননি শেষ পর্যন্ত তা জিইয়ে রাখতে। পরের সুযোগে শেষ করেই ফিরেছেন। ম্যাচের পর তরুণ এই ক্রিকেটার বললেন, নিজের সঙ্গে এমন কিছুর বোঝাপড়া করেই নেমেছিলেন মাঠে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 July 2021, 04:17 PM
Updated : 25 July 2021, 05:13 PM

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়েই জাতীয় দলে প্রথম ডাক পান শামীম। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে একাদশে জায়গা পাননি। তবে বদলি ফিল্ডার হিসেবে অবিশ্বাস্য এক ক্যাচ নিয়ে তাক লাগিয়ে দেন। পরের ম্যাচে অভিষেক। দল যখন হারের পথে, শামীম উইকেটে গিয়ে ঝড় তুলে জাগিয়ে তোলেন আশা। ১৩ বলে ২৯ রান করে তার বিদায়ে আশারও সমাপ্তি।

শেষ ম্যাচে রোববার বাংলাদেশের রান তাড়ায় চ্যালেঞ্জ ছিল আরও কঠিন। শামীমের সৌজন্যেই শেষের সমীকরণ মেলাতে পারে দল। ১৫ বলে ৩১ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে তবেই ফেরেন তিনি।

ম্যাচের পর বিসিবির ভিডিও বার্তায় শামীম বললেন, এমনটিই ছিল তার লক্ষ্য।

“অনেক ভাল লাগছে। গত ম্যাচে শেষ করতে পারিনি। আমার মধ্যে একটা ক্ষুধা ছিল যে, পরের ম্যাচটিতে যদি সুযোগ পাই, আমার লক্ষ্য থাকবে শেষ করা। সেই সুযোগটা পেয়ে শেষ করতে পেরেছি, তাই অনেক ভাল লাগছে।”

লক্ষ্য যদিও বড় ছিল, বাইরে থেকে দেখার সময় তবু জয়ের বিশ্বাস ছিল শামীমের। যখন উইকেটে গেলেন, কাজটা তখনও অনেক কঠিন। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে তার ১৯ বলে ৩৭ রানের জুটিতে লক্ষ্য চলে আসে নাগালে। মাঠের ভেতরে-বাইরের সেই সময়গুলির কথা ম্যাচের পর শোনালেন শামীম।

“যখন সৌম্য ভাই, রিয়াদ ভাই ব্যাটিং করছিল, তখন সব পজিটিভ ছিল আমাদের দিকে। আমি যখন ড্রেসিংরুমে খেলা দেখছিলাম, তখন মনে হচ্ছিল যে আজকের ম্যাচটি জিতব। যেভাবেই হোক, জিতব।”
“মাঠে রিয়াদ ভাই আমাকে বলছিল যে ওভারে ১০ করে আসলে ম্যাচটা সহজে চলে আসবে। একটা বাউন্ডারি বা একটা ছক্কা এলেই হবে। আমি আমার প্রক্রিয়া ধরে রেখেই খেলেছি।”

শেষ দিকে ১৫ বলে যখন প্রয়োজন ২৫ রান, শামীমের টানা দুই বাউন্ডারিতেই ম্যাচ চলে আসে বাংলাদেশের প্রায় মুঠোয়।

গত বছর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটার শামীম। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট, ঘরোয়া ক্রিকেট ও এইচপি দলের হয়ে তিনি নজর কাড়েন এই আগ্রাসী ব্যাটিং, অসাধারণ ফিল্ডিং, কার্যকর বোলিং ও ভয়ডরহীন মানসিকতা দিয়ে। অভিষেক সিরিজে নিজের সামর্থ্যের বার্তা তিনি যথেষ্টই দিতে পেরেছেন।

ফিনিশারের অভাব পূরণের যে আশা নিয়ে শামীম হোসেনকে দলে নেওয়া হয়েছে, তিনিও জানিয়ে দিলেন, তাকে নিয়ে বিনিয়োগ করা যায়।

তাকে দেখে যদিও মনে হয়েছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে আপন করে নিয়েছেন একদম সহজেই। তবে তিনি নিজে ঠিকই বুঝতে পারছেন পার্থক্যগুলো।

“আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনেক কঠিন। এতদিন অনূর্ধ্ব-১৯ খেলেছি, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ খেলেছি। তার চেয়ে আন্তর্জাতিক অনেক কঠিন, অনেক আলাদা, তা বুঝতে পেরেছি এখানে এসে।”

“আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খারাপ বল কম পাওয়া যায়। বেশিরভাগ সময়ই ভাল বল আসে। ভালো বলগুলিই মারতে হয়, বাউন্ডারি মারতে হয়। প্রক্রিয়া ধরে রাখতে হয়, অনেক দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হয়।”

শেষ পর্যন্ত সব চ্যালেঞ্জ জয় করে অভিষেক সিরিজ জয়ে রাঙাতে পারায় উচ্ছ্বসিত ২০ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।

“আমার যেহেতু অভিষেক টি-টোয়েন্টি দিয়ে, আমার জন্য তাই ভালো হয়েছে যে সিরিজ জয় দিয়ে শুরু করেছি। এটা আমার জন্যও ভালো হয়েছে, দলের জন্যও।”