দোলেশ্বরের জয়ে সাইফের বিধ্বংসী ফিফটি

বড় ছক্কা সাইফ হাসানের ব্যাটে দেখা যায় নিয়মিতই। তবে প্রচুর ডট বলও খেলেন বলে স্ট্রাইক রেট হৃষ্টপুষ্ট হয় না খুব একটা। সেই সাইফ এবার দেখালেন নিজের অন্য রূপ। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে প্রাইম দোলেশ্বরের সহজ লক্ষ্য হয়ে গেল সহজতর।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 June 2021, 07:30 AM
Updated : 21 June 2021, 07:30 AM

৭ চার ও ৩ ছক্কায় সাইফ খেলেন ৩৩ বলে ৬০ রানের ইনিংস। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির ম্যাচে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবকে ৬ উইকেটে হারায় প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা শেখ জামাল ২০ ওভারে করতে পারে ১২৩। ধুঁকতে থাকা দলকে কিছুটা উদ্ধার করেন নুরুল হাসান সোহান। তবে ২৪ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলে অধিনায়ক আউট হন ‘অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড’ হয়ে। প্রাইম দোলেশ্বর রান তাড়ায় জিতে যায় অনায়াসেই।

দারুণ ইনিংসের সঙ্গে একটি উইকেটও নিয়ে ম্যাচের সেরা সাইফ হাসান।

শেখ জামালের দুর্দশা শুরু হয় ম্যাচের প্রথম ওভার থেকেই। আগের দিন প্রাইম ব্যাংককে হারিয়ে দেওয়ার নায়ক সৈকত আলি বোল্ড হন বাঁহাতি পেসার শফিকুল ইসলামের সোজা বল ক্রস ব্যাটে খেলে। আরেক ওপেনার মোহাম্মদ আশরাফুল (৮ বলে ৪) ফাইন লেগে ধরা পড়েন শরিফউল্লাহর অফ স্টাম্পের বাইরের বল সুইপ করে।

শফিকুল পরে ফিরিয়ে দেন তানবীর হায়দারকেও। ৫ ওভার শেষে শেখ জামালের রান ৩ উইকেটে ১২।

এরপর ইমরুল কায়েসের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন ইলিয়াস সানি। সেই চেষ্টাও সফল হয়নি। সাইফের প্রথম বলেই সানি বোল্ড হন ১৯ বলে ১০ রান করে। ফরহাদ রেজার শর্ট বলে পুল করে ছক্কা মারলেরও অভিজ্ঞ ইমরুল শেষ পর্যন্ত করতে পারেন ২৮ বলে ২৭।

৬৪ রানে ৬ উইকেট হারানো দলকে কিছুটা ভদ্রস্থ পর্যায়ে নিয়ে যান সোহান। শুরুতে সৌভাগ্যের ছোঁয়ায় কিছু রান পেলেও পরে দারুণ সব শট খেলেন শেখ জামাল অধিনায়ক।

‘অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড’ হয়ে তার বিদায় ১৯তম ওভারে। কামরুল ইসলাম রাব্বির অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বল পুল করার চেষ্টা করেন এনামুল হক। তার ব্যাটের নিচের দিকে লেগে পা স্পর্শ করে বল থাকে উইকেটের কাছেই। রান নেওয়ার সময় দৌড়ের গতিপথ একটু সরিয়ে সোহান পা দিয়ে ঠেকিয়ে দেন বল।

ফিল্ডিং করতে ছুটে যাওয়া বোলার কামরুল ধরতে পারেননি বল। দোলেশ্বরের আবেদনে রিপ্লে দেখে সোহানকে আউট দেন থার্ড আম্পায়ার। এবারের লিগে ‘অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড’ হওয়া দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান সোহান, প্রথম জন ছিলেন মোহামেডানে ইয়াসিন আরাফাত।

ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পর ‘অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড’ আউট হন সোহান।

রান তাড়ায় দোলেশ্বর অর্ধেক পথ পেরিয়ে যায় শুরুর জুটিতেই। ঝড় তোলার কথা যার, সেই ইমরান উজজামানের ব্যাটই তুলনামূলকভাবে থাকে শান্ত। সাইফ ছুটতে থাকেন তুমুল গতিতে।

দুজনের জুটিতে ৮ ওভারে আসে ৬৫ রান। এবারের লিগে বড় শট খেলে নজর কাড়া ইমরান আউট হন ২৪ বলে ২০ করে।

ইলিয়াস সানিকে টানা দুটি বাউন্ডারিতে সাইফ ফিফটি স্পর্শ করেন ৩০ বলে। পরে সোহরাওয়ার্দী শুভকে ছক্কা মারেন মাথার ওপর দিয়ে। পরের বলে ইনসাইড আউট শটে ছক্কার চেষ্টায় ধরা পড়েন সীমানায়।

জয় তখন দোলেশ্বরের নাগালে। বাকি পথটুকু পেরোতে অবশ্য বেশ ভোগান্তি হয় তাদের। কোনো চাপ না থাকলেও মোহাম্মদ আশরাফুলকে ফিরতি ক্যাচ দেন ফজলে রাব্বি, আলগা শটে বোল্ড হন মার্শাল আইয়ুব। শেষ পর্যন্ত শরিফউল্লাহর বাউন্ডারিতে জয় ধরা দেয় ১৪ বল আগে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

শেখ জামাল: ২০ ওভারে ১২৩/৯ (সৈকত ১, আশরাফুল ৪, ইমরুল ২৭, তানবীর ১, ইলিয়াস সানি ১০, সোহান ৪২, সোহরাওয়ার্দী ৫, জিয়াউর ৯, এনামুল ১৩, ইবাদত ২*; শফিকুল ৪-০-১১-২, শরিফউল্লাহ ৪-০-১৮-১, কামরুল রাব্বি ৪-০-৪৪-১, ফরহাদ রেজা ৩-০-১৫-১, সাইফ ১-০-৮-১, রেজাউর ৪-০-২৫-৩)।

প্রাইম দোলেশ্বর: ১৭.৪ ওভারে ১২৬/৪ (ইমরান ২০, সাইফ ৬০, ফজলে মাহমুদ ২১, মার্শাল ১২, শামীম ৫*, শরিফউল্লাহ ৫*; ইবাদত ২-০-১২-০, সাকিল ২-০-২৬-০, জিয়াউর ২-০-১৩-০, ইলিয়াস সানি ২-০-২৬-০, সোহরাওয়ার্দী ৪-০-২০-২, তানবীর ২-০-১১-০, আশরাফুল ২-০-৭-২, এনামুল ১.৪-০-১১-০)।

ফল: প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব ৬ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: সাইফ হাসান।