পাল্লেকেলে টেস্টে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৫৪১ রানের জবাবে তৃতীয় দিন শেষে শ্রীলঙ্কার রান ৩ উইকেটে ২২৯।
বাংলাদেশের সামনে বড় বাধা হয়ে ৮৫ রানে টিকে আছেন লঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে। শতরানের উদ্বোধনী জুটির পর লাহিরু থিরিমান্নে আউট হন ৫৮ রানে।
স্কোরকার্ড অবশ্য বাংলাদেশের বোলারদের প্রচেষ্টার ছবি ফুটিয়ে তুলতে পারছে না পুরোপুরি। পেসারদের জন্য যেখানে কিছুই নেই, সেই উইকেটেও নিজেকে উজাড় করে দেন তাসকিন আহমেদ। স্পিনারদের জন্য তৈরি হয়নি ততটা ক্ষত, টার্ন থাকলেও তা মন্থর। তারপরও মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম চেষ্টা করেন যথাসাধ্য। অন্য দুই বোলার আবু জায়েদ ও ইবাদত হোসেন অবশ্য ছিলেন অধরাবাহিক।
৪ উইকেটে ৪৭৪ রান নিয়ে শুক্রবার দিন শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাট করে আরও ঘণ্টা দেড়েক। ৭ উইকেটে ৫৪১ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে তারা। ফিফটি করেই আউট হন লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম অপরাজিত থাকেন ৬৮ রানে।
শুরুর সময়টুকু দাঁতে দাঁত চেপে কাটিয়ে দেওয়ার পুরস্কার লাঞ্চের পর পান করুনারত্নে ও থিরিমান্নে। বোলিংয়ের ধার তখন একটু কমে আসে। বিশেষ করে আবু জায়েদ ও ইবাদত আলগা বল করেন। থিরিমান্নে ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে এগিয়ে নেন দলকে। উইকেট আগলে রাখেন করুনারত্নে।
৯৫ বলে ৭ চারে থিরিমান্নে স্পর্শ করেন ফিফটি। যেটি সবশেষ পাঁচ ইনিংসে তার চতুর্থ পঞ্চাশ। দুজনের জুটিও শতরান পেরিয়ে যায় অনায়াসে।
এই জুটি ভাঙতে পারতেন তাইজুল। তার তীক্ষ্ণ টার্নে পরাস্ত হন থিরিমান্নে। আম্পায়ার আউট দেননি, বাংলাদেশও রিভিউ নেয়নি। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, আউট ছিলেন ব্যাটসম্যান।
এটির চড়ামূল্য অবশ্য দিতে হয়নি দলকে। একটু পর সেই ৫৮ রানেই তাকে থামান মিরাজ। ঝুলিয়ে দেওয়া বলটি টার্ন না করে অ্যাঙ্গেলে ভেতরে ঢুকে ছোবল দেয় প্যাডে। রিভিউ নিয়ে টিকতে পারেননি থিরিমান্নে।
চা বিরতির ঠিক আগের বলে শেষ হয় শ্রীলঙ্কার ১১৪ রানের উদ্বোধনী জুটি।
শেষ সেশনে আরও ভালোভাবে উইকেটে জমে যান করুনারত্নে। তবে অন্য প্রান্তে পরপর দুই ব্যাটসম্যানকে জমে উঠতে না উঠতেই ফেরাতে পারে বাংলাদেশ।
পুরনো বলে ফিরেও দারুণ এক স্পেল করেন তাসকিন। উইকেট যদিও পান একরকম উপহার। লেগ স্টাম্পের বলে আয়েশি শটে উইকেট দিয়ে ফেরেন ওশাদা ফার্নান্দো (২০)। কিপার লিটন দান বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে নেন দারুণ ক্যাচ।
অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস শুরু থেকেই এগোচ্ছিলেন সাবলীল ব্যাটিংয়ে। তাইজুল তাকে বিভ্রান্ত করেন অ্যাঙ্গেল বদলে ওভার দা উইকেট এসে। লেংথ পড়তে গড়বড় করে বসেন ম্যাথিউস, লেট কাটের মতো খেলার চেষ্টায় হয়ে যান বোল্ড (৩২ বলে ২৫)।
শেষবেলার ওইটুকু নাটকে অবশ্য স্কোরকার্ডে কানো প্রভাব পড়েনি। করুনারত্নে ও ধনাঞ্জয়ার জুটিই মাঠ ছাড়ে অপরাজিত থেকে।
শ্রীলঙ্কা এখনও পিছিয়ে ৩১২ রানে। তবে চতুর্থ দিনে উইকেটের আচরণে পরিবর্তন না হলে, বাংলাদেশের বোলারদের অপেক্ষায় পরীক্ষার আরেকদিন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৭৩ ওভারে ৫৪১/৭ (ডি.) (তামিম ৯০, সাইফ ০, শান্ত ১৬৩, মুমিনুল ১২৭, মুশফিক ৬৮*, লিটন ৫০, মিরাজ ৩, তাইজুল ২, তাসকিন ৬*; লাকমল ৩৬-১৪-৮১-১, বিশ্ব ৩৫-৯-৯৬-৪, কুমারা ২৮-৪-৮৮-১, ম্যাথিউস ৭-১-১৪-০, ধনাঞ্জয়া ৩০-১-১৩০-১, হাসারাঙ্গা ৩৬-২-১১১-০, করুনারত্নে ১-০-৫-০)
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৭৩ ওভারে ২২৯/৩ (করুনারত্নে ৮৫*, থিরিমান্নে ৫০, ওশাদা ২০, ম্যাথিউস ২৫, ধনাঞ্জয়া ২৬*; আবু জায়েদ ৭-১-২৫-০, তাসকিন ১২-৩-৩৫-১, ইবাদত ১০-১-৪৪-০, মিরাজ ২৪-৬-৬০-১, তাইজুল ২০-৫-৫৬-১)।