এমন ইনিংসের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষায় ছিলেন বাবর

দুইশ স্ট্রাইক-রেটে একশ ছুঁয়ে দেশের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরি, বড় রান তাড়ায় অসাধারণ ইনিংস, দলের জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া, রেকর্ডের ছড়াছড়ি, এই সবকিছু এক বিন্দুতে মিলে গেছে বাবর আজমের এক ইনিংসে। পাকিস্তান অধিনায়ক তৃপ্তির সুরে বলছেন, এমন একটি ইনিংসের জন্য তার প্রতীক্ষা ছিল অনেক দিনের।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 April 2021, 07:43 AM
Updated : 15 April 2021, 08:17 AM

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরিয়নে বুধবার পাকিস্তানের লক্ষ্য ছিল ২০৪। আগে কখনোই ১৯০ রান তাড়ায় জয়ের কীর্তিও ছিল না তাদের। কিন্তু এ দিন আরও বড় চ্যালেঞ্জ তার জিতে যায় যেন তুড়ি বাজিয়ে।

বাবরের সেঞ্চুরি ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের ৪৭ বলে অপরাজিত ৭৩ রানের ইনিংসে ১২ বল বাকি থাকতেই জয় ধরা দেয় ৯ উইকেটে। ১৫ চার ও ৪ ছক্কায় বাবর ৫৯ বলে ১২২ রান করে আউট হন জয়ের খুব কাছে গিয়ে।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের ৫০তম ম্যাচে বাবর স্বাদ পান প্রথম সেঞ্চুরির। ৪৯ বলে স্পর্শ করেন সেঞ্চুরি, দেশের হয়ে যা দ্রুততম। পরে দেশের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডও নিজের করে নেন।

রিজওয়ানের সঙ্গে তার ১৯৭ রানের জুটি টি-টোয়েন্টিতে রান তাড়ায় যে কোনো উইকেটেই বিশ্বরেকর্ড। পাকিস্তানের হয়ে তো আগে বা পরে ব্যাটিং মিলিয়েই যে কোনো জুটির রেকর্ড।

এত সব রেকর্ড, এত অর্জন। তবে ম্যাচ শেষে বাবর বললেন, তার পরিতৃপ্তির মূল কারণ পরিস্থিতির দাবি মেটাতে পারা।

“এরকম একটি ইনিংসের জন্য লম্বা সময় ধরে অপেক্ষা করছিলাম। এমন কিছুর স্বপ্ন দেখেছি আমি এবং চিন্তা করেছি, যখন সুযোগ পাই, লুফে নেব। ভালো লাগছে তা করতে পেরে। নিজের শক্তির ওপর আস্থা রেখেছি আর ইনিংস গড়েছি দলের প্রয়োজন ভাবনায় রেখে। ওভারপ্রতি যখন ১০ রান করে প্রয়োজন, তখন অবশ্যই ব্যাটিংয়ে সেই তাড়না থাকতে হবে এবং ঝুঁকি নিতে হবে।”

ঝুঁকির কথা বললেও আদতে বাবরের ব্যাটিংয়ে তা খুব বেশি দেখা যায়নি। প্রয়োজনই পড়েনি, তার স্কিলই এমন। ৪৯ বলে সেঞ্চুরি শুনলে যেমন বিধ্বংসী মনে হয়, সেটির লেশ মাত্র ছিল না তার ব্যাটে। বরং বরাবরের মতোই ছিল চোখ আর মনকে প্রশান্তি দেওয়া নান্দনিক সব শট, ব্যাট দিয়ে বলে রেশমি পেলব বুলিয়ে দেওয়া যেন। রান উঠেছে তীব্র গতিতে, তবে ঝড় তুলে নয়, যেন ফুরফুরে হাওয়ার দোলায়।

স্রেফ নিজের চাওয়া পূরণের ইনিংসে কথা বলেই তিনি থামেননি। দারুণ জুটিতে অংশীদার রিজওয়ানকেও বড় কৃতিত্ব দিলেন বাবর।

“রিজওয়ানের সঙ্গে জুটি ছিল অসাধারণ। যেভাবে সে খেলেছে, সেটির জন্য তাকে কৃতিত্ব দিতে হবে কারণ সে রোজা রেখে খেলেছে এবং ২০ ওভার কিপিং করে আবার লম্বা সময় ব্যাট করেছে। অনেক সাহস ও প্রতিজ্ঞার প্রয়োজন এটির জন্য। তাকে দেখে গোটা দল প্রেরণা ও আত্মবিশ্বাস পায়।”

চার ম্যাচের সিরিজে বাবররা এখন ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে। সিরিজ নির্ধারণী শেষ টি-টোয়েন্টি শুক্রবার।