আম্পায়ার্স কল বিভ্রান্তিকর: কোহলি

ডিসিশন রিভিউ সিস্টেমে (ডিআরএস) ‘আম্পায়ার্স কল’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরাট কোহলি। ভারতীয় অধিনায়কের কাছে এই নিয়ম বেশ বিভ্রান্তিকর। এখানে পরিবর্তনের পাশাপাশি আম্পায়ারের দেওয়া ‘সফট সিগন্যাল’ পদ্ধতিতেও নজর দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন তিনি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 March 2021, 04:16 PM
Updated : 22 March 2021, 04:16 PM

বিশেষ করে এলবিডব্লিউর ক্ষেত্রে রিভিউ নিলে আম্পায়ার্স কলের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। বল ট্র্যাকিংয়ে বল কি অবস্থায় প্যাডে লাগল এবং স্টাম্পে বল কিভাবে আঘাত করত, সেক্ষেত্রে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে মূলত আম্পায়ার্স কল ব্যবহৃত হয়। আর এক্ষেত্রে আম্পায়ারের প্রথম সিদ্ধান্ত ‘বেনিফিট অব ডাউট’ পেয়ে থাকে।

আইসিসির নিয়মে, এলবিডব্লিউর নট আউট সিদ্ধান্ত বদলাতে হলে এখন অফ স্টাম্পের বাইরের দিকের অংশ থেকে লেগ স্টাম্পের শেষ পর্যন্ত (আগে ছিল অফ স্টাম্পের মাঝ থেকে লেগ স্টাম্পের মাঝ পর্যন্ত) একটি জোনে বলের অর্ধেকের বেশি অংশ প্যাডে আঘাত করতে হবে। স্টাম্পে আঘাতের ক্ষেত্রেও ওই জোনের মধ্যে অর্ধেকের বেশি বল থাকতে হবে এবং বেলসের নিচে বল আঘাত করতে হবে।

সম্প্রতি মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব জানায়, সাবেক আন্তর্জাতিক অধিনায়ক ও ম্যাচ অফিসিয়ালদের সমন্বয়ে তাদের ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটির কিছু সদস্যও কোহলির মতো একইরকম বিভ্রান্তির প্রসঙ্গটি তুলেছেন। তাদের মতে, আম্পায়ার্স কল দর্শকদের ধন্দে ফেলছে, বিশেষ করে যখন একই বলে আউট ও নট আউট নির্ভর করে মাঠে থাকা আম্পায়ারের দেওয়া মূল সিদ্ধান্তের ওপর।

এই জায়গাটাতেই পরিবর্তন চান কোহলি। এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্ত কেবল বল স্টাম্পে লাগা বা না লাগার ওপর নির্ভর করা উচিত বলে মনে করেন তিনি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে শুরুর আগের দিন সোমবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, এভাবেই খেলাটিকে আরও সহজ ও বিতর্কমুক্ত রাখা সম্ভব।

“দেখুন, আমি দীর্ঘদিন খেলেছি, যখন ডিআরএস ছিল না, তাই না? আম্পায়ার কোনো সিদ্ধান্ত দিলে ব্যাটসম্যান সেটা পছন্দ করুক বা না করুক, সেটাই বহাল থাকত। একইভাবে আম্পায়ার যদি ব্যাটসম্যানকে আউট না দিত, কিন্তু সে আসলে আউট, তারপরও বৈধ হোক বা না হোক সেই সিদ্ধান্তই থাকত।”

“আমার মতে, ‘আম্পায়ার্স কল’ এখন অনেক বিভ্রান্তি তৈরি করছে। যখন কেউ বোল্ড হয়, তখন নিশ্চয় নিজেকে বোল্ড ভাবার জন্য ব্যাটসম্যান হিসেবে সে আশা করবে না বল স্টাম্পে ৫০ শতাংশের বেশি লাগছে কিনা। তাই যখন দেখা যাবে বল স্টাম্পে লাগছে, তার মানে বেলসও পড়বে।”

আর তাই এ বিষয়ে কোনো বিতর্ক বা বিভ্রান্তি রাখার প্রয়োজন দেখেন না কোহলি।

“বল যদি স্টাম্পে লাগে, এটা আউট হওয়া উচিত। ওই দল পছন্দ করুক বা না করুক, তারা রিভিউ হারাবে। স্টাম্পে বল লাগতো নাকি না, কেবল এভাবেই খেলাটিকে সহজ করতে হবে। কতটুকু লাগতো, এই সব বিষয় প্রাধান্য দেওয়ার দরকার নেই। কারণ এটা বেশ বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে।”

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে সূর্যকুমার যাদবের বিতর্কিত ক্যাচ আউটে আম্পায়ারের দেওয়া সফট সিগন্যাল নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন কোহলি।

বাউন্ডারিতে বেশ নিচ থেকে বল হাতে জমান দাভিদ মালান। পরে নিশ্চিত হতে টিভি আম্পায়ারের কাছে ‘সফট সিগন্যাল’ আউট দিয়ে পাঠান মাঠে থাকা আম্পায়ার। টিভি আম্পায়ার পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেননি, ফলে তিনি মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত আউটই বহাল রাখেন।

নিয়ম অনুযায়ী, তৃতীয় আম্পায়ার শতভাগ নিশ্চিত হলেই কেবল  মাঠের আম্পায়ারের সফট সিগন্যাল পাল্টাতে পারেন। টিভি রিপ্লে দেখেও সংশয় থাকলে অনুসরণ করতে হয় মাঠের আম্পায়ারের 'সফট সিগন্যালকেই।

পরে ম্যাচ শেষে কোহলি বলেছিলেন, মাঠের আম্পায়ার ঠিক নিশ্চিত না হতে পারলে সফট সিগন্যালে ‘আমি জানি না’ এই অপশনটিও থাকা উচিত।