লিটন-মিরাজের ব্যাটে বাংলাদেশের দারুণ সেশন

মোহাম্মদ মিঠুন ও মুশফিকুর রহিমের দুটি উইকেট উপহারের ফলে অনেক শঙ্কায় পড়ে যাওয়া বাংলাদেশকে টানছেন লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজ। ফিফটি তুলে নেওয়া দুই ব্যাটসম্যান শতরানের জুটিতে এড়িয়েছেন ফলো অন। দলকে উপহার দিয়েছেন প্রথম উইকেটশূন্য সেশন।  

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2021, 08:51 AM
Updated : 13 Feb 2021, 08:51 AM

ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিন চা-বিরতে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ৬ উইকেটে ২৭২ রান। লিটন ৬৬ ও মিরাজ ৫৩ রানে ব্যাট করছেন। দুই জনেরই ১২৫ বলের ইনিংসে সমান ৬টি করে বাউন্ডারি। এই রান করার পথে লিটন টেস্টে ছুঁয়েছেন এক হাজার রানের মাইলফলক।

দ্বিতীয় সেশনে ২৭ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৯১ রান তুলেছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চলতি সিরিজে স্বাগতিকদের এটাই প্রথম উইকেটশূন্য সেশন। 

উইকেটে এখনও পর্যন্ত বোলারদের জন্য নেই খুব একটা সহায়তা। সহজেই ক্যারিবিয়ানদের বোলিং সামলাচ্ছেন লিটন ও মিরাজ। দ্বিতীয় নতুন বলের প্রথম ৮ ওভার সাবধানতায় কাটিয়ে দিয়েছেন এই দুই জন।

এখন পর্যন্ত ২২৫ বলে ১১৭ রানের জুটি গড়েছেন সাত ও আটে নামা দুই ব্যাটসম্যান। তাদের দৃঢ়তায় কমছে ব্যবধান। প্রথম ইনিংসে ৪০৯ রান করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ এগিয়ে ১৩৭ রানে।

প্রথম ঘণ্টার পরপরই দৃষ্টিকটু এক শটে মুশফিক উইকেট বিলিয়ে এলে জুটি গড়েন লিটন-মিরাজ। শুরু থেকেই দুই জন খেলে গেছেন আস্থায়। কেবল উইকেট টিকিয়ে রাখার দিকেই মনোযোগ ছিল না, ওভার প্রতি তিনের উপরে রান করে গেছেন।

সেভাবে চেপে বসতে দেননি ক্যারিবিয়ানদের। বারবার বোলিংয়ে পরিবর্তন করেও কাজ হয়নি। নিজেদের মতো করে খেলে গেছেন দুই তরুণ ব্যাটসম্যান।

সকালের সেশনে ২ উইকেট হারিয়ে ৭৬ রান যোগ করে বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানের বদান্যতায় দুটি শিকারই রাকিম কর্নওয়ালের।

অথচ দিনের শুরুটা ছিল বাংলাদেশের জন্য দারুণ আশা জাগানিয়া। ফরোয়ার্ড শর্ট লেগ ও লেগ গালি রেখে শর্ট বল করার কৌশল নিয়ে শুরু করেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। তা কাজে লাগেনি। উল্টো তিনি নো বল করেন তিনটি। ফুল লেংথে বল পেলেই ড্রাইভ করেন মুশফিক ও মিঠুন। আরেক পাশে বাঁহাতি স্পিনার জোমেল ওয়ারিক্যানও সুবিধা করতে পারেননি। দলের রান বাড়তে থাকে অনায়াসে।

আগের দিন শেষ বিকেলে চোয়ালবদ্ধ লড়াইয়ে ৬১ বলে ৬ রানে অপরাজিত ছিলেন মিঠুন। নতুন দিনেও তার ব্যাটিংয়ে ছিল প্রতিজ্ঞার ছাপ। কিন্তু এক মুহূর্তের অমযোগীতায় শেষ হয় তার প্রচেষ্টা। ৮৬ বলে ১৫ করে বিদায় নেন কর্নওয়ালের বলে শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে।

পঞ্চম উইকেটে মুশফিক-মিঠুনের জুটি ছিল ১৮১ বলে ৭১ রানের।

২৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা মুশফিক ফিফটি স্পর্শ করেন ৮৯ বলে। এক মুহূর্তের জন্যও অস্বস্তিতে পড়তে দেখা যায়নি তাকে। কিন্তু হঠাৎই চেপে বসে রোমাঞ্চের ভূত। কর্নওয়ালের নিরীহ এক বলে রিভার্স সুইপ করতে যান। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় কাভারে। ১০৫ বলে ৫৪ রানের ইনিংসটি গড়া যতটা সাবলীলতায়, শেষ হওয়ার ধরন ভুলিয়ে দিল যেন সবকিছু।

লিটন ও মিরাজ এরপর আর বিপদ হতে দেননি লাঞ্চের আগে। পরে দ্বিতীয় সেশনও কাটিয়ে দিয়ে দলকে অনেকটাই ভালো অবস্থানে নিয়ে গেছেন দলকে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর (চা-বিরতি পর্যন্ত):

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৪০৯

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : (আগের দিন ১০৫/৪) ৮৮ ওভারে ১৮১/৬ (মুশফিক ৫৪, মিঠুন ১৫, লিটন ২৩*, মিরাজ ১১*; গ্যাব্রিয়েল ১৭-৩-৬১-২, কর্নওয়াল ২৭-৮-৫৭-৩, জোসেফ ১৭-৩-৫৯-১, মেয়ার্স ৮-২-১৫-০, ওয়ারিক্যান ১৩-২-৪৮-০, বনার ৩-০-১৭-০, ব্র্যাথওয়েট ২-০-৭-০)।