আবু ধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার প্রথম ওয়ানডেতে আয়ারল্যান্ডকে ১৬ রানে হারিয়েছে আফগানিস্তান। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেছে তারা। ২৮৮ রান তাড়ায় আইরিশরা থামে ২৭১ রানে।
আফগানিস্তানকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেওয়া গুরবাজ খেলেন ১২৭ বলে ১২৭ রানের ইনিংস। তার ইনিংসে ৮ চারের পাশে ছক্কা ৯টি। বিগ ব্যাশ লিগের মাঝপথ থেকে ফেরা রশিদ খেলেন টি-টোয়েন্টি মেজাজেই। নয় নম্বরে নেমে তিনি করেন ২ চার ও ৫ ছক্কায় ৩০ বলে ৫৫ রান।
এই ইনিংসের পথে গুরাবাজ ওলটপালট করে দেন রেকর্ডের পাতা। আফগানিস্তানের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডে অভিষেকে করেন সেঞ্চুরি। এই সংস্করণে অভিষেকে ৯ ছক্কা এর আগে মারেননি কেউ, ভারতের নভজোত সিং সিধুর ৫ ছক্কা ছিল আগের রেকর্ড।
আফগানদের মধ্যে সব মিলিয়েও ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ডটি এখন গুরবাজের। কিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রথম ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রানের বিশ্বরেকর্ডও এখন তার।
প্রতিপক্ষের এমন বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের মাঝেও ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন। ১০ ওভারে মাত্র ২৯ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন আইরিশ অফ স্পিনার। তার আগের সেরা ৩৮ রানে ৩ উইকেট।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা আফগানিস্তান গুরবাজের ব্যাটেই পায় উড়ন্ত সূচনা। জাভেদ আহমাদাইয়ের সঙ্গে তার শুরুর জুটিতে রান আসে ১২০। যেখানে বেশিরভাগ রানই গুরবাজের।
প্রথম ৯ বলে রান না করতে পারা গুরবাজ রানের খাতা খোলেন ব্রায়ান ম্যাককার্থিকে পুল করে ছক্কা মেরে। এরপর কার্টিস ক্যাম্পারকে পুল করে ছক্কায় ফিফটি স্পর্শ করেন ৩৮ বলে। কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কে পা রাখেন ১১৫ বলে।
দুটি করে চার-ছক্কায় ৩৮ রান করা আহমাদাইকে ফিরিয়ে আফগানিস্তানের ব্যাটিং লাইন আপে ধস নামান ম্যাকব্রাইন। রহমত শাহ, আসগর আফগান, মোহাম্মদ নবি, গুলবাদিন নাইবকে যেতে দেননি দুই অঙ্কে।
৩৮তম ওভারে এসে গুরবাজকে থামান গ্যারেথ ডেলানি। ডিপ স্কয়ার লেগে সিমি সিংয়ের হাতে ধরা পড়েন আফগান ওপেনার।
আফগানিস্তানের জন্য আড়াইশ রান তখন মনে হচ্ছিল কঠিন পথ। কিন্তু নাজিবউল্লাহ জাদরান ও রশিদের ৪৮ রানের জুটিতে তারা পায় বড় পুঁজি। নাজিবউল্লাহ ম্যাককার্থির বলে আউট হন একটি করে ছক্কা-চারে ২৯ করে। শেষ ওভারে রান আউট হয়ে ফেরেন রশিদ।
নাভিন-উল-হকের দুর্দান্ত বোলিংয়ে রান তাড়ায় আয়ারল্যান্ড পায়নি আশানুরূপ শুরু। ওপেনার কেভিন ও’ব্রায়েনকে দ্রুত ফিরিয়ে আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবার্নিকেও বেশিক্ষণ টিকতে দেননি তিনি।
কার্টিস ক্যাম্পার ও লর্কান টাকারের ব্যাটে এগোতে থাকে আইরিশরা। ক্যাম্পারকে ফিরিয়ে তাদের ৮৬ রানের জুটি ভাঙেন মুজিব-উর-রহমান।
আয়ারল্যান্ডের হয়ে একমাত্র ফিফটি করেন টাকার। তিনটি করে চার-ছক্কায় ৯৬ বলে ক্যারিয়ার সেরা ৮৩ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। দলকে জেতাতে তার লড়াই যথেষ্ট ছিল না।
৬৮ রানে ৩ উইকেট নেন পেসার নাভিন। দুই স্পিনার মুজিব ও রশিদ নেন দুটি। সেঞ্চুরিয়ান গুরবাজ জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।।
আগামী রোববার দ্বিতীয় ওয়ানডে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ৫০ ওভারে ২৮৭/৯ (গুরবাজ ১২৭, আহমাদি ৩৮, রহমত ৩, আসগর ৬, নবি ৩, নাইব ২, নাজিবউল্লাহ ২৯, আজমতউল্লাহ ২, রশিদ ৫৫, মুজিব ১*, নাভিন ২*; ম্যাককার্থি ১০-০-৬৯-১, ইয়াং ৬-১-৪০-০, সিমি ১০-২-৪৫-১, ক্যাম্পার ৩-০-৩৯-০, ম্যাকব্রাইন ১০-০-২৯-৫, স্টার্লিং ৪-০-২৩-০, ও’ব্রায়েন ৫-০-১৯-০, ডেনালি ২-০-১৭-১)।
আয়ারল্যান্ড: ৫০ ওভারে ২৭১/৯ (স্টার্লিং ৩৯, ও’ব্রায়েন ১, বালবির্নি ১৫, টেক্টর ২৮, ক্যাম্পার ৩৯, টাকার ৮৩, ডেলানি ৫, সিমি ২৩, ম্যাকব্রাইন ২, ম্যাককার্থি ৫*, ইয়াং ১২*; নাভিন ৯-০-৬৮-৩, মুজিব ১০-০-৪০-০, নাইব ৭-০-৩৬-১, নবি ১০-০-৪৫-১, রশিদ ১০-০-৫৬-২, আজমতউল্লাহ ৪-০-২৪-০)।
ফল: আফগানিস্তান ১৬ রানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: রহমানউল্লাহ গুরবাজ।
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে আফগানিস্তান।