ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হ্যামিল্টন টেস্টের দ্বিতীয় দিনে শনিবার ৭ উইকেটে ৫১৯ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে নিউ জিল্যান্ড।
১০ ঘণ্টা ২৪ মিনিট উইকেটে থেকে উইলিয়ামসন করেছেন ২৫১ রান। তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। আগের সেরা ছিল ২০১৫ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অপরাজিত ২৪২।
ক্যারিবিয়ানরা দিনটা শেষ করতে পেরেছে স্বস্তিতে। কোনো উইকেট না হারিয়ে তাদের রান ৪৯।
উইকেট-কন্ডিশন সহজ ছিল না দ্বিতীয় দিনও। বল সিম ও সুইং করেছে যথেষ্ট। আগের দিন খুব ভালো বোলিং করতে না পারলেও এ দিন ক্যারিবিয়ান পেসারদের লাইন-লেংথ ছিল অনেক ভালো। কিন্তু ব্যাটিং মাস্টারক্লাসে উইলিয়ামসন জয় করেছেন সব বাধা। সুইংয়ের ফাঁদে তিনি পা দেননি। ড্রাইভ খেলেছেন কেবল নিশ্চিত হলেই। ভুল শট প্রায় দেখাই যায়নি। ২২১ রানে কেমার রোচের বলে অবশ্য ধরা পড়েছিলেন উইকেটের পেছনে, কিন্তু সেটি ছিল ‘নো বল।’
৯৭ রান নিয়ে উইলিয়ামসন শুরু করেছিলেন দ্বিতীয় দিন। তিনি তিন অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই নিউ জিল্যান্ড খায় ধাক্কা। দিনের দ্বিতীয় ওভারে রস টেইলরকে ৩৮ রানে বিদায় করেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল।
পরের ওভারেই কেমার রোচকে বাউন্ডারিতে উইলিয়ামসন পৌঁছে যান সেঞ্চুরিতে। ক্যারিয়ারের ২২তম সেঞ্চুরিতে একটি রেকর্ডেও নাম লেখা হয়ে যায় তার। অধিনায়ক হিসেবে এটি তার নবম সেঞ্চুরি। নিউ জিল্যান্ডের নেতৃত্বে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ডে পেরিয়ে গেলেন তিনি স্টিভেন ফ্লেমিংকে (৮)।
দিনের প্রথম ঘণ্টায় আরেকটি সাফল্য পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। হেনরি নিকোলসকে (৯) ফেরান কেমার রোচ। তবে উইলিয়ামসন হয়ে ওঠেন যেন আরও প্রতিরোধ্য। এক পর্যায়ে ২৯৪ বলে তার ছিল ১৩৬ রান। পরের ১০০ রান করেন তিনি কেবল ১০৬ বলে! কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলেননি একটিও।
আরেক প্রান্তের ব্যাটসম্যানের কাজ ছিল কেবল সঙ্গ দেওয়া। টস ব্লান্ডেলের সঙ্গে জুটি ৭২ রানের, তাতে ব্লান্ডেলের অবদান কেবল ১৪। ড্যারিল মিচেলের সঙ্গে জুটি ৫৬ রানের, তাতে মিচেলের রান মোটে ৯।
কাইল জেমিসনের সঙ্গে ৯৬ বলে ৯৪ রানের জুটিতে অবশ্য দুজনই রান করেছেন পাল্লা দিয়ে। ৩৬৯ বলে উইলিয়ামসন স্পর্শ করেন ডাবল সেঞ্চুরি। তার ক্যারিয়ারের তৃতীয় দ্বিশতক।
ইনিংস ঘোষণার জন্য এরপর বাড়াতে থাকেন রানের গতি। সেই চেষ্টায়ই শেষ হয়েছে ৪১২ বলের ইনিংস। ৩৪ চার ও ২ ছক্কায় ২৫১ করে ধরা পড়েন মিড উইকেট সীমানায়। ড্রেসিং রুমে ফেরার পথে ক্যারিবিয়ানদের প্রায় সবাই ছুটে এসে অভিনন্দন জানান তাকে।
ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্ট খেলতে নামা পেসার কাইল জেমিসন প্রথম ফিফটির স্বাদ পাওয়ার পর ইনিংস ঘোষণা করে নিউ জিল্যান্ড।
বোলিংয়ের হতাশার পর ক্যারিবিয়ানরা কিছুটা স্বস্তি পায় ব্যাটিংয়ে। চার কিউই পেসারকে সামলে দলকে ভালো শুরু এনে দেন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও জন ক্যাম্পবেল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড : ১৪৫ ওভারে ৫১৯/৭ (ডি.) (আগের দিন ২৪৩/২) (উইলিয়ামসন ২৫১, টেইলর ৩৮, নিকোলস ৭, ব্লান্ডেল ১৪, মিচেল ৯, জেমিসন ৫১*, সাউদি ১১*; রোচ ৩০-৭-১১৪-৩, গ্যাব্রিয়েল ২৫-৬-৮৯-৩, হোল্ডার ৩১-১২-৬০-০, জোসেফ ৩১-৮-৯৯-১, চেইস ২৫-০-১০৯-০, ব্র্যাথওয়েট ৩-০-১৪-০))।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ২৬ ওভারে ৪৯/০ (ব্র্যাথওয়েট ২০*, ক্যাম্পবেল ২২* ; সাউদি ৯-৩-২০-০, বোল্ট ৫-১-৬-০, জেমিসন ৬-২-৭-০, ওয়্যাগনার ৬-১-১১-০)