নারীর প্রতি সহিংসতার একের পর এক ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে অনেক মানুষ। গত কয়েকদিন ধরেই দেশের নানা জায়গায় চলছে আন্দোলন। ক্রিকেটারদের অনেকে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এবার বিসিবির ভিডিও বার্তায় তারা জানালেন নিজেদের ভাবনা।
মুশফিকুর রহিম আহবান জানালেন সত্যিকারের মানুষ হয়ে উঠতে।
“ গত কয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে আমার-আপনার, আমাদের বোনদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতনের ঘটনায় আমি মর্মাহত। নারীদের সম্মান করুন, সত্যিকারের মানুষ হোন।”
আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহর ডাক দিয়েছেন ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের।
“এখন সময় এসেছে, আসুন সবাই মিলে একতাবদ্ধ হয়ে এই অমানুষগুলোকে সামাজিকভাবে প্রতিহত করি এবং এদের মুখোশ খুলে দেই।”
তামিম ইকবাল তাকাতে বললেন নিজের পরিবারে।
“নিজ নিজ পরিবারের নারী সদস্যেদের কথা ভাবুন এবং দেশের প্রতিটি নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এগিয়ে আসুন।”
সৌম্য সরকারের কথা, “নারীকে সস্মান করুন, সত্যিকারের মানুষ হোন।”
বিসিবির ভিডিও বার্তায় মাশরাফি বিন মুর্তজা না থাকলেও দেশের সফলতম ওয়ানডে অধিনায়ক ফেইসবুকে নিজের লেখায় ফুটিয়ে তুলেছেন সমস্যার মূল কোথায়।
“ আপনার মেয়ে যখন আপনার কোলে বসে থাকে, তখন আপনার সেই অনুভূতি হয় না। যখন আপনার বোন আপনার পাশের রুমে থাকে, তখনও সেই অনুভূতি আসে না। আপনার স্ত্রীকে নিয়ে যখন আপনি ঘুরতে বেরোন, তখন তার দিকে বাঁকাভাবে তাকালে আপনার খারাপ লাগে। কিন্তু অন্যকে দেখার ক্ষেত্রে কি আমার, আপনার অনুভূতি একই রকম আছে? তা না হলে বুঝে নিতে হবে, সমস্যা অনেকের মগজেই।”
“হয়তো পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে সবারটা প্রকাশ পায় না। আসুন মানসিকতা পরিবর্তন করি। নারীকে মাথা উঁচু করে বাঁচতে দিই। আর ধর্ষক কোনো পরিচয় বহন করে না। সে কুৎসিত, হয়তো চেহারায় নয়, মানসিকতায়।”
অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও শক্ত বার্তা দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
“ চমৎকার একজন নারীর ছেলে আমি, জীবন চলার পথে স্ত্রী হিসেবে পেয়েছি অপূর্ব একজন নারীকে, দারুণ একজন নারীর ভাই আমি, আর দুটি ফুটফুটে কন্যার বাবা আমি। এক শ্রেণির বর্বর মানুষ বয়স, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে নারী ও শিশুদের প্রতি প্রতিদিনই যে জঘন্য অন্যায় করছে, তারপর আমি আর চুপ থাকতে পারিনা। আমার অবস্থান তাই সব ধরনের ঘৃণা ও সহিংসতার বিরুদ্ধে।”
“ একে অপরের অধিকার রক্ষা ও আদায়ের জন্য আমাদের চালিয়ে যেতে হবে লড়াই, ঠিক যেভাবে আমাদের অধিকার নিশ্চিত করতে লড়েছিলেন আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই নৈতিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করি এবং আমাদের নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করি, যাতে তারা স্বপ্ন দেখতে পারে এবং নির্ভয়ে তাদের জীবনযাপন করতে পারে। মনে রাখবেন, আজকে আমরা যদি এই বর্বর এই আচরণ ও মানসিকতার বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়াই়, তবে একদিন আমাদের প্রিয়জনদের একজনই হতে পারে এই নির্মমতার ভুক্তভোগী।”