ইশান্ত বলছিলেন ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মোহালির ওয়ানডে ম্যাচের কথা। ৩০৪ রান তাড়ায় শেষ ৩ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল ৪৪ রান। তখনও পর্যন্ত ৭ ওভার বোলিং করে ৩৩ রানে ১ উইকেট নেওয়া ইশান্তকে আক্রমণে আনলেন ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। ওই ওভারেই বদলে গেল ম্যাচের চিত্র।
ইশান্তের ওভারের প্রথম বলে চার মারলেন জেমস ফকনার, পরের দুই বলেই ছক্কা। চতুর্থ বলে এলো দুই রান। শেষ দুই বলে আবার দুটি ছক্কা। এক ওভারেই ৩০! ম্যাচ হেলে পড়ল অস্ট্রেলিয়ার দিকে। ৩ বল বাকি রেখেই জিতে নিল তারা ৪ উইকেটে।
ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোর শো ‘ক্রিকেটবাজি’-তে সাবেক ভারতীয় কিপার দিপ দাসগুপ্তর সঙ্গে আড্ডায় ইশান্ত ফিরে গেলেন সেই সময়টায়।
“ আমার জীবনের মোড় বদলে গেছে ২০১৩ সালে, ফকনার যখন আমার এক ওভারে ৩০ রান নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন। তখন আমার মনে হয়েছিল, নিজের সঙ্গে ও দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছি আমি। দুই-তিন সপ্তাহ কারও সঙ্গে কথা বলিনি আমি। অনেক কেঁদেছি।”
“ এমনিতে আমি শক্ত ছেলে। আমার মা বলেন, আমার মতো শক্ত মানষিকতার মানুষ তিনি দেখেননি। কিন্তু ওই সময় আমি বান্ধবীকে ফোন করে শিশুর মতো কেঁদেছি। ওই তিন সপ্তাহ ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। খাওয়া বাদ দিয়েছিলাম। ঘুমাতে পারতাম না। টিভি খুললেই দেখা যেত লোকে সমালোচনা করছে, আমার অবস্থা তাতে আরও খারাপ হয়ে গিয়েছিল।”
কান্নার সেই সময়টাই এখন ইশান্তের হাসির কারণ।
“ এখন আমি সেটা নিয়ে নিয়ে হাসাহাসি করি এং মনে করি, সেই সময়টা ছিল শাপেবর। কখনও কখনও নিজের তাড়না বোঝার জন্য হোঁচট খাওয়ার প্রয়োজন। ফকনারের ঘটনার আমার জীবনে বড় পরিবর্তন এনেছে। ২০১৩ সালের পর থেকেই আমি সবকিছু আরও গুরুত্ব দিয়ে নিতে শুরু করেছি।”
“ এই ঘটনার আগ পর্যন্ত পারফরম্যান্স ভালো না হলে অনেকে আমার কাছে এসে বলত, ‘ব্যাপার না, খেলায় এরকম হয়।’ আমিও মেনে নিতাম। কিন্তু ২০১৩ সালের পর কেউ আমাকে এরকম বললে, আমি পাত্তা দিতাম না। ভুল মানে ভুলই। নিজের ভুলের জন্য দায় নিতে শুরু করলাম। এটি শুরু করা মানে প্রতিটি ম্যাচই দলের জয়ের জন্য খেলতে নামা।”