সদ্য সমাপ্ত এই সিরিজের আগের দুই সিরিজে ব্রড ছিলেন ইংল্যান্ডের সফলতম বোলার। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে একাদশে জায়গা তাই নিশ্চিত বলেই ধরে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সাউথ্যাম্পটনে সেই টেস্টের অধিনায়ক বেন স্টোকসের কাছ থেকে যখন বাইরে থাকার কথা জানলেন, ব্রড স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন।
সেই সময়ের মানসিক অবস্থা বোঝাতে অভিজ্ঞ পেসার ডেইলি মেইলের কাছে খুলে দিলেন মনের দুয়ার।
“ অবসর নেওয়ার ভাবনা কি আমার মাথায় এসেছিল? শতভাগ। কারণ প্রচণ্ড হতাশ হয়েছিলাম। আমি ধরেই নিয়েছিলাম যে ম্যাচটি খেলব। অবশ্য খেলাধুলায় এরকম ভাবা সবসময়ই বিপজ্জনক, তবে আমার মনে হয়েছিল জায়গা আমার প্রাপ্য।”
“ স্টোকসি (বেন স্টোকস) যখন বলল যে আমি খেলছি না, আমার শরীর কাঁপতে শুরু করেছিল। কথাই বলতে পারছিলাম না।”
সুযোগ না পেয়ে ওই টেস্টের মাঝপথেই বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া জানান ব্রড। তার মতো অভিজ্ঞ একজন যখন প্রকাশ্যে ক্ষোভে ফেটে পড়েন, মনের অবস্থাও তাতে প্রকাশ্য হয়। নিজের সঙ্গে তখন লড়াই করতে হয়েছে প্রচণ্ড, জানালেন ব্রড।
“ দুই দিন ঘুমাতে পারিনি। হারিয়ে গিয়েছিলাম যেন। আবেগ-অনুভূতি তখন যেরকম ছিল, তাতে অন্য কোনো সিদ্ধান্ত নিশ্চিতভাবেই নিতে পারতাম।”
বাদ পড়ার খবর জেনেছিলেন যার কাছ থেকে, সেই স্টোকসেই পরে পাশে পেয়েছিলেন ব্রড।
“ বৃহস্পতিবার রাতে (টেস্টের দ্বিতীয় দিন) স্টোকসি দরজায় নক করল এবং করিডোরে অপেক্ষা করল কথা বলার জন্য। জিজ্ঞেস করল, ‘ক্রিকেট নিয়ে কিছু বলছি না, কিন্তু তুমি আছো কেমন?’ ওর এই ব্যাপারটি সত্যিই মন ছুঁয়ে গিয়েছিল আমার।”
পরের টেস্টেই ব্রড একাদশে ফিরেছেন এবং পরপর দুই টেস্টে আগুনঝরা বোলিংয়ে অবদান রেখেছেন দলের সিরিজ জয়ে। ফেরার পর থেকে তিনি কয়েকবার বলেছেন, আগের চেয়েও ভালো বোলিং করছেন এখন। ৩৪ বছর বয়সী ব্রড ও ৩৮ বছর বয়সী অ্যান্ডারসনকে একসঙ্গে টেস্ট খেলানো উচিত কিনা, সেই বিতর্কে নিজের ভাবনাও পরিষ্কার করে দিলেন।
“ ইংল্যান্ডের সেরা একাদশে আমি কি নিজেকে দেখি? অবশ্যই। সেরা একাদশে জিমি অ্যান্ডারসনের থাকা উচিত? নিশ্চিতভাবেই। কোনো সন্দেহ নেই যে জিমি ও আমি আরও উন্নতি করেছি। কোনো সংশয়ই নেই।”
“ গত ১৮ মাসে আমি টেস্ট ক্রিকেটে ২০.৫ গড়ে উইকেট নিয়েছি। বয়সটা মাথা থেকে সরিয়ে ফেলুন। যেকোনো পর্যায়েই যদি কেউ এমনটা করতে থাকে, তাহলে তাদেরকে এড়িয়ে না গিয়ে আরও সময় ধরে রাখতে চাইবে যে কেউ।”
তিন ম্যাচের এই সিরিজে একটি না খেলেও শেষ পর্যন্ত সিরিজ-সেরা হয়েছেন ব্রড। ২ টেস্টে নিয়েছেন ১৬ উইকেট, শেষ টেস্টে করেছেন ঝড়ো ফিফটি। স্পর্শ করেছেন ৫০০ টেস্ট উইকেটের মাইলফলকও। হতাশার শুরু সিরিজের তার শেষ হয়েছে প্রাপ্তির পূর্ণতায়।