ওয়ার্নকে দেখে ব্রডের ‘পাগলামো’

প্রতিপক্ষ যখন ছড়ি ঘোরাচ্ছে দাপটে, তখনই পাল্টা আক্রমণ। ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্টের দ্বিতীয় দিনে এভাবেই ব্যাটিং ঝড়ে মাতিয়েছেন স্টুয়ার্ট ব্রড। বল আছড়ে ফেলেছেন মাঠের নানা প্রান্তে। তার নিজের ভাষায় যেটি ‘পাগলামো’, তবে খানিকটা চিন্তা-ভাবনারও ফসল! এই ইংলিশ পেসার জানালেন, শেন ওয়ার্নকে দেখে তিনি রপ্ত করেছেন অমন ব্যাটিং কৌশল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 July 2020, 05:24 AM
Updated : 26 July 2020, 08:09 AM

ব্যাটিং সামর্থ্যে একসময় অলরাউন্ডারের কাতারেই রাখা যেত ব্রডকে। ২০১০ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৬৯ রানের সেই ইনিংস তো বটেই, লোয়ার অর্ডারে ব্যাট হাতে অবদান রেখেছেন প্রায় নিয়মিতই। সময়ের পরিক্রমায় ব্যাটের ধার কমেছে। এখন বেশির ভাগ সময়ই ব্যাট করেন ১০-১১ নম্বরে। তবে পুরনো ঝলক আবার দেখালেন শনিবার। আড়াই বছরের বেশি সময় পর দেখা পেলেন টেস্ট ফিফটির।

কেমার রোচ ও শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের দুর্দান্ত বোলিংয়ে এ দিন সকালে ১৮ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল ইংল্যান্ড। তারা তখন তিনশর নিচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায়। ১০ নম্বরে নেমে চিত্র পাল্টে দেন ব্রড। অপ্রথাগত সব শটে এলোমেলো করে দেন ক্যারিবিয়ানদের বোলিং। ৩৩ বলে করেন ফিফটি। ৪৫ বলে ৬২ রানের ইনিংস খেলে যখন আউট হলেন, দল তখন সাড়ে তিনশ পেরিয়ে গেছে।

পরে বল হাতেও দুটি উইকেট নেন ব্রড, সতীর্থ পেসারদের সঙ্গে মিলে ধস নামান ক্যারিবিয়ানদের ব্যাটিংয়ে। দিনশেষে তবু তার ব্যাটিং নিয়েই চর্চা হলো বেশি।

ব্রড জানালেন, তার ‘মেন্টর’, সাবেক ইংল্যান্ড কোচ ও এখন নটিংহ্যামশায়ার কোচ পিটার মুরসের পরামর্শে ওয়ার্নকে অনুসরণ করেই এসেছে ব্যাটিংয়ের সাফল্য।

“কৌশলগত দিক থেকে ঠিক কাজটিই করেছি, নটিংহ্যামশায়ারে পিটার মুরসের সঙ্গে কাজ করেছি যা নিয়ে। শেন ওয়ার্নের উদাহরণ দেখিয়েছিলেন তিনি। ব্যাটিংয়ের সময় ওয়ার্নকে খুব দৃষ্টিনন্দন লাগত না, কিন্তু মাঠের নানাপ্রান্তে বল পাঠাতে পারত এবং খুব কার্যকর ছিল, বিশেষ করে ২০০৫ অ্যাশেজে।”

“তো, এই পাগলামোর পেছনে কিছুটা চিন্তা-ভাবনাও ছিল। তবে আমি মাঠে সময়টা উপভোগ করেছি।”

ওয়ার্ন শুধু কিংবদন্তি লেগ স্পিনারই নন, লোয়ার অর্ডারে ব্যাট হাতেও ছিলেন বেশ কার্যকর। টেস্ট ক্যারিয়ারে ৩ হাজার ১৫৪ রান করেছেন এই অস্ট্রেলিয়ান, টেস্ট ইতিহাসে যা সেঞ্চুরি ছাড়া সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড।

ব্রডের ইনিংসটিই বিপর্যয় কাটিয়ে ইংল্যান্ডকে ভালো স্কোর এনে দেয়। দলকে করে তোলে উজ্জীবিত। ৩৪ বছর বয়সী এই পেসার জানালেন, ব্যাট হাতে নামার সময় তার চাওয়া ছিল প্রতিআক্রমণে প্রতিপক্ষকে ভড়কে দেওয়া।

“আমার রানগুলি খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল (দলের জন্য)। ব্যাপারটি ছিল, খেলার ধারা বদলে দেওয়ার চেষ্টা করা। সকালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দারুণ বোলিং করেছে। আমার মনে হচ্ছিল, গিয়ে যদি প্রথাগত পথেই খেলি, আমার আউট হওয়াও কেবল সময়ের ব্যাপার।”

“আমি তাই মোমেন্টাম বদলে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। বোলারদের লেংথ থেকেই খেলার চেষ্টা করেছি। দিনের প্রথম ৪০ মিনিটে কেমার (রোচ) ও শ্যানন (গ্যাব্রিয়েল) যা দারুণভাবে করেছে, তা এলোমেলো করার চেষ্টা করেছি।”