ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট সিরিজ শুরু হচ্ছে বুধবার থেকে। ২০০ উইকেট ছুঁতে রোচের প্রয়োজন আর ৭ উইকেট। ১৯৯৪ সালের মার্চে কার্টলি অ্যামব্রোস ছুঁয়েছিলেন এই মাইলফলক। অ্যামব্রোস পরে ৪০০ উইকেট ছাড়িয়ে গেছেন, ওয়ালশ ছাড়িয়েছেন ৫০০। কিন্তু গত ২৬ বছরে আর কোনো ক্যারিবিয়ান বোলার স্বাদ পাননি ২০০ ছোঁয়ার।
রোচকে দিয়ে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের দীর্ঘ খরা কাটতে যাচ্ছে, ইসএসপিএনক্রিকইনফোকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় ওয়ালশ বেশ উচ্ছ্বসিত।
“ দুর্দান্ত এক মাইলফলক এটি। আরেকজন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানকে এই বন্ধনীতে (২০০ টেস্ট উইকেট) পাওয়া দারুণ ব্যাপার। কেমার সবসময়ই আমার বন্ধু, আমি ওর জন্য খুব খুশি। ওর মাইলফলকের অপেক্ষায় তর সইছে না আমার।”
“ আশা করি, খুব বেশি সময় লাগবে না ওর এই পথটুকু যেতে। সিরিজের প্রথম টেস্টেই যদি করে ফেলতে পারে, তাহলে দারুণ হবে। কারণ এরপর ও নির্ভার থেকে টেস্ট সিরিজ উপভোগ করতে পারবে।”
২০০৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক রোচের। প্রথম টেস্টে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট, দ্বিতীয় টেস্টে ৭টি। এরপর অনেক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তাকে। জায়গা হারিয়েছেন দলে, আবার ফিরেছেন। করোনাভাইরাস বিরতির আগে দারুণ ছন্দে ছিলেন। গত বছর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন, ৩ টেস্টে ১৮ উইকেট নিয়ে হয়েছিলেন ম্যান অব দা সিরিজ। এরপর ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও দারুণ বোলিং করেছেন।
“ সে এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে সে নিজের খেলাটা বোঝে, জানে কী করতে চায় এবং কীভাবে এগোতে হয়। যেদিন এটা কাজে লাগে, সেদিন ফল মেলে। এখন সে জানে, কীভাবে একজন ব্যাটসম্যানকে ফাঁদে ফেলার জন্য তৈরি করতে হয়। ওর ধৈর্য এখন অনেক অনেক ভালো।”
“কখনও কখনও একজন ফাস্ট বোলার ধৈর্য ধরতে পারে না এবং প্রতি বলেই উইকেট নিতে চায়। কিন্তু ক্রিকেটে সেভাবে হয় না। সেরকম দিন এখনও আসবে। তবে এখন তার ধৈর্যই বলে দিচ্ছে, সে টিকে থাকবে এবং জানে যে কোন পথে লক্ষ্য অর্জন করতে হয়। আমার মতে, এই কারণেই সে এখন ধারাবাহিক। সে এখন সত্যিকারের গ্রেট। তার অর্জই তা বলে দিচ্ছে।”
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে এখনও পর্যন্ত ২০০ টেস্ট উইকেট নিতে পেরেছেন ৮ জন বোলার। ৫১৯ উইকেট নিয়ে চূড়ায় ওয়ালশ। টেস্ট ইতিহাসে ৫০০ উইকেট শিকারি প্রথম বোলার এই কিংবদন্তির বিশ্বাস, ঠিকভাবে সামলানো গেলে একদিন ৩০০ ছোঁবেন রোচ।
“ওয়ার্কলোড ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভাবতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে যদিও সে সীমিত ওভারের ক্রিকেট খুব বেশি খেলেনি। তবে নিজের মাদদণ্ড বেঁধে দেওয়া, লক্ষ্য ঠিক করা, এসব নিয়ে তাকেই ভাবতে হবে। ওয়ার্কলোড ব্যবস্থাপনা ঠিকঠাক হলে সে অনায়াসেই ৩০০ উইকেট পেয়ে যাবে।”
“তাকে যদি বাইরে ছিটকে পড়ে (চোটের কারণে) আবার ফিরে নতুন করে শুরু করতে হয়, তা কাম্য নয়। এই ছন্দ ও ধারাবাহিকতা ধরে রাখার পথ বের করতে হবে তাকে। বয়সের সঙ্গে সে আরও ভালো হয়ে উঠবে। তখন শরীরটাকে আরও ভালো বুঝতে হবে এবং ধরে রাখতে হবে। যখন সে শরীর সামলানো বুঝে উঠবে, ম্যাচ ফিটনেস ও পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে, তখন বোঝা যাবে যে ভালো অবস্থায় আছে।”