সব জিতে সিরিজ শেষ বাংলাদেশের

বোলাররা লক্ষ্য রেখেছিলেন নাগালে। বাকিটা সহজেই সারলেন ব্যাটসম্যানরা। লিটন দাস পেলেন টানা দ্বিতীয় ফিফটি। একপেশে লড়াইয়ে বাংলাদেশ জিতল ৯ উইকেটে। প্রথমবারের মতো কোনো সিরিজে জয়ী হলো তিন সংস্করণেই।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 March 2020, 11:36 AM
Updated : 11 March 2020, 04:43 PM

৯ উইকেটের জয়

ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টিতেও জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে স্বাগতিকরা জিতেছে ৯ উইকেটে। কেবল দ্বিতীয়বারের মতো এই সংস্করণে ৯ উইকেটে কোনো জয় পেল তারা।

সফরে সব আন্তর্জাতিক ম্যাচে হারল জিম্বাবুয়ে।

২৫ বল বাকি থাকতে ১২০ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে বাংলাদেশ। ৮ চারে ৪৫ বলে ৬০ রানে অপরাজিত থাকেন লিটন। দুই ছক্কায় ১৬ বলে ২০ রান করেন সৌম্য।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১১৯/৭ (কামুনহুকামউই ১০, টেইলর ৫৯*, আরভিন ২৯, উইলিয়ামস ৩, রাজা ১২, মুতুমবামি ১, মাটোমবোদজি ৩, মাধেভেরে ০, মুম্বা ১*; মুস্তাফিজ ৪-০-২৫-২, সাইফ ৪-০-৩০-১, আল আমিন ৪-০-২২-২, হাসান ৪-০-২৫-০, মেহেদি ৩-০-১৪-১, আফিফ ১-০-২-১)

বাংলাদেশ: ১৫.৫ ওভারে ১২০/১ (লিটন ৬০*, নাঈম ৩৩, সৌম্য ২০*; মাধেভেরে ৩-০-২০-০, এমপোফু ৩.৫-০-২৭-১, মুম্বা ৩-০-২৬-০, সুমা ১-০-১০-০, উইলিয়ামস ৩-০-১৬-০, রাজা ২-০-১৮-০)

লিটনের ফিফটি

দারুণ ছন্দে থাকা লিটন দাস পেলেন টানা দ্বিতীয় ফিফটি। দলকে বড় জয়ের পথে রাখা এই তরুণ সাত চারে ৩৫ বলে ছুঁয়েছেন পঞ্চাশ। টি-টোয়েন্টিতে এটি তার চতুর্থ ফিফটি।

১২ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৮৯/১। লিটন ৫০ ও সৌম্য সরকার ১ রানে ব্যাট করছেন।

ভালো শুরু দিয়ে ফিরলেন নাঈম

ওভার প্রতি কেবল সাড়ে চার রান প্রয়োজন। সহজেই আসছে রান। ম্যাচ শেষ করে আসা খুব কঠিন ছিল না। তবুও ফাঁদে পা দিলেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। ছক্কার চেষ্টায় ফিরলেন সীমানায় ক্যাচ দিয়ে। ভাঙল ৭৭ রানের উদ্বোধনী জুটি।

ক্রিস এমপোফুকে পুল করে ওড়াতে চেয়েছিলেন নাঈম। টাইমিং করতে পারেননি। ধরা পড়েন ডিপ মিডউইকেটে।

পাঁচ চারে ৩৪ বলে ৩৩ রান করেন নাঈম। ১১ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৭৮/১। ক্রিজে লিটনের সঙ্গী আগের ম্যাচের নায়ক সৌম্য সরকার।

লিটন-নাঈমের ফিফটি জুটি

রানের কোনো চাপ নেই। অহেতুক ঝুঁকি নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। দুই ব্যাটসম্যান এগোচ্ছেন দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে। অষ্টম ওভারে শুরুর জুটি ও দলের রান নিয়ে গেছেন পঞ্চাশে।

৮ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৫৫/০। লিটন ২১ বলে ২৭ ও নাঈম ২৭ বলে ২৭ রানে ব্যাট করছেন।

ছোট রান তাড়ায় বাংলাদেশের ভালো শুরু

তামিম ইকবালের জায়গায় সুযোগ পাওয়া মোহাম্মদ নাঈম শেখ খেলছেন আস্থার সঙ্গে। লিটন দাসের ব্যাটে প্রথম থেকেই আত্মবিশ্বাসের ছাপ। দুই তরুণের উদ্বোধনী জুটিতে সিরিজ জয়ের পথে এগোচ্ছে বাংলাদেশ।

পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ হারায়নি কোনো উইকেট। ৬ ওভারে স্বাগতিকদের স্কোর ৪৪/০। লিটন ১৬ বলে তিন চারে ২৩ ও নাঈম তিন চারে ২০ বলে খেলছেন ২০ রানে।

টেইলরের ফিফটির পরও ছোট লক্ষ্য

দুঃস্বপ্নের মতো কাটানো সিরিজের শেষটায় এসে রানের দেখা পেলেন ব্রেন্ডন টেইলর। ৩ রানে জীবন পাওয়া অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান পেলেন সফরে নিজের প্রথম ফিফটি। এরপরও অবশ্য বাংলাদেশকে বড় লক্ষ্য দিতে পারল না জিম্বাবুয়ে।

সিরিজ জিততে বাংলাদেশের চাই ১২০ রান। ৭ উইকেটে জিম্বাবুয়ে করেছে ১১৯ রান। ৪৮ বলে ৬ চার ও এক ছক্কায় ৫৯ রানে অপরাজিত ছিলেন টেইলর।

দুটি করে উইকেট নিয়েছেন আল আমিন হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমান। অভিষেকে উইকেট পাননি, তবে বোলিংয়ে ভালো করেছেন হাসান মাহমুদ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১১৯/৭ (কামুনহুকামউই ১০, টেইলর ৫৯*, আরভিন ২৯, উইলিয়ামস ৩, রাজা ১২, মুতুমবামি ১, মাটোমবোদজি ৩, মাধেভেরে ০, মুম্বা ১*; মুস্তাফিজ ৪-০-২৫-২, সাইফ ৪-০-৩০-১, আল আমিন ৪-০-২২-২, হাসান ৪-০-২৫-০, মেহেদি ৩-০-১৪-১, আফিফ ১-০-২-১)

মুস্তাফিজের জোড়া শিকার

নিজের শেষ ওভারে ফিরে উইকেট পেলেন মুস্তাফিজুর রহমান। ফিরিয়ে দিলেন টিনোটেন্ডা মাটোমবোদজিকে।

ডিপ মিডউইকেটে তার সহজ ক্যাচ মুঠোয় জমিয়েছেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। সেই ওভারে ওয়েসলি মাধেভেরের ক্যাচও মুঠোয় নিয়েছেন এই তরুণ।

এই দুই উইকেটের মাঝে সফরে নিজের প্রথম ফিফটি পেয়েছেন ব্রেন্ডন টেইলর। শুরুতে জীবন পাওয়া অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান ৪২ বলে ছুঁয়েছেন পঞ্চাশ।

১৯ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ১১৩/৭। ক্রিজে টেইলরের সঙ্গী কার্ল মুম্বা।

আল আমিনের দ্বিতীয় শিকার মুতুমবামি

লড়াইয়ের পুঁজির জন্য স্কোর বোর্ডে রান প্রয়োজন। শুরুর মন্থর ব্যাটিংয়ের জন্য শেষে বড় শট খেলতেই হবে। সময়ের দাবি মেটাতে গিয়েই ফিরলেন রিচমন্ড মুতুমবামি। আল আমিন হোসেনকে ওড়ানোর চেষ্টায় লং অনে দিলেন সহজ ক্যাচ।

খানিক আগে লং অফে ক্যাচ ছাড়া সৌম্য সরকার এবার কোনো ভুল করেননি। আস্থার সঙ্গে মুঠোয় জমান ক্যাচ। ২ বলে ১ রান করে ফিরেন মুতুমবামি।

১৭ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ১০১/৫। ক্রিজে ব্রেন্ডন টেইলরের সঙ্গী টিনোটেন্ডা মাটোমবোদজি।

সাইফের শিকার রাজা

দ্রুত এগোনোর চেষ্টায় থাকা সিকান্দার রাজা যেতে পারলেন না বেশিদূর। অফ স্পিনিং অলরাউন্ডারকে থামালেন মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন।

স্লোয়ার মারতে গিয়ে লাইন ভুল করেছিলেন সাইফ। লেগ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বল যে কোনো জায়গায় পাঠাতে পারতেন রাজা। মারে জোর ছিল বেশ। তবে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ মুঠোয় নিতে কোনো ভুল হয়নি আল আমিনের।

১০ বলে দুই চারে ১২ রান করেন রাজা। ১৬ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৯৭/৪। ক্রিজে ব্রেন্ডন টেইলরের সঙ্গী রিচমন্ড মুতুমবামি।

উইলিয়ামসকে ফেরালেন মেহেদি

শন উইলিয়ামসকে ডানা মেলতে দিলেন না মেহেদি হাসান। জিম্বাবুয়ের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ককে ফিরিয়ে দিলেন এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার।

বেরিয়ে এসে মেহেদির ওপর চড়াও হতে চেয়েছিলেন উইলিয়ামস। বাড়তি বাউন্সের জন্য বলে-ব্যাটে করতে পারেননি। সুযোগ কাজে লাগিয়ে বেলস ফেলে দেন মুশফিক। ৮ বলে ৩ রান করে স্টাম্পড হয়ে যান উইলিয়ামস।

সেই ওভারে মেহেদি পেতে পারতেন আরেকটি উইকেট। সিকান্দার রাজার সহজ ক্যাচ লং অনে মুঠোয় জমাতে পারেননি সৌম্য সরকার। সে সময় শূন্য রানে ছিলেন রাজা।

১৪ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৭৮/৩। ক্রিজে থাকা দুই ব্যাটসম্যান রাজা ও ব্রেন্ডন টেইলর একবার করে পেয়েছেন জীবন।

এসেই জুটি ভাঙলেন আফিফ

মাথা ব্যথার কারণ হয়ে ওঠা জুটি ভাঙলেন আফিফ হোসেন। ক্রেইগ আরভিকে ফিরিয়ে দিলেন তরুণ এই অফ স্পিনার।

অফ স্টাম্পের বাইরের বল লং অফ দিয়ে ওড়াতে চেয়েছিলেন আরভিন। টাইমিং করতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। কিছুটা এগিয়ে ক্যাচ মুঠোয় নেন সৌম্য সরকার। ভাঙে ৫৭ রানের জুটি।

১২ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৭১/২। ক্রিজে ব্রেন্ডন টেইলরের সঙ্গী শন উইলিয়ামস।

রিভিউ নিয়ে বাঁচলেন আরভিন

রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বলে-ব্যাটে করতে পারেননি। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর ক্রেইগ আরভিন বাঁচলেন রিভিউ নিয়ে।

বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা গেছে অফ স্পিনার মেহেদি হাসানের বলটা স্পিন করে লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে যেত। সে সময় ২৩ রানে ছিলেন আরভিন। এই ওভারেই পঞ্চাশ ছুঁয়েছে দ্বিতীয় উইকেট জুটির রান।

১০ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৬২/১। আরভিন ২৮ ও ব্রেন্ডন টেইলর ২৪ রানে ব্যাট করছেন।

পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেট

বল ব্যাটে আসছে দারুণভাবে। ব্যাটিংয়ের জন্য চমৎকার উইকেট। তবে চমৎকার লাইন-লেংথে বোলিং করে পাওয়ার প্লেতে সফরকারীদের ডানা মেলতে দেননি বাংলাদেশের বোলাররা।

৬ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৩১/১। ব্রেন্ডন টেইলর ৯ ও ক্রেইগ আরভিন ১২ রানে ব্যাট করছেন।

ফিরে যেতে পারতেন টেইলরও। অভিষিক্ত হাসান মাহমুদ উইকেট পেতে পারতেন তার প্রথম ওভারেই। শর্ট লেগ থেকে সীমানার দিকে অনেকটা দৌড়ে ক্যাচে হাত ছোঁয়ালেও মুঠোয় জমাতে পারেননি আল আমিন হোসেন। এর আগে অবশ্য তার হাত ধরেই বাংলাদেশ পায় পাওয়ার প্লের একমাত্র সাফল্যটি।

প্রথম আঘাত আল আমিনের

উইকেটে রয়েছে সবুজ ঘাসের ছোঁয়া। বাংলাদেশ খেলছে চার পেসার নিয়ে। অধিনায়ক টস জিতে নিয়েছেন ফিল্ডিং। শুরুতে সুবিধা আছে উইকেটে। সেটা কাজে লাগলো দ্রুতই। তৃতীয় ওভারে আক্রমণে এসে আল আমিন হোসেন এনে দিলেন প্রথম সাফল্য। কট বিহাইন্ড করে ফেরালেন টিনাশে কামুনহুকামউইকে।

আল আমিনকে স্কুপ করতে চেয়েছিলেন জিম্বাবুয়ের ওপেনার। ঠিক মতো পারেননি। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল জমা পড়ে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে।

১০ বলে দুই চারে ১০ রান করেন কামুনহুকামউই। ৩ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ১৫/১। ক্রিজে বেন্ডন টেইলরের সঙ্গী ক্রেইগ আরভিন।

জিম্বাবুয়ে দলে নেই টিরিপানো, একাদশে সুমা

একটি পরিবর্তন এসেছে জিম্বাবুয়ে দলে। চোটের কারণে একাদশে নেই পেসার ডনাল্ড টিরিপানো। খেলছেন চার্লটন সুমা।

জিম্বাবুয়ে: শন উইলিয়ামস (অধিনায়ক), টিনাশে কামুনহুকামউই, ব্রেন্ডন টেইলর, সিকান্দার রাজা, ওয়েসলি মাধেভেরে, ক্রেইগ আরভিন, রিচমন্ড মুতুমবামি, টিনোটেন্ডা মাটুমবোদজি, চার্লটন সুমা, কার্ল মুম্বা, ক্রিস এমপোফু।

বাংলাদেশ দলে তিন পরিবর্তন

শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ দলে এসেছে তিনটি পরিবর্তন। খেলছেন না তামিম ইকবাল, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ও শফিউল ইসলাম। অভিষেক হচ্ছে তরুণ পেসার হাসান মাহমুদের। একাদশে ফিরেছেন আল আমিন হোসেন ও মোহাম্মদ নাঈম শেখ।

বাংলাদেশ: মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, লিটন দাস, আফিফ হোসেন, মেহেদি হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান, আল আমিন হোসেন, হাসান মাহমুদ, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন।

টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে টস জিতলেন মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশ অধিনায়ক নিলেন বোলিং।

‘৩-০’ করার আশায় বাংলাদেশ

সুযোগ এসেছিল আগেও। কাজে লাগানো যায়নি। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জিতে আশা জেগেছে আবারও। দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি জিতলে বাংলাদেশ পাবে অনিবর্চনীয় স্বাদ। এক সিরিজ বিজয়ী হবে তিন সংস্করণেই।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি শুরু হবে সন্ধ্যা ছয়টায়।

একমাত্র টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে জেতে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জেতে ৩-০ ব্যবধানে।

দ্বিতীয় ওয়ানডে ছাড়া আর সব ম্যাচে বাংলাদেশ জিতে সহজেই। দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে সতীর্থদের কাছ থেকে আরেকটি দাপুটে পারফরম্যান্স চান মাহমুদউল্লাহ।