‘আমরা স্কুলমাস্টার নই’, তামিমের ব্যাটিংয়ের ধরন নিয়ে ম্যাকেঞ্জি

এক প্রান্তে লিটন দাস যখন ছুটছিলেন, আরেক প্রান্তে তামিম ইকবাল তখন ধুঁকছিলেন! জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের দুই ওপেনারের ছিল দুই চিত্র। তামিমের ব্যাটিংয়ের সেই ধরন নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। অতীতে অনেকবারই কোচ-অধিনায়ক বলেছেন, এক প্রান্ত আগলে রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তামিমকে। তবে তেমন কোনো নির্দেশনা এখন নেই, জানালেন ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জি।

ক্রীড়া প্রতিবেদকসিলেট থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2020, 02:39 PM
Updated : 2 March 2020, 02:47 PM

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের ব্যাটিং উইকেটে জিম্বাবুয়ের দুর্বল বোলিং আক্রমণের সামনে রোববার ৪৩ বলে ২৪ রান করেছেন তামিম। পাওয়ার প্লের ১০ ওভার শেষে তার রান ছিল ৩১ বলে ১৫।

গত কয়েক বছর ধরেই উইকেট আগলে দলের ইনিংস টেনে নেওয়ার ভূমিকা ছিল তামিমের। জাতীয় দলের টিম ম্যানেজমেন্ট সেই কথা যেমন বলেছেন বারবার, গত বিপিএলে তার দলের কোচও বলেছেন সেই ভূমিকার কথা।

কিন্তু সেই ভূমিকা এখন আর নেই জাতীয় দলে। সোমবার সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ম্যাকেঞ্জি বললেন, তামিমের মতো সিনিয়র ক্রিকেটারকে নির্দেশনা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

“সে তার ম্যাচ পরিকল্পনা জানে। আমরা এখানে স্কুলমাস্টার নই। আমরা কাউকে বলি না যে কী শিখতে হবে বা করতে হবে। আমরা মতামত দেই, ভাবনা জানাই এবং টেকনিক্যাল পরামর্শ দেই। এরপর সেসব মাঠে বাস্তবায়ন করা ক্রিকেটারদের ব্যাপার।”

“আমরা তরুণ কাউকে নিয়ে কথা বলছি না, সিনিয়র একজনের কথা বলছি। বিশ্বাস করুন, আপনাদের বা আমাদের যে কারও আগে সে জানে যে সে ভুল করেছে। তামিমের কাছে নিজের উইকেট অনেক মূল্যবান। এটিই তাকে সাফল্য এনে দিয়েছে। ওর জন্য ব্যাপারটি হলো, দু-একটি বলে আরেকটু হাত খোলা। সে যদি আর দু-একটি বাউন্ডারি শুরুতে আদায় করতে পারে, আপনারা তার পিছু ছাড়তে বাধ্য হবেন।”

প্রথম ওয়ানডেতে তামিম প্রথম বাউন্ডারি পেয়েছেন দশম ওভারে! ম্যাকেঞ্জির বিশ্বাস, শুরুতে বাউন্ডারির সংখ্যা একটু বাড়ালেই নিজের ছন্দ খুঁজে পাবেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।

“তামিম জানে তাকে কী করতে হবে। আমাদের মনে হচ্ছে, ওর আর দুটি বাউন্ডারি বেশি দরকার (ইনিংসের শুরুতে)। সে কোত্থেকে কিভাবে তা আদায় করবে, ব্যাটিংয়ের ধরন কেমন হবে, সেটা তার ব্যাপার। অন্য কেউ তামিমের হয়ে ব্যাট করে দেবে না, তার নিজেকেই করতে হবে।”

“আমি ব্যাপারটিকে মন্থর ব্যাট করা বা দ্রুতগতিতে ব্যাট করা দিয়ে বিবেচনা করি না। আমরা জানি, ভিত গড়ে দেওয়ার জন্য তামিম কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ভালো মানের বোলিংয়ে সে ভালো শট খেলতে পারে। আমরা স্রেফ চাই পাওয়ার প্লেতে আর দুটি বাউন্ডারি সে বেশি আদায় করুক। সেই সামর্থ্য তার আছে। আমরা জানি সে কী করতে পারে। আগের বিপিএলে (২০১৮-১৯) তার সেই বড় সেঞ্চুরির ইনিংসে আমরা তা দেখেছি।”

বাংলাদেশের বাস্তবতায় ক্রিকেটারদের যে প্রচণ্ড চাপ নিয়ে খেলতে হয়, সেটিও তুলে ধরলেন ম্যাকেঞ্জি। তার বিশ্বাস, দ্রুতই আপন চেহারায় দেখা যাবে তামিমকে।

“বাংলাদেশে এত এত মিডিয়া, ক্রিকেটারদের পারফর্ম করার চাপ অনেক। সবাই সবসময় আতশী কাঁচের নীচে থাকে। কখনও কখনও ছেলেদের একটু বেনিফিট অব ডাউট দিতে হয়। আপনারা তামিমের রেকর্ড দেখুন এবং তাকে খেলতে দিন। এই ক্রিকেটারদের ওপর আমরা যখনই অনেক চাপ দেই… আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এমনিতেই অনেক কঠিন জায়গা…”

“এমন নয় সে চেষ্টা করছে না। যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন সে বেশি ফিট। দেখুন, নিজের খেলা নিয়ে সে কত কাজ করেছে। সে যেভাবে অনুশীলন করছে, আমি তাকিয়ে স্রেফ বলি, এটা কেবল সময়ের ব্যাপার (ছন্দে ফেরা)। সবসময় সেঞ্চুরি করা যায় না। কিন্তু ভালো-খারাপ সবসময়ই একই ধরন ধরে রাখতে হয়।”