মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবারের প্রথম ম্যাচে ৩৪ রানে জিতেছে খুলনা। ১৮০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ১৮ ওভার ৪ বলে ১৪৫ রানে গুটিয়ে গেছে কুমিল্লা।
ভালো শুরুগুলো বড় করতে পারছিলেন না। স্ট্রাইক রেটও ছিল কেবল ১০০। ফলশ্রুতিতে একাদশে জায়গা হারিয়েছিলেন সাব্বির। এক ম্যাচ পর ফিরে নামলেন ওপেনিংয়ে। ৩৯ বলে দুই ছক্কা ও সাত চারে খেললেন ৬২ রানের ইনিংস। বড় দেরিতে নিজের মতো করে খেলতে পারলেন সাব্বির। খুলনার কাছে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে কুমিল্লার ছিটকে যাওয়া অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু করে খুলনা। দুই ম্যাচ পর দলে ফেরা শান্ত শুরুতে সচল রাখেন রানের চাকা। পরে শট খেলতে শুরু করেন মিরাজও।
এক সময়ের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়কের জুটি ভাঙেন সৌম্য সরকার। পয়েন্টে সানজামুলের হাতে ধরা পড়েন শান্ত। ২৯ বলে খেলা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের ৩৮ রানের ইনিংস গড়া চারটি চার ও এক ছক্কায়।
সব শট যে নিয়ন্ত্রণে ছিল এমন নয়। তবে পিক আপ শটগুলো ভালোই খেলছিলেন মিরাজ। ডেভিড ভিসাকে উইকেট ছেড়ে স্কুপ করার চেষ্টায় বোল্ড হয়ে যান তিনি। ৩৯ বলে দুটি করে ছক্কা ও চারে করেন ৩৯।
এরপর ঝড় তোলেন রুশো। ২৬ বলে পৌঁছান পঞ্চাশে। শুরুতে তাকে স্ট্রাইক দিয়ে যাওয়া মুশফিকও পরে শট খেলতে শুরু করেন। দুই জনে অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেটে ৪৬ বলে গড়েন ৮৫ রানের জুটি।
সৌম্যর করা ইনিংসের শেষ ওভারে দুই চারে ১২ রান তুলে নেন রুশো। দক্ষিণ আফ্রিকার বিস্ফোরক এই ব্যাটসম্যান আউট হতে পারতেন সেই ওভারের প্রথম বলে। ব্যাট ছুঁয়ে যাওয়া ক্যাচ গ্লাভসে জমিয়ে মৃদু আবেদন করেছিলেন কিপার মাহিদুল ইসলাম। কাছাকাছি সময় ব্যাট মাটি স্পর্শ করায় হয়তো বলে-ব্যাটের স্পর্শের ব্যাপারটি ঠিকমতো বুঝতে পারেননি তিনি।
৩৬ বলে চার ছক্কা ও ছয় চারে ৭১ রানে অপরাজিত থাকেন রুশো। মুশফিক দুই চারে ১৭ বলে করেন ২৪।
বড় রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি কুমিল্লার। রবি ফ্রাইলিঙ্কের বলে শফিউল ইসলামের দারুণ ক্যাচে ফিরেন স্টিয়ান ফন সিল। অধিনায়ক দাভিদ মালানকে দ্রুত বিদায় করেন শফিউল।
টুর্নামেন্টে সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে না পারা সাব্বির সাবধানী শুরুর পর খেলতে শুরু করেন শট। দ্রুত জমে যায় ছন্দে থাকা সৌম্যর সঙ্গে তার জুটি। ফ্রাইলিঙ্ককে ওড়ানোর চেষ্টায় সৌম্য সীমানায় ধরে পড়লে ভাঙে ৫১ রানের জুটি। সে সময় অমন শটের কোনো দরকারই ছিল না।
এরপর বেশিদূর এগোয়নি কুমিল্লার ইনিংস। দলটি শেষ ৬ উইকেট হারায় কেবল ১৫ রানে। শেষের দিকে তিনটি উইকেট তুলে নেন ফ্রাইলিঙ্ক। ১৬ রানে ৫ উইকেট নিয়ে জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। দুটি করে উইকেট নেন আমির ও শহিদুল ইসলাম।
এই জয়ে ১০ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে আছে খুলনা। ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তাদের পরেই আছে কুমিল্লা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ১৭৯/২ (শান্ত ৩৮, মিরাজ ৩৯, রুশো ৭১*, মুশফিক ২৪*; সানজামুল ৩-০-২৩-০, আবু হায়দার ২-০-১৭-০, মুজিব ৪-০-২৫-০, আল আমিন ৪-০-৪৫-০, সৌম্য ৪-০-৩৯-১, ভিসা ৩-০-৩০-১)
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স: ১৮.২ ওভারে ১৪৫ (ফন সিল ১২, সাব্বির ৬২, মালান ১, সৌম্য ২২, মাহিদুল ০, ইয়াসির ২৬, ভিসা ১০, আবু হায়দার ০, সানজামুল ১, মুজিব ০*, আল আমিন ০; আমির ৩.২-০-১৮-২, ফ্রাইলিঙ্ক ৪-১-১৬-৫, শফিউল ৩-০-২৬-১, আলিস ৪-০-৪৯-০, শহিদুল ৪-০-৩৪-২)
ফল: খুলনা টাইগার্স ৩৪ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: রবি ফ্রাইলিঙ্ক