মিরাজের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে খুলনার অনায়াস জয়

আভাস মিলেছিল আগের ম্যাচেই। সম্ভাবনা যদিও মিলিয়ে গিয়েছিল অঙ্কুরেই। এবার দিতে পারলেন পূর্ণতা। অনবদ্য ব্যাটিংয়ে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেললেন মেহেদী হাসান মিরাজ। যোগ্য সঙ্গ দিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এক সময়ের যুব দলের অধিনায়ক-সহ অধিনায়কের শতরানের জুটিতে সিলেট থান্ডারকে সহজেই হারাল খুলনা টাইগার্স।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Dec 2019, 02:30 PM
Updated : 28 Dec 2019, 04:21 PM

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবারের দ্বিতীয় ম্যাচে ৮ উইকেটে জিতেছে খুলনা। ১৫৮ রানের লক্ষ্য ১৩ বল বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলেছে মুশফিকুর রহিমের দল।

টানা তৃতীয় ম্যাচে ওপেন করতে নেমে মিরাজ দ্যুতি ছড়ালেন ব্যাটিংয়ে। আগের সেরা ৫১ ছাড়িয়ে খেললেন ৮৭ রানের ইনিংস। 

শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আঁটসাঁট বোলিং করেন আমির। ৪ ওভারে দেন কেবল ১৭ রান। পঞ্চম বোলার হিসেবে আক্রমণে আসা শহিদুল ২৬ রানে নেন ২ উইকেট। সিলেটের ইনিংস শেষে ১২ উইকেট নিয়ে আসরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিদের তালিকার দুই নম্বরে উঠে এসেছেন এই পেসার।

দ্বিতীয় ওভারে রবি ফ্রাইলিঙ্কের ওপর চড়াও হন ফ্লেচার। এক ছক্কা ও তিন চারে তুলে নেন ২১ রান। এরপরও পাওয়ার প্লেতে সিলেট করতে পারে কেবল ৪৩ রান!

এক প্রান্তে ভুগছিলেন রুবেল মিয়া। পারছিলেন না টাইমিং করতে, গ্যাপ বের করতে। মন্থর হয়ে যায় সিলেটের রানের চাকা।

নবম ওভারে ফিরে শোধ তোলেন ফ্রাইলিঙ্ক। দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডারের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে ফিরেন ফ্লেচার। ২৪ বলে দুই ছক্কা ও চার চারে করেন ৩৭। ভাঙে ৯ ওভার স্থায়ী ৬২ রানের উদ্বোধনী জুটি।

পরের ওভারে নিজের প্রথম বাউন্ডারির দেখা পান রুবেল। বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলামের বলে লং অফ দিয়ে ছক্কা। সেটি ছিল তার খেলা ৩২তম বল।

চার্লসের কাছে দুই ছক্কা হজম করলেও সেই ওভারেই ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দেন ফ্রাইলিঙ্ক। পরের ওভারে শহিদুলের বলে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় রুবেলের সংগ্রাম।

রনি তালুকদার ও আব্দুল মজিদের ব্যর্থতায় প্রথমবারের মতো সুযোগ পাওয়া রুবেল দুই চার ও এক ছক্কায় ফিরেন ৪৪ বলে ৩৯ রান করে। দুই বল পর পুল করতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করে ধরা পড়েন মোহাম্মদ মিঠুন।

৩৭ বলে ৫৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দলকে দেড়শ রানে নিয়ে যান মোসাদ্দেক হোসেন ও রাদারফোর্ড। ২০ বলে দুই ছক্কায় ২৬ রান অপরাজিত থাকেন রাদারফোর্ড। তিন চারে ১৮ বলে ২৩ রান করেন অধিনায়ক মোসাদ্দেক।

রান তাড়ায় শুরু থেকে সাবলীল ছিলেন মিরাজ ও শান্ত। ক্রিসমার সান্টোকির করা ইনিংসের প্রথম ওভারে দুই চার হাঁকান মিরাজ। নাঈম হাসানের পরের ওভারে তুলে নেন চার ও ছক্কা। সান্টোকির পরের ওভারে শান্তর ব্যাট থেকে আসে তিন চার। উড়ন্ত সূচনা পেয়ে যায় খুলনা।

এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। একের পর এক বোলার বদল করেও লাভ হয়নি। তরতর করে এগিয়ে গেছে খুলনা। ৩০ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করে জুটির রান, ৬৩ বলে একশ।

পাঁচ চার ও দুই ছক্কায় ৩১ বলে টি-টোয়েন্টিতে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি স্পর্শ করেন মিরাজ। এই সংস্করণে তার আগের ফিফটিও ছিল বিপিএলেই। গত আসরে খুলনা টাইটানসের বিপক্ষে রাজশাহী কিংসের হয়ে করেছিলেন ৫১।

ব্যাটসম্যানদের একটু ভাবাতে পারেন কেবল ইবাদত হোসেন। তার হাত ধরেই আসে সাফল্য। পাঁচ চারে ৩১ বলে ৪১ রান করা শান্তকে ফিরিয়ে ভাঙেন ১১৫ রানের জুটি।

একটি করে ছক্কা ও চারে ১১ বলে ১৫ রান করে রাইলি রুশো ফিরে যাওয়ার পর মুশফিককে নিয়ে বাকিটা সহজেই সারেন মিরাজ। ৬২ বলে খেলা তার ৮৭ বলের ইনিংসটি গড়া নয় চার ও তিন ছক্কায়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

সিলেট থান্ডার: ২০ ওভারে ১৫৭/৪ (ফ্লেচার ৩৭, রুবেল ৩৯, চার্লস ১৭, রাদারফোর্ড ২৬*, মিঠুন ০, মোসাদ্দেক ২৩*; আমির ৪-০-১৭-০, ফ্রাইলিঙ্ক ৪-০-৫৮-২, তানভীর ৪-০-২৩-০, শফিউল ৪-০-৩০-০, শহিদুল ৪-০-২৬-২)

খুলনা টাইগার্স: ১৭.৫ ওভারে ১৫৮/২ (শান্ত ৪১, মিরাজ ৮৭*, রুশো ১৫, মুশফিক ৩*; সান্টোকি ২.৫-০-৩২-০, নাঈম ৩-০-৩১-০, মোসাদ্দেক ৩-০-২৫-০, ইবাদত ৪-০-২০-১, দেলোয়ার ২-০-১৮-০, অপু ২-০-১৮-০, রাদারফোর্ড ১-০-৯-১)

ফল: খুলনা টাইগার্স ৮ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: মেহেদী হাসান মিরাজ