একেকজনের চোটের অবস্থা একেকরকম। কেউ ভালো হয়ে উঠেছেন, কেউ ভালোর দিকে। কাউকে নিয়ে আছে শঙ্কা। সবার সবশেষ অবস্থা জানালেন বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশিস চৌধুরী।
কলকাতা টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সময় হ্যামস্ট্রিংয়ে টান লাগায় মাঠ ছাড়েন মাহমুদউল্লাহ। পরে আর ব্যাটিংয়ে নামতে পারেননি। দেবাশিস চৌধুরী জানালেন, সম্ভাব্য শঙ্কার কথা মাথায় রেখেই তাকে সামলাতে হচ্ছে সতর্কতায়।
“মাহমুদউল্লাহর ইনজুরিটা হচ্ছে গ্রেড ওয়ান হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি। সে গতকাল স্ক্যান করিয়েছে, রিপোর্ট আমরা এখনও হাতে পাইনি। এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, খুব অল্প মাত্রার হ্যামস্ট্রিং হলেও আমরা ৭ দিনের বিশ্রাম দেই। কারণ, ফিট না হয়ে খেলায় ফিরলে আবার ইনজুরিতে পড়ার শঙ্কা থাকে। একই ইনজুরি ওই জায়গাতে হলে সারতে সময় নেয়।”
ওই টেস্টেই হেলমেটে বল লাগার পর ম্যাচ থেকে ছিটকে যান লিটন ও নাঈম। দুজনের পরিবর্তে ‘কনকাশন’ বদলি নেওয়া হয়। এই দুজনকে নিয়ে সুখবর শোনালেন বিসিবির প্রধান চিকিৎসক।
“ওরা মাথায় চোট পাওয়ার পর প্রাথমিক ভাবে সেখানেই দেখেছে। পরে সেখানকার স্থানীয় হাসপাতালে স্ক্যান করানো হয় দুজনকে। স্ক্যানের রিপোর্টে কোনো ব্লিডিং বা খারাপ কিছু পাওয়া যায়নি। ধরে নিচ্ছি ওদের কনকাশন তেমন মারাত্মক নয়।”
“কিন্তু নিয়মে আছে, প্রথম দুই দিন সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হয়। আইসিসির কিছু গাইডলাইন আছে মাথায় চোট পাওয়ার বিষয়ে। আঘাত লাগার দুই দিন পর ওরা স্বাভাবিক কাজ শুরু করতে পারে। এখন পর্যন্ত রিপোর্ট দেখে বলতে পারছি যে ওরা শঙ্কামুক্ত।”
ভারতের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে দেশে ফেরার পর ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচেই আঙুলে চোট পেয়েছিলেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। তরুণ এই লেগ স্পিনারের পাশাপাশি উঠতি বাঁহাতি পেসার শফিকুল ইসলামকে বিশ্রামে থাকতে হচ্ছে আরও। এই দুজনকেই দক্ষিণ এশিয়ান গেমসের (এসএ গেমস) বাংলাদেশ দলে না রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানালেন বিসিবির প্রধান চিকিৎসক।
“রোমানার হাঁটুর সমস্যা গত ৫-৬ মাস ধরে আছে। আমরা চেষ্টা করছি সামলানোর। ওর যে চোট, এসবে সাধারণত কয়েক মাস লেগে যায়। ওকে নিয়ে সমস্যা হচ্ছে যে, আমরা ওকে টানা বিশ্রামে রাখতে পারছি না। কিছু গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে ওকে অংশ নিতে হয়েছে। এখন আমরা ওকে আগামী বিশ্বকাপের আগে কোন ম্যাচ বা টুর্নামেন্টে অংশ নিতে দিব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
“আগামী ২ মাস সে সম্পূর্ণ ফিজিও এবং ট্রেনারদের তত্ত্বাবধানে থাকবে। গত এক মাস ধরে সে বিশ্রামে আছে, আরও এক-দেড় মাস খেলার বাইরে থাকতে হবে। আশা করছি এভাবে করলে, ফেব্রুয়ারির আগে সে পুরোপুরি ফিট হয়ে উঠবে।”
হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট মাশরাফিকে ভোগাচ্ছে গত বিশ্বকাপ থেকেই। বিশ্বকাপের পরপর শ্রীলঙ্কা সফর থেকেও ছিটকে যান হ্যামস্ট্রিংয়ে নতুন করে চোট পাওয়া। সেটি পুরোপুরি ছেড়ে যায়নি এখনও। এর মধ্যেই দেখা দিয়েছে নতুন বিপত্তি।
বিপিএলকে সামনে রেখে বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক ট্রেনিং শুরু করেছিলেন সপ্তাহ তিনেক আগে। এর মধ্যেই ব্যথা পেয়েছেন কোমরে। তার সবশেষ অবস্থাও জানালেন দেবাশিস চৌধুরি।
“মাশরাফি মোটামুটি চেষ্টা করছে নিজের রিহ্যাব প্রোগ্রামটা চালিয়ে নেয়ার জন্য। আজকেও সে ফিজিও থেরাপি নিয়েছে ও জিম সেশন করেছ। তবে আমরা যেভাবে চাচ্ছি তাকে সময় দিতে, রিহ্যাবের জন্য সেভাবে সে সময় দিতে পারছে না। ওর ব্যথা কমে আসছে আগের চেয়ে। তবে পুরোপুরি সেরে গেছে, এটা বলা যাবে না। ও যদি ব্যস্ততার বাইরে আরেকটু সময় দিতে পারত তাহলে আরেকটু দ্রুত সেরে উঠত।”
“তবে বিপিএলের আগে আশা করছি ওর ঠিক হয়ে যাওয়া উচিত। যে সময় সে আঘাত পেয়েছে, আর সেরে ওঠার জন্য যতটুক সময় পেয়েছে তাতে আশা করা যায় সে ঠিক হয়ে যাবে।”