ইংলিশ প্রতিরোধ ভেঙে অ্যাশেজ ধরে রাখল অস্ট্রেলিয়া

ক্রিকেটাররা সবাই তাকিয়ে স্টেডিয়ামের বড় পর্দায়। তাকিয়ে গ্যালারির সব দর্শক, গোটা মাঠের সবাই। রিভিউয়ের রায় দেখার রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা। রিভিউয়ে যখন দেখা গেল ‘আউট’, আনন্দ হুঙ্কারে লাফিয়ে উঠলেন অস্ট্রেলিয়ানরা। একেকজন যেন ছুঁতে চাইলেন আকাশ। ওই আউটেই নিশ্চিত হলো ম্যাচ জয়। নিশ্চিত হলো অ্যাশেজ ধরে রাখাও। উল্লাস তাই বাঁধনহারা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Sept 2019, 06:55 PM
Updated : 8 Sept 2019, 06:55 PM

শেষ দিনে ইংল্যান্ড লড়াই করল। প্রতিরোধ গড়ে উঠল।  রোমাঞ্চও ছড়াল বেশ। তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ নাটকীয় মোড়ে যেতে দিল না অস্ট্রেলিয়া। ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্ট জিতে নিল তারা ১৮৫ রানে।

ইংল্যান্ডের লড়াই ছিল ৮ উইকেট নিয়ে শেষ দিন কাটিয়ে দেওয়ার। অলআউট হয়েছে তারা দিনের খেলা ১৩.৩ ওভার বাকি থাকতে।

সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। শেষ টেস্টে ওভালে ইংল্যান্ড জিতলেও সিরিজ হবে ড্র। গত সিরিজের জয়ী হিসেবে অ্যাশেজ থাকছে তাই অস্ট্রেলিয়ারই।

২০০১ সালে স্টিভ ওয়াহর দলের পর এই প্রথম ইংল্যান্ড থেকে অ্যাশেজ ধরে রেখে ফিরতে পারছে অস্ট্রেলিয়া। ‘মেন্টর’ হিসেবে এবারও সিরিজ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে ওয়াহর।

আগের দিন শেষ বিকেলে এক ওভারে দুই উইকেট নিয়ে প্যাট কামিন্স বেঁধে দিয়েছিলেন জয়ের সুর। শেষ দিনেও কামিন্সের বলের সুরেই ছিল অস্ট্রেলিয়ার জয়ের মূর্ছনা।

তৃতীয় উইকেটে জো ডেনলি ও জেসন রয়ের জুটি ভাঙেন কামিন্সই। ভেতরে ঢোকা দারুণ এক বলে রয়কে ৩১ রানে বোল্ড করে ভাঙেন ৬৬ রানের জুটি।

খানিক পর ইংল্যান্ডকে আরেকটি বড় ধাক্কা দেন কামিন্স। ফিরিয়ে দেন ইংলিশদের আগের টেস্টের নায়ক বেন স্টোকসকে।

ইংল্যান্ডের রান তখন ৪ উইকেটে ৭৪। ৪টি উইকেটই কামিন্সের।

মিডল অর্ডার থেকে এই টেস্টেই ওপেনিংয়ে উঠে আসা ডেনলি অবশ্য সামলে নেন কামিন্সের তোপ। এক প্রান্ত আগলে রেখে ফিফটি স্পর্শ করেন ১১২ বলে।

ডেনলির লড়াই শেষ করেন ন্যাথান লায়ন। ৫৩ রানে বিদায় নেন লেংথ খেকে আচমকা অনেকটুকু বাড়তি লাফানো বলে।

এরপর থেকে চলতে থাকে ইংল্যান্ডের ছোট ছোট প্রতিরোধ পর্ব। জনি বেয়ারস্টো ও জস বাটলার চেষ্টা করেন উইকেটে পড়ে থাকার। ৪৫ রানের জুটি ভাঙে বেয়ারস্টো ২৫ রানে মিচেল স্টার্কের বলে আউট হলে।

বাটলার এরপর লড়াই করেন ক্রেইগ ওভারটনকে নিয়ে। ২১ ওভার খেলে দুজন যোগ করেন ৩৪ রান।

বাটলারের ইনিংস থামে জশ হেইজেলউডের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে। ১১১ বলে ৩৪ করে আউট হন বল বাইরে যাবে ভেবে ছেড়ে দিয়ে। শেষ মুহূর্তে সুইং করে ভেতরে ঢুকে বল ছোবল দেয় স্টাম্পে।

ইংল্যান্ড হাল ছাড়েনি এরপরও। জফরা আর্চার টিকতে পারেননি। কিন্তু ওভারটন ও জ্যাক লিচ চালিয়ে যান লড়াই। নবম জুটিতেও দুজন কাটিয়ে দেয় ১৪ ওভার।

অস্ট্রেলিয়াকে কিছুটা হলেও দুর্ভাবনায় ফেলে দেওয়া জুটি ভাঙেন অনিয়মিত লেগ স্পিনার মার্নাস লাবুশেন। দারুণ টার্ন ও বাউন্সে লিচ ফেরেন ১২ রানে।

এরপর কেবল শেষের অপেক্ষা। ওভারটনকে ফিরিয়ে ম্যাচের ইতি টানেন হেইজেলউড। প্রতিপক্ষ শিবিরেই জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে অস্ট্রেলিয়া।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৪৮৭/৮ (ডি.)

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩০১

অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: ১৮৬/৬ (ডি.)

ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস:(লক্ষ্য ৩৮৩, আগের দিন ১৮/২) ৯১.৩ ওভারে ১৯৭ (বার্নস ০, ডেনলি ৫৩, রুট ০, রয় ৩১, স্টোকস ১,  বেয়ারস্টো ২৫, বাটলার ৩৪, ওভারটন ২১, আর্চার ১, লিচ ১২, ব্রড ০*; কামিন্স ২৪-৯-৪৩-৪, হেইজেলউড ১৭.৩-৩-৩১-২, লায়ন ২৯-১২-৫১-২, স্টার্ক ১৬-২-৪৬-১,  লাবুশেন ৪-১-৯-১, হেড ১-১-০-০)।

ফল: অস্ট্রেলিয়া ১৮৫ রানে জয়ী

সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজের ৪টি শেষে অস্ট্রেলিয়া ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে

ম্যান অব দা ম্যাচ: স্টিভেন স্মিথ