আফগানদের চেয়ে নিজেদের অনেক এগিয়ে রাখছেন মিরাজ

গায়ে অনুশীলনের পোশাক আছে বটে। তবে অনুশীলনের অনুমতি নেই। রোববার শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে যখন ব্যাটিং-বোলিং ঝালিয়ে নিচ্ছেন সতীর্থরা, মেহেদী হাসান মিরাজ তখন দর্শক। আঙুলের হালকা চোটে আপাতত বিশ্রামে এই অলরাউন্ডার। তবে ভাবনা থেমে নেই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের নতুন মৌসুম। মাঠের লড়াই শুরুর আগে শক্তি-সামর্থ্য ও অভিজ্ঞতায় নিজেদের অনেকটা এগিয়ে রাখছেন মিরাজ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 August 2019, 01:44 PM
Updated : 25 August 2019, 01:44 PM

শনিবার ফিল্ডিং অনুশীলনে ক্যাচ নিতে গিয়ে ডানহাতের তর্জনিতে চোট পেয়েছিলেন মিরাজ। এক্স-রে করানো হয় দ্রুতই। তাতে ধরা পড়েনি কোনো চিড়। চোট গুরুতর নয়। ফিটনেস ট্রেনিং বা জিম সেশনে নেই বাধা। সতর্কতা হিসেবে ব্যাটিং-বোলিং অনুশীলন করবেন না দিন দুয়েক।

রোববার দুপুরে সতীর্থরা যখন ঘাম ঝরাচ্ছে নেটে, সেদিকে তাকিয়ে মিরাজ বললেন, “কষ্ট লাগছে, ব্যাটিং-বোলিং করতে পারছি না।” তবে স্বস্তিটাই বেশি তার, দ্রুতই ফিরতে পারবেন ব্যাট-বল হাতে।

মাঠে নামার জন্য তিনি মুখিয়ে আছেন, অপেক্ষা করছেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টের জন্য।  

গত কয়েক বছরে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রবল প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে আফগানিস্তান। টেস্টে নবীন হলেও বাংলাদেশের কন্ডিশনে তারা হতে পারে যথেষ্টই ভয়ঙ্কর। তবে মূলত অভিজ্ঞতার কারণেই নিজেদের অনেক এগিয়ে রাখছেন মিরাজ। যদিও আফগানদের তিনি মোটেও সহজভাবে নিচ্ছেন না।

“আসলে প্রতিটি ম্যাচই চ্যালেঞ্জ, ছোট-বড় নেই। কারণ, টেস্ট ক্রিকেটে যারাই ভালো খেলবে, তারাই জিতবে। তারপরও আমরা ওদের থেকে অনেক এগিয়ে আছি অভিজ্ঞতার দিক থেকে। খেলাও আমাদের নিজেদের কন্ডিশনে। ওদের চেয়ে অনেক দিক থেকেই এগিয়ে আছি।”

“তারপরও যতই এগিয়ে থাকি, যতই অভিজ্ঞতা থাকুক, আমাদের ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। সবাইকে পারফর্ম করতে হবে। যার যার জায়গায় পারফর্ম করতে হবে। আমরা যদি নির্দিষ্ট জায়গাগুলোতে পারফর্ম করি, তাহলে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।”

অনেকটা ব্যবধানে এগিয়ে থাকলে মাঠের ক্রিকেটেও সেটির প্রতিফলন পড়ার কথা। মিরাজও আশাবাদী, দাপুটে ক্রিকেট খেলে ব্যবধান প্রমাণ করে দেবে বাংলাদেশ।

“অবশ্যই আমরা ডমিনেট করে খেলার চেষ্টা করব। সেভাবেই আমরা কাজ করছি। ওদের থেকে আমরা অনেক এগিয়ে থাকব। দিনশেষে, আমরা যদি ভালো ক্রিকেট খেলি, ওরা আমাদের বিপক্ষে ওইরকম কিছুই করতে পারবে না।”

“তারপরও খেলায় হার জিত থাকবে, ভালো সময়-খারাপ সময় থাকে। আমাদের চাওয়া থাকবে, আমরা যেন ভালো ক্রিকেট খেলি এবং প্রমাণ করি যে, ওদের চেয়ে আমরা ভালো দল। সেটাই আমরা চেষ্টা করছি, সেভাবেই কঠোর পরিশ্রম করছি।”

কন্ডিশনের পার্থক্য খুব বড় হয়ে ওঠার কথা নয়। আফগানরাও এই কন্ডিশনে, এই ধরনের মন্থর উইকেটে অভ্যস্ত। আফগানদের বড় শক্তি স্পিন, যা এখানেও দারুণ কার্যকর হয়ে উঠতে পারে।

তবে সীমিত ওভার আর  টেস্টের পার্থক্য স্পিন বিভাগেও দেখছেন মিরাজ। তার মতে, টেস্টের বিবেচনায় এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশের স্পিনাররাই।

“আমাদের বোলারদের অনেক অভিজ্ঞতা আছে। বিশেষ করে আমাদের সাকিব ভাই আছেন, ১৩-১৪ বছর ক্রিকেট খেলে ফেলেছেন, সফল ক্রিকেটার। আর একটি উইকেট পেলে তাইজুল ভাইয়ের একশ টেস্ট উইকেট হবে। আমারও ৩-৪ বছরের অভিজ্ঞতা হয়েছে। এই তিন-চার বছরে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, আমি বলব ওদের থেকে আমাদের টেস্ট ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা ভালো।”

“ওদের স্পিনাররা ওয়ানডে- টি টোয়েন্টিতে রান সেভ করে বল করে। এটার জন্য হয়ত ব্যাটসম্যান চার্জ করে থাকে। টেস্ট ক্রিকেটে কিন্তু ওইরকম কিছু নাই যে জোর করে মারা বা চার্জ করে খেলা। যতক্ষণ ভালো করবে, ততক্ষণ টিকে থাকবে। ওরা কতটুকু করবে বা কতটুকু প্রস্তুতি নিয়ে আসবে, সেটা ওরাই ভালো জানে। কিন্তু আমি মনে করি, ওদের থেকে টেস্ট ক্রিকেটে আমরা অনেক এগিয়ে আছি। আমরা শতভাগ দিতে পারলে ফলাফল আমাদের দিকেই আসবে।”