রূপগঞ্জকে হারিয়ে শিরোপার পথে আবাহনী

জিতলেই শিরোপা ঘরে তোলার হাতছানি ছিল লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জের সামনে। প্রথম পর্ব শেষে শীর্ষে থাকা দলটি পুড়ল আবাহনীর প্রতিশোধের আগুনে। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি করলেন সৌম্য সরকার। পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস খেললেন জহুরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ মিঠুন। বিশাল সংগ্রহ গড়া বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা জিতল সহজেই।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 April 2019, 11:57 AM
Updated : 21 April 2019, 01:09 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সুপার লিগ পর্বের চতুর্থ রাউন্ডে ১০২ রানে জিতেছে আবাহনী। ৩৭৭ রান তাড়ায় ৭ উইকেটে ২৭৫ রানে থামে রুপগঞ্জ।

সৌম্যর জবাবে যেন সেঞ্চুরি করেন রূপগঞ্জের বাঁহাতি ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। তবে বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের কেউ সেভাবে সঙ্গ দিতে পারেনি তাকে। লোয়ার অর্ডারের মোহাম্মদ শহীদ ও তাসকিন আহমেদকে নিয়ে পরাজয়ের ব্যবধান কমান নাঈম।  

বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে রোববার টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ওপেনারদের দৃঢ়তায় ভালো শুরু পায় আবাহনী। এক প্রান্তে ঝড় তোলেন সৌম্য, অন্য প্রান্তে তাকে সহায়তা দিয়ে যান জহুরুল। দ্রুত জমে যায় তাদের জুটি। রান আসতে থাকে বানের স্রোতের মতো।

৩৯ বলে এবারের আসরে নিজের প্রথম ফিফটি স্পর্শ করেন সৌম্য। তিন অঙ্কে যেতে খেলেন আরও ৩২ বল। সব মিলিয়ে ৭১ বলে আসে সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ৭৯ বলে ১৫ চার ও দুই ছক্কায় ১০৬ রান করে ফিরে যান বাঁহাতি এই ওপেনার।

সৌম্যর বিদায়ের পর একটু ভাটা পড়ে রানের গতিতে। দলকে দুইশ রানে নিয়ে ফিরে যান জহুরুল। এই কিপার-ব্যাটসম্যান ৮৩ বলে করেন ৭৫ রান। থিতু হয়ে বিদায় নেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

আদর্শ মঞ্চ পেয়েছিলেন সাব্বির রহমান। খুব একটা খারাপ করেননি, আবার সুযোগটা কাজেও লাগাতে পারেননি। চারটি চারে ফিরেন ২৪ বলে ৩৩ রান করে। ভারতীয় ব্যাটসম্যান ওয়াসিম জাফর ফিরেন সময়ের দাবি মেটানোর চেষ্টায়।

শেষে যে ঝড় দরকার ছিল সেটা উপহার দেয় মিঠুনের ব্যাট। প্রথম বিশ্বকাপ খেলার পথে থাকা এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ৩৪ বলে দুই ছক্কা ও ৭ চারে খেলেন ৬৪ রানের টর্নেডো ইনিংস।

রান তাড়ায় শুরুতেই হোঁচট খায় রূপগঞ্জ। একই ওভারে মেহেদী মারুফ ও মুমিনুল হককে ফিরিয়ে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

নাঈম ইসলামকে থামান মাশরাফি বিন মুর্তজা। ওয়ানডে দলের অধিনায়ক পরে বিদায় করেন শাহরিয়ার নাফীসকে। মোসাদ্দেক হোসেনের শিকার জাকের আলী। ৮৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে রূপগঞ্জ।

রিশি ধাওয়ানের সঙ্গে ৬১ ও মোহাম্মদ শহীদের সঙ্গে ৯২ রানের জুটিতে দলকে পথ দেখান মোহাম্মদ নাঈম। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে প্রথম ফিফটি তুলে নেন মোহাম্মদ শহীদ। ৪৭ বলে চারটি করে ছক্কা ও চারে ৫৩ রান করা শহীদকে বোল্ড করে থামান মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন।

ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পাওয়া মোহাম্মদ নাঈম অপরাজিত থাকেন ১২৩ রানে। তার ১৩৫ বলের ইনিংস গড়া ১৩ চার ও দুই ছক্কায়। তাসকিন ২৩ বলে অপরাজিত থাকেন ২৫ রানে। 

দারুণ সেঞ্চুরির জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন সৌম্য।

১৫ ম্যাচে দ্বাদশ জয়ে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে এসেছে আবাহনী (০.৯০৫)। রান রেটে পিছিয়ে গেছে রূপগঞ্জ (০.৪২৫)। এই জয়ে শিরোপা ধরে রাখার পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল মোসাদ্দেকের দল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আবাহনী: ৫০ ওভারে ৩৭৭/৭ (জহুরুল ৭৫, সৌম্য ১০৬, শান্ত ২৪, জাফর ৪৬, সাব্বির ৩৩, মিঠুন ৬৪*, মোসাদ্দেক ৬, সাইফ ১১, মিরাজ ১*; শুভাশিস ১/৭৪, নাবিল ১/৪৮, শহীদ ২/৬২, নাঈম ০/৩৯, ধাওয়ান ১/৮১, তাসকিন ২/৫৭, মুমিনুল ০/১৪)

লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ৫০ ওভারে ২৭৫/৭ (মোহাম্মদ নাঈম ১২৩*, মারুফ ১০, মুমিনুল ৪, নাঈম ২০, জাকের ৩, শাহরিয়ার ২, ধাওয়ান ২৯, শহীদ ৫৩, তাসকিন ২৫*; মোসাদ্দেক ১/৫৭, সাইফ ১/৫৯, মিরাজ ৩/৬৫, মাশরাফি ২/২০, নাজমুল ০/৪৮, সাব্বির ০/২৩)

ফল: আবাহনী ১০২ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: সৌম্য সরকার