বিপিএলে শুক্রবারের প্রথম ম্যাচে ১ রানে জিতেছে কুমিল্লা। ১২৭ রান তাড়ায় ৯ উইকেটে ১২৬ রানে থামে ঢাকা। সাকিব আল হাসানের দল এ নিয়ে টানা পাঁচ ম্যাচে হারল।
জয়ের জন্য শেষ ওভারে ঢাকার প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। রাসেল যখন স্ট্রাইক পান তখন ৪ বলে দরকার ছিল ১২ রান। দুটি বল ডট খেলার পর সাইফকে ছক্কায় উড়ান বিস্ফোরক এই ব্যাটসম্যান। শেষ বলটি ছিল ইয়র্কার, ব্যাটের কানায় লেগে আসে বাউন্ডারি। রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার ম্যাচে নাটকীয় এক জয় তুলে নেয় কুমিল্লা।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবালের সঙ্গে ৩৮ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়ে ফিরে যান এভিন লুইস। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পান বাজে সময় কাটানো এনামুল হক।
শুরু থেকে বোলারদের ওপর চড়াও হওয়া তামিমকে ফেরান শুভাগত হোম চৌধুরী। অফ স্পিনারের বলে লং অনে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন রুবেল হোসেন। ২০ বলে দুই ছক্কা আর চারটি চারে ৩৮ রান করেন তামিম।
শামসুর রহমান ও ইমরুল কায়েসকে দ্রুত ফেরান সাকিব। দলের বিপদে পথ দেখাতে পারেননি তিন অলরাউন্ডার শহিদ আফ্রিদি, থিসারা পেরেরা ও সাইফ। শেষের দিকে দুই ছক্কায় ওয়াহাব রিয়াজের ১৬ এবং মেহেদি হাসানের ২০ রানের ওপর ভর করে লড়াইয়ের পুঁজি গড়ে কুমিল্লা। উদ্বোধনী জুটির ৩৮ রানই হয়ে থাকে সেরা জুটি।
৩০ রানে ৪ উইকেট নেন পেসার রুবেল। দুই স্পিনার সাকিব ও সুনিল নারাইন নেন দুটি করে উইকেট।
ছোট রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি ঢাকার। ২৯ রানের মধ্যে প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ফেলে তারা। কাইরন পোলার্ডের সঙ্গে ৪২ রানের জুটি গড়ে ফিরে যান নারাইন।
রানের জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছিল পোলার্ড ও রাসেলকে। আফ্রিদির করা ষোড়শ ওভার মেডেন খেলে সমীকরণ বেশ কঠিন করে ফেলেন রাসেল। জয়ের জন্য শেষ ৪ ওভারে ঢাকার দরকার ছিল ৩৮ রান।
সাইফে করা পরের ওভারে তিনটি ডট খেলে চতুর্থ বলে ফিরে যান পোলার্ড। মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সোহান। কোনোমতে হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেন শুভাগত। লেগ বাই থেকে আসে একটি রান। ১২ বলের মধ্যে সেটাই ঢাকার প্রথম রান!
শেষ ৩ ওভারে ঢাকার দরকার ছিল ৩৭ রান। আফ্রিদিকে পরপর দুই বলে ছক্কা হাঁকান রাসেল। পরের ওভারে বেঁচে যান ওয়াহাব রিয়াজের ‘নো’ বলের জন্য। সেই ওভারের শেষ বলে হাঁকান চার। শেষ বল পর্যন্ত ঢাকার আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন রাসেল। তবে দারুণ বোলিংয়ে ম্যাচে ব্যবধান গড়ে দেন সাইফ। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ২২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
১১ ম্যাচে অষ্টম জয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে গেল কুমিল্লা। সমান ম্যাচে ষষ্ঠ হারের স্বাদ পাওয়া ঢাকার পয়েন্ট ১০। শেষ চারে যেতে হলে খুলনা টাইটানসের বিপক্ষে প্রাথমিক পর্বের শেষ ম্যাচে জিততেই হবে তাদের।
১২ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে আছে রাজশাহী কিংস। খুলনার বিপক্ষে ঢাকা হারলে শেষ চারে খেলবে মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ২০ ওভারে ১২৭ (তামিম ৩৮, লুইস ৮, এনামুল ০, ইমরুল ৭, শামসুর ২, আফ্রিদি ১৮, থিসারা ৯, সাইফ ২, মেহেদি ২০, ওয়াহাব ১৬, মোশাররফ ৪*; শাহাদাত ১-০-১২-০, শুভাগত ৩-০-১৪-১, রাসেল ৪-০-২২-০, নারাইন ৪-০-২৫-২, রুবেল ৪-০-৩০-৪, সাকিব ৪-০-২৩-২)
ঢাকা ডায়নামাইটস: ২০ ওভারে ১২৬/৯ (মিজানুর ১৬, থারাঙ্গা ০, রনি ১, সাকিব ৭, নারাইন ২২, পোলার্ড ৩৪, রাসেল ৩০*, সোহান ০, শুভাগত ৪, রুবেল ০, শাহাদাত ১*; সাইফ ৪-১-২২-৪, মেহেদি ৪-০-২২-২, ওয়াহাব ৪-০-২২-১, মোশাররফ ৩-০-২৩-১, থিসারা ১-০-৩-০, আফ্রিদি ৪-১-২৭-১)
ফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ১ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন