কুমিল্লাকে গুঁড়িয়ে দিলেন মাশরাফি

বিপিএলে প্রথমবারের মতো চার উইকেট নিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে গুঁড়িয়ে দিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। অধিনায়কের দারুণ বোলিংয়ে উজ্জীবিত রংপুর রাইডার্স ছোট লক্ষ্য পেরিয়ে গেল সহজেই। শিরোপাধারীরা তুলে নিলো টানা দ্বিতীয় জয়।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Jan 2019, 01:02 PM
Updated : 8 Jan 2019, 02:20 PM

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবারের দ্বিতীয় ম্যাচ ৯ উইকেটে জিতেছে রংপুর। ৬৪ রানের লক্ষ্য ৪৮ বল বাকি থাকতে পেরিয়ে যায় মাশরাফির দল। 

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ২২ বল বাকি থাকতে গুটিয়ে যায় কুমিল্লার ইনিংস। তাদের ৬৩ রান এবারের আসরের সর্বনিম্ন। বিপিএলের সব আসর মিলিয়ে চতুর্থ সর্বনিম্ন।

কুমিল্লা দ্বিতীয়বারের মতো একশ রানের নিচে অলআউট হলো। তাদের আগের সর্বনিম্ন ছিল গত আসরে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে করা ৯৬।

শিশির পড়ায় দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে বল দ্রুত আসে ব্যাটে। ব্যাটসম্যানরা শট খেলতে পারায় রান আসে সহজেই। অন্যদিকে অলরাউন্ডারসহ ৯ ব্যাটসম্যান নিয়ে একাদশ সাজিয়েছিল কুমিল্লা। দুইয়ে মিলে বড় ইনিংস ছিল অনুমিত। সেখানে রানের জন্য সংগ্রাম করতে হল স্টিভেন স্মিথের দলকে। 

মাশরাফির ছোবলে শুরুতেই এলোমেলো হয়ে যায় কুমিল্লা। চার ওভারের স্পেলে চার উইকেট নিয়ে সুরটা বেঁধে দেন অভিজ্ঞ ডানহাতি এই পেসার।

এক প্রান্তে আঁটসাঁট বোলিং করে চাপ তৈরি করেন সোহাগ গাজী। অন্য প্রান্তে মাশরাফির ওপর চড়াও হয়ে চাপটা সরানোর চেষ্টায় ছিলেন কুমিল্লার ব্যাটসম্যানরা। তাদের চেষ্টা সফল হয়নি, প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দেন রংপুর অধিনায়ক।   

মাশরাফির স্লোয়ার বুঝতে না পেরে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন তামিম ইকবাল। পরের ওভারে ফিরে ডানহাতি পেসার অফ কাটারে তুলে নেন ইমরুল কায়েস ও এভিন লুইসের উইকেট। নিজের শেষ ওভারে মাশরাফি বিদায় করেন কুমিল্লা অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথকে।

মাশরাফির ছোবলের মাঝে শিকার ধরেন শফিউল ইসলাম। এলবিডব্লিউর ফাঁদে পেলেন পাকিস্তানের অভিজ্ঞ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান শোয়েব মালিককে।

১৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা কুমিল্লার বিপদ আরও বাড়িয়ে বাজে শটে ফিরে যান এনামুল হক। অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বল পুল করে ছক্কায় উড়ানোর চেষ্টায় ডিপ স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন এই কিপার ব্যাটসম্যান।

কুমিল্লার হয়ে দুই অঙ্কে যান কেবল শহিদ আফ্রিদি। ১৮ বলে ২৫ রান করা এই অলরাউন্ডারকে ফিরিয়ে দেন বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু।

বিপিএলে এবারই প্রথম চার উইকেট পেলেন মাশরাফি। এই টুর্নামেন্টে তার আগের সেরা ছিল ৩/১৬। এবারের ৪/১১ অভিজ্ঞ এই পেসারের ক্যারিয়ারেরই সেরা।

অপু ৩ উইকেট নেন ২০ রানে। শফিউল ৮ রানে নেন দুই উইকেট।

ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের অনুমতি পাওয়ায় প্রথমবারের মতো এবারের আসরে খেলতে নামেন ক্রিস গেইল। ঝড় তুলতে পারেননি এই বিস্ফোরক বাঁহাতি ওপেনার। ১ রান করে বাঁহাতি পেসার আবু হায়দারের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে ফিরে যান তিনি।

রাইলি রুশোকে নিয়ে বাকিটা সহজেই সারেন মেহেদি মারুফ। চার হাঁকিয়ে ম্যাচ শেষ করা এই ওপেনার ৩৯ বলে করেন ৩৬ রান। এক ছক্কায় রুশো করেন ২০ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ১৬.২ ওভারে ৬৩ (তামিম ৪, লুইস ৬, ইমরুল ২, স্মিথ ০, শোয়েব ০, এনামুল ২, আফ্রিদি ২৫, সাইফ ৭, মেহেদি ৬, আবু হায়দার ৫, শহিদ ০*; মাশরাফি ৪-১-১১-৪, সোহাগ ২-০-৭-০, শফিউল ২-১-৮-২, অপু ৩.২-১-২০-৩, রেজা ২-০-১১-১, হাওয়েল ৩-০-৬-০)

রংপুর রাইডার্স: ১২ ওভারে ৬৭/১ (গেইল ১, মারুফ ৩৬*, রুশো ২০*; আবু হায়দার ৩-০-১১-১, মেহেদি ৩-০-২২-০, শহীদ ২-০-১০-০, আফ্রিদি ২-০-১৬-০, সাইফ ১-০-৩-০, স্মিথ ১-০-৪-০)

ফল: রংপুর রাইডার্স ৯ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: মাশরাফি বিন মুর্তজা