জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে ফাইনালে পাকিস্তান

আগের দুই ম্যাচের মতো একেবারে উড়ে গেল না জিম্বাবুয়ে। লড়াই কিছুটা হলো। তবে শেষের ফলে নেই কোনো চমক। ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠল পাকিস্তান। টানা তৃতীয় হারে শেষ হয়ে গেল জিম্বাবুয়ের সম্ভাবনা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 July 2018, 01:41 PM
Updated : 4 July 2018, 01:41 PM

ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে জিম্বাবুয়েকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান। হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে বুধবার সলোমন মিরের ৯৪ রানের রেকর্ড ইনিংসে জিম্বাবুয়ে ২০ ওভারে তুলেছিল ১৬২ রান। ঠাণ্ডা মাথার রান তাড়ায় পাকিস্তান জিতেছে ৫ বল বাকি রেখে।

স্বাগতিকদের বিপক্ষে দুই জয়ে পাকিস্তান নিশ্চিত করল টুর্নামেন্টের ফাইনাল। আগেই দুটি জয় পাওয়া অস্ট্রেলিয়ার ফাইনালও তাতে হয়ে গেল নিশ্চিত। প্রাথমিক পর্বের শেষ দুটি ম্যাচ এখন কেবলই আনুষ্ঠানিকতার।

দুই ম্যাচে ব্যর্থ চামু চিবাবার বদলে এদিন সেফাস জুয়াওকে ওপেনিংয়ে আনে জিম্বাবুয়ে। ম্যাচের প্রথম ওভারেই শোয়েব মালিককে চার ও ছক্কায় শুরু করেন জুয়াও। তৃতীয় ওভারে হাসান আলিকে দুই বাউন্ডারি মারেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে জিম্বাবুয়ে তোলে বিনা উইকেটে ৪৬ রান। তবে উড়ন্ত সূচনার পর স্ট্রাইক বদলাতে ধুঁকেছেন জুয়াও। বড় শটের চেষ্টায়ই ২৬ বলে ২৪ করে বোল্ড হয়েছেন ফাহিম আশরাফের বলে।

ততক্ষণে ছন্দ পেয়ে গেছেন মিরে। তিনে নেমে ব্যর্থ অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। তারিসাই মুসাকান্দার সঙ্গে জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন মিরে। তৃতীয় উইকেটে দুজন যোগ করেন ৬৪ রান।

টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের প্রথম সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়েছিলেন মিরে। ৯২ রানে জীবনও পেয়েছেন। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি সুযোগ। ৯৪ রানে যখন আউট হলেন, ইনিংসের বাকি তখনও ১০ বল।

৬৩ বলে ইনিংসে ৬টি করে চার ও ছক্কা এসেছে মিরের ব্যাট থেকে। সেঞ্চুরি করতে না পারলেও মাসাকাদজার ৯৩ রান পেরিয়ে জিম্বাবুয়ের হয়ে সর্বোচ্চ টি-টোয়েন্টি ইনিংস এখন মিরের।

মুসাকান্দা করেছেন ২২ বলে ৩৩ রান। জিম্বাবুয়ে তোলে টুর্নামেন্টের তিন ম্যাচে নিজদের সর্বোচ্চ স্কোর।

ওপেনিংয়ে এদিন বদল এনেছিল পাকিস্তানও। ফর্মে না থাকা মোহাম্মদ হাফিজের জায়গায় হারিস সোহেল ইনিংস শুরু করেন ফখর জামানের সঙ্গে। নতুন জুটিতে ভালো একটি শুরুও পায় পাকিস্তান। যদিও সেটা কেবল ফখরের সৌজন্যেই।

৫৮ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন দুজন। ফখর ঝড় তুললেও ডানা মেতে পারেনি হারিস। যখন চেষ্টা করলেন ডানা মেলার, আউট হলেন ১৫ বলে ১৬ করে।

দ্বিতীয় উইকেট ফখর ও হুসাইন তালাত আরও এগিয়ে নেন পাকিস্তানকে। ফখরকে ফিফটির আগে থামান মিরে। ৩৮ বলে ৪৭ করে স্লগ করতে গিয়ে আউট বাঁহাতি ওপেনার।

পাকিস্তানকে তবু খুব চাপে ফেলা যায়নি। বাউন্ডারি না এলেও প্রতি বলেই এক-দুই নিয়ে রান রেটকে নিয়ন্ত্রণে রাখেন তালাত। চারে নেমে অধিনায়ক সরফরাজ গতি আনেন ইনিংসে।

৪৪ রানের ইনিংসে তালাত মেরেছেন কেবল একটি ছক্কা, নেই বাউন্ডারি। তার পরও ৩৫ বলের ইনিংসটায় স্ট্রাইক রেট ১২৫-এর বেশি।

তালাত আউট হলে একটু উত্তেজনা ফেরে ম্যাচে। পাকিস্তানের উইকেট অনেক ছিল হাতে, কিন্তু থিতু ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার পর ১৬ বলে ২৫ রানের সমীকরণ হতে পারত বিপজ্জনক।

সেটি হতে দেননি অভিজ্ঞ মালিক। উইকেটে গিয়ে দুটি বাউন্ডারিতে কমিয়েছেন চাপ। কাজ শেষ করেছেন সরফরাজ। পাকিস্তান অধিনায়ক অপরাজিত ছিলেন ২১ বলে ৬ চারে ৩৮ রানে।

পাকিস্তান জিতলেও ম্যাচ সেরা মিরে। টুর্নামেন্ট থেকে এখনও পর্যন্ত জিম্বাবুয়ের প্রাপ্তি কেবল এটিই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৬২/৪ (জুয়াও ২৪, মিরে ৯৪, হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ২, মুসাকান্দা ৩৩, চিগুম্বুরা ৫*, ওয়ালার ০*; মালিক ০/১২, আমির ১/২৫, হাসান ০/৩৭, ফাহিম ১/২৪, শাদাব ১/২৮, নওয়াজ ০/২৫, তালাত ১/১২)।

পাকিস্তান: ১৯.১ ওভারে ১৬৩/৩ (ফখর ৪৭, হারিস ১৬, তালাত ৪৪, সরফরাজ ৩৮*, মালিক ১২*; চিসোরো ০/৩৮, মুজারাবানি ০/৩১, এমপোফু ১/৩১, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ১/৩০, ওয়ালার ০/৩০, মিরে ১/১৫)।

ফল: পাকিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: সলোমন মিরে