অস্ট্রেলিয়াকে আবারও উড়িয়ে দিল ইংল্যান্ড

টপ অর্ডারে দুটি সেঞ্চুরি, দুটি শতরানের জুটি। তিনশ ছাড়ানো স্কোর। লড়াইয়ের চেষ্টা করেছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু এই ইংল্যান্ড যেন দুর্দমনীয়। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনীতে স্বাগতিকরা আরও একবার গুঁড়িয়ে দিল অস্ট্রেলিয়াকে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 June 2018, 08:43 PM
Updated : 21 June 2018, 08:43 PM

চতুর্থ ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়াকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। ৫ ম্যাচ সিরিজে এগিয়ে গেছে ৪-০তে।

চেস্টার-লি-স্ট্রিটে বৃহস্পতিবার অ্যারন ফিঞ্চ ও শন মার্শের সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়া তুলেছিল ৫০ ওভারে ৩১০ রান। এই মাঠে ওয়ানডেতে এটিই তখন সর্বোচ্চ স্কোর।

পরের ইনিংসেই সেই রেকর্ড হয়ে গেল অতীত। জন্ম হলো নতুন রেকর্ডের। জেসন রয়ের সেঞ্চুরি আর জনি বেয়ারস্টোর ও জস বাটলারের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ইংল্যান্ড জিতল ৩২ বল বাকি রেখে।

রান তাড়ায় ইংল্যান্ডকে আবারও বিধ্বংসী শুরু এনে দেয় অসাধারণ ফর্মে থাকা উদ্বোধনী জুটি। অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের তুলোধুনো করে ১৪২ বলে ১৭৪ রানের জুটি গড়েন রয় ও বেয়ারস্টো।

এই ইনিংসের পথেই উদ্বোধনী জুটিতে হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়েছেন দুজন মাত্র ১৬ ইনিংসেই। এর মধ্যে শতরানের জুটি ৫টি, অর্ধশত জুটি আরও ৪টি!

রয় ছুটেছেন রকেটের গতিতে। ৮১ বলে করেছেন সেঞ্চুরি। তিন ম্যাচের মধ্যে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি, ক্যারিয়ারে ষষ্ঠ।

বোলিংয়ে বৈচিত্র বাড়াতে এই ম্যাচে নাথান লায়নকে এনেছিল অস্ট্রেলিয়া। প্রায় দুই বছর পর ওয়ানডে খেলতে নামা অফ স্পিনার পারেননি রানের জোয়ারে ভাটার টান আনতে। তবে ৮৩ বলে ১০১ রান করে রয় উইকেট উপহার দিয়ে এসেছেন লায়নকেই।

অসাধারণ ফর্মে থাকা বেয়ারস্টো উইকেটের পেছনে ধরা পড়েছেন ৬৬ বলে ৭৯ রান করে।

এরপর জো রুট ও ওয়েন মর্গ্যান দারুণ শুরু করেও কাজ শেষ করে আসতে পারেননি। এই দুজনকে আউট করে অ্যাশটন অ্যাগার চেষ্টা করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার আশা জাগানোর।

সেই আশা খুন হয়েছে বাটলারের ব্যাটে। ২৯ বলে অপরাজিত ৫৪ রানের ইনিংসে কোনো শঙ্কাকে কাছেই ঘেঁষতে দেননি এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।

শেষটা বিবর্ণ হলেও ম্যাচের শুরুটায় অস্ট্রেলিয়া ছিল উজ্জ্বল। টস জয়ী দলটির হয়ে এদিন ওপেনিংয়ে ফেরেন অ্যারন ফিঞ্চ। ট্রাভিস হেডকে গড়েন ১০১ রানের উদ্বোধনী জুটি।

বেশি আগ্রাসী ছিলেন হেড। ৪৩ বলে যখন স্পর্শ করেন ফিফটি, ফিঞ্চের রান তখন মোটে ২০।

৬৩ রান করে আগে আউটও হন হেড। আদিল রশিদের বাজে এক বলে আরও বাজে শটে বল তুলে দেন সোজা ফিল্ডারের হাতে।

দ্বিতীয় উইকেটে আরও এটি দারুণ জুটি গড়ে তোলেন ফিঞ্চ ও শন মার্শ। ১২০ বলে ১২৪ রান যোগ করেন দুজন।

ফিঞ্চ ফিফটি করেছিলেন ৬৫ বলে। পরের ফিফটিতে লেগেছে ৪০ বল। ওয়ানডেতে এটি তার ১১তম সেঞ্চুরি, ৬টিই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।

মার্শের ইনিংসও এগিয়েছে একই গতিতে। পঞ্চাশ ছুঁয়েছিলেন ৬২ বলে। কিন্তু সেঞ্চুরি করে ফেলেন ৯১ বলেই। তিন ম্যাচের মধ্যে মার্শের এটি দ্বিতীয় সেঞ্চুরি, ওয়ানডে ক্যারিয়ারে পঞ্চম।

দারুণ ভিত থাকার পরও শেষ দিকে দ্রুত কিছু উইকেট হারিয়ে খানিকটা কমে যায় অস্ট্রেলিয়ার রানের গতি। ঠিক ১০০ রানেই আউট হন ফিঞ্চ। মার্ক উডের সেই ওভারে ফিরে যান মার্কাস স্টয়নিসও।

৯২ বলে ১০১ রান করা মার্শের উইকেটসহ এক এভারে তিন শিকার করেন ডেভিড উইলি।

রান এরপরও খারাপ ছিল না অস্ট্রেলিয়ার। কিন্তু এই ইংল্যান্ডের সামনে নিরাপদ নয় যেন কোনো স্কোরই!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ৩১০/৮ (ফিঞ্চ ১০০, হেড ৬৩, মার্শ ১০১, স্টয়নিস ১, অ্যাগার ১৯, কেয়ারি ৬, পেইন ৩, নেসের ২, রিচার্ডসন ৫*, লায়ন ৩*; উড ২/৪৯, উইলি ৪/৪৩, রুট ০/৪৪, ওভারটন ০/৫৫, রশিদ ২/৭৩, মইন ০/৪৩)।

ইংল্যান্ড: ৪৪.৪ ওভারে ৩১৪/৪ (রয় ১০১, বেয়ারস্টো ৭৯, হেলস ৩৪*, রুট ২৭, মর্গ্যান ১৫, বাটলার ৫৪*; নেসের ০/৭৪, স্ট্যানলেক ১/৫৪, লায়ন ১/৩৮, রিচার্ডসন ০/৫৮, অ্যাগার ২/৪৮, স্টয়নিস ০/৪১)।

ফল: ইংল্যান্ড ৬ উইকেটে জয়ী

সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে ইংল্যান্ড ৪-০তে এগিয়ে

ম্যান অব দা ম্যাচ: জেসন রয়