রেকর্ডটি কোনো পেসারের কাছেই হারাতে চান মাশরাফি

যেভাবে ছুটছিলেন, রেকর্ডটি অবধারিতই ছিল। এক ম্যাচ আগে ছুঁয়েছিলেন, সোমবার শুধুই নিজের করে নিলেন। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ লিস্ট ‘এ’ মর্যাদা পাওয়ার পর এক মৌসুমে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড গড়লেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে তার চাওয়া, দ্রুতই ভেঙে যাক এই রেকর্ড। নতুন কীর্তি গড়ুক অন্য কোনো পেসার!

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 April 2018, 12:45 PM
Updated : 2 April 2018, 12:45 PM

গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের হয়ে ৩৫ উইকেট নিয়েছিলেন বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার রনি। লিস্ট ‘এ’ মর্যাদা পাওয়ার পর প্রিমিয়ার লিগে সেটিই ছিল রেকর্ড। গত ২৭ মার্চ শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ৩ উইকেট নিয়ে মাশরাফি ছুঁয়েছিলেন রনিকে। পরের ম্যাচে ছিলেন উইকেটশূন্য। সোমবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে খেলাঘরের বিপক্ষে ৩ উইকেট নিয়ে উঠে গেলেন নতুন চূড়ায়।

১৫ ম্যাচেই ৩৮ উইকেট, ৪ ও ৫ উইকেট দুইবার করে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ফরহাদ রেজা, আসিফ হাসান ও কাজি অনিক তার চেয়ে ১০ উইকেট পেছনে। লিগে আরও ১ ম্যাচ বাকি, মাশরাফির সামনে সুযোগ আছে উইকেট আরও বাড়িয়ে নেওয়ার।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার অর্জনের ভাণ্ডার যথেষ্টই সমৃদ্ধ। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটের এই অর্জনও তো কম নয়! প্রায় দেড় যুগ ধরে খেলছেন যে লিগে, ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে এসেও সেই লিগে নতুন উচ্চতায় ওঠা আরও একবার প্রমাণ দিচ্ছে তার সামর্থ্য আর নিবেদনের। অনেকের সামনে নতুন করে হয়ে উঠেছেন উদাহরণ।

মাশরাফিকে অবশ্য নিজের অর্জন নিয়ে কখনোই খুব বেশি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়নি। ব্যতিক্রম নয় এবারও। রেকর্ড নিয়ে বেশ নির্লিপ্ত। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বললেন, এই রেকর্ড অন্য কারও নামে দেখতে চান দ্রুতই।

“ভালো লাগছে যে রেকর্ড হয়েছে। তবে আমি চাই না এই রেকর্ড অনেক দিন স্থায়ী হোক। চাইব পরের বারই কেউ ভেঙে দিক। তাহলে বোঝা যাবে, আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেট এগিয়ে যাচ্ছে।”

বাংলাদেশের উইকেট বরাবরই পেসারদের জন্য কঠিন। মাশরাফির চাওয়া, কোনো পেসারই এই রেকর্ড ভেঙে দলগুলির ধারণা ভেঙে দিক।

“আমি চাই, কোনো পেসার এই রেকর্ড ভাঙুক। বাংলাদেশের উইকেট-কন্ডিশনে পেসারদের কাজ কঠিন। তার পরও আগের রেকর্ড ছিল একজন পেসারের, এবার আমি ভাঙলাম। অন্য পেসাররাও ভালো করছে। তাতে স্পিনে অতি নির্ভরতা কমবে। তরুণ পেসাররা আরও উৎসাহিত হবে। দলগুলিও হয়ত ভরসা পাবে পেসারদের ওপর।”

কোন পেসার তার রেকর্ড ভাঙতে পারেন, সেটির একটি সম্ভাব্য ছবিও দাঁড় করালেন মাশরাফি।

“মুস্তাফিজ যদি পুরো লিগ খেলে, তাহলে ভেঙে দিতে পারে এই রেকর্ড। আবু জায়েদ রাহি আছে, সম্ভাবনাময়। রনি (আবু হায়দার) ৩৫টি নিয়েছে মানে আরও বেশিও নিতে পারে। এবার কাজী অনিক ভালো করেছে। কে জানে, হয়ত অন্য কেউ চমকে দিল!”

নিজের রেকর্ড উদযাপনের চেয়ে আপাতত মাশরাফির ভাবনা জুড়ে আবাহনীর শিরোপা জয়। দারুণ শুরুর পরও পরে খানিকটা পথ হারিয়েছিল দলটি। শিরোপা ফয়সালা তাই শেষ রাউন্ডে। জিতলে চ্যাম্পিয়ন, না জিতলে অনেক হিসেবের মারপ্যাচ। মাশরাফির চাওয়া ম্যাচ জিতেই শিরোপার স্বাদ পাওয়া।

“দল না জিতলে নিজের রেকর্ডের মূল্য আছে সামান্যই। গত দেড় মাস ধরে যে খেলে আসছি, সেটির সবকিছু এখন নির্ভর করছে শেষ ম্যাচে। আমরা যেভাবে শুরু করেছিলাম, আরও আগেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। তার পরও সবকিছু এখনও আমাদের হাতেই আছে। আশা করি শেষ ম্যাচ জিতেই আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে পারব।”