ব্রাদার্সের জয়ে আবারও নায়ক অলক কাপালী

প্রথম ম্যাচে দলের জয়ের নায়ক ছিলেন তিনি। অলক কাপালী ব্যাটে-বলে জ্বলে উঠলেন দ্বিতীয় ম্যাচেও। অধিনায়কের দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ব্রাদার্স ইউনিয়ন হারাল শক্তিশালী প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Feb 2018, 12:47 PM
Updated : 11 Feb 2018, 05:45 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম ব্যাংককে ২৪ রানে হারিয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। রোববার বিকেএসপি ৩ নম্বর মাঠে ব্রাদার্সের ২৯৪ রান তাড়ায় প্রাইম ব্যাংক করতে পারে ২৭০।

আগের ম্যাচে ৯৫ রান ও ১ উইকেট নিয়ে মোহামেডানের বিপক্ষে ব্রাদার্সকে জিতিয়েছিলেন অলক। ৩৪ বছর বয়সী অলরাউন্ডার এবার ব্যাট হাতে ৬৭ বলে ৭৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলার পর বল হাতে নিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উইকেট।

দারুণ খেলেও অলকের অলরাউন্ডার পারফরম্যান্সের সঙ্গে পেরে ওঠেননি নাহিদুল ইসলাম। অফ স্পিনে নতুন বলে ৭ ওভারে ৩০ রান দিয়ে ১ উইকেট নেওয়ার পর সাতে নেমে করেছেন ৬৯ বলে ৮৮। প্রাইম ব্যাংক তাতে জয়ের আশা দেখলেও শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেনি।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ব্রাদার্সকে উদ্বোধনী জুটিতে ৪৭ রান এনে দেন মিজানুর রহমান ও জুনায়েদ সিদ্দিক। ৪১ বলে ৩৬ রান করা মিজানুরকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন নাহিদুল।

জুনায়েদ এরপর মাইশুকুর রহমানের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে গড়েন ৫৪ রানের জুটি। এই দুজনও আউট হন বড় স্কোরের সম্ভাবনা জাগিয়ে। ৪৫ রানে ফেরেন জুনায়েদ, ৩০ করেন মাইশুকুর।

ইংলিশ ক্রিকেটার জন সিম্পসন আউট হয়ে যান ১২ রানেই। ১৪৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে হঠাৎই বিপদে পড়ে যায় ব্রাদার্স। সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করেন অলক ও ইয়াসির আলি চৌধুরী রাব্বি।

দুই প্রজন্মের দুই ব্যাটসম্যান মিলে পঞ্চম উইকেটে গড়েন ৯৫ রানের জুটি। চাপের মধ্যেও অলক খেলেছেন বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। ৪৮ বলে করেছিলেন ফিফটি। শেষ পর্যন্ত ৫টি করে চার ও ছক্কায় ফেরেন ৭৯ রান করে।

শেষ দিকের দাবি মিটিয়েছেন ইয়াসিরও। চারটি চার ও দুই ছক্কায় অপরাজিত ৬৯ করেন ৬৩ বলে। ব্রাদার্স করে ফেলে তিনশর কাছাকাছি রান।

রান তাড়ায় প্রাইম ব্যাংক দুই উইকেট হারায় ৩৭ রানে। তৃতীয় উইকেটে ৫১ রানের জুটি গড়েন সদ্য বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলে ডাক পাওয়া জাকির হাসান ও ভারতীয় ক্রিকেটার কুনাল চান্ডেলা।

তবে দুজনই আউট হন ৫০ রানে। দুজনকেই ফেরান অলক। ব্রাদার্স অধিনায়ক এই দুজনের মাঝে আউট করেন অভিজ্ঞ মেহরাব হোসেন জুনিয়রকেও।

ঝড় তুলতে পারেননি এ দিন অলরাউন্ডার আরিফুল হকও। ১৫৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে লড়াই থেকে অনেকটা ছিটকে পড়ে প্রাইম ব্যাংক।

কিন্তু সাতে নেমে বিধ্বংসী ইনিংস খেলে দলকে আবার আশা দেখান নাহিদুল। সঙ্গী পান দেলোয়ার হোসেনকে। অষ্টম উইকেটে অবিশ্বাস্যভাবে ১০৭ রানের জুটি গড়েন দুজন।

প্রাইম ব্যাংকের জয়টাকে অসম্ভব মনে হচ্ছিল না। শেষ ৪ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৩৪ রান। প্রাইম ব্যাংকের আশা শেষ করে দেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ। পরপর দুই বলে তরুণ পেসার ফিরিয়ে দেন এই দুজনকেই। ৮ চার ও ২ ছক্কায় ৬৯ বলে ৮৮ করেন নাহিদুল। নয়ে নেমে দেলোয়ার ৩৬।

পরের ওভারেই প্রাইম ব্যাংক হারায় শেষ উইকেট। উত্তেজনা পূর্ণ ম্যাচে জিতে যায় শেষ পর্যন্ত অলকের ব্রাদার্স।

অনেক পারফরমারের ভিড়ে সবচেয়ে উজ্জ্বল অলকই। পরপর দুই ম্যাচে ম্যান অব দা ম্যাচ, সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আনলেন জয়!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ব্রাদার্স ইউনিয়ন: ৫০ ওভারে ২৯৪/৭ (মিজানুর ৩৬, জুনায়েদ ৪৫, মাইশুকুর ৩০, অলক ৭৯, সিম্পসন ১২, ইয়াসির ৬৯*, শুভ ৭, রানা ১, নিহাদ ৯*; দেলোয়ার ২/৫৪, নাহিদুল ১/৩০, মনির ১/৪১, আল আমিন ১/৪৭, এনামুল জুনিয়র ০/৪৪, আরিফুল ২/৭৬)।

প্রাইম ব্যাংক: ৪৭.৪ ওভারে ২৭০ (মারুফ ৯, জাকির ৫০, আল আমিন ২, চান্ডেলা ৫০, মেহরাব ৩, আরিফুল ২, নাহিদুল ৮৮, সাজ্জাদুল ৩, দোলোয়ার ৩৬, মনির ৭, এনাম জুনিয়র ৩*; ইফতেখার ১/২৬, খালেদ ২/৪৩, রানা ১/৪৭, অলক ৩/৪৬, শুভ ২/৫৪, নিহাদ ০/৪৯)

ফল: ব্রাদার্স ইউনিয়ন ২৪ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: অলক কাপালী