শ্রীলঙ্কার তিনশ ছাড়ানো লিডে চাপে বাংলাদেশ

প্রথম ইনিংসে শত রানে পিছিয়ে থাকার পর ম্যাচে ফিরতে যে বোলিং-ফিল্ডিং দরকার ছিল, তা করতে পারেননি বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিন শেষে তিনশ ছাড়ানো লিড নিয়ে ঢাকা টেস্টে চালকের আসনে রয়েছে শ্রীলঙ্কা।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Feb 2018, 02:56 AM
Updated : 9 Feb 2018, 11:42 AM

কঠিন লক্ষ্য দিচ্ছে শ্রীলঙ্কা
 
প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও দুইশ পার হয়ে গেছে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ। প্রথম ইনিংসে ১১০ রানে গুটিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের লক্ষ্য হচ্ছে আরও কঠিন। 
 
দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে অতিথিদের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২০০ রান। লিড ৩১২ রানের। রোশেন সিলভা ৫৮ ও সুরঙ্গা লাকমল ৭ রানে অপরাজিত আছেন।
 
চতুর্থ ইনিংসে কখনও তিনশ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিততে পারেনি বাংলাদেশ। সর্বোচ্চ ২১৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছিল তারা ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেন্ট জর্জেসে।
 
দেশের মাটিতে বাংলাদেশ লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছে একবার। ২০১৪ সালে মিরপুরেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১০১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় জিতেছিল ৩ উইকেটে। 
 
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গত বছর কলম্বোয় ১৯১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৪ উইকেট জিতেছিল বাংলাদেশ।
 
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
 
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ৬২ ওভারে ২০০/৮ (করুনারত্নে ৩২, মেন্ডিস ৭, ধনঞ্জয়া ২৮, গুনাথিলাকা ১৭, চান্দিমাল ৩০, সিলভা ৫৮*, ডিকভেলা ১০, দিলরুয়ান ৭, ধনঞ্জয়া ০, লাকমল ৭*; রাজ্জাক ১৭-২-৬০-১, মুস্তাফিজ ১২-২-৩৫-৩, তাইজুল ১৯-২-৭২-২, মিরাজ ১৪-৩-২৯-২)
 
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১১০
 
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ২২২

রোশেন সিলভার ফিফটি
 
ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মধ্য দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন রোশেন সিলভা। ডানহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান তুলে নিয়েছেন ঢাকা টেস্টে তার দ্বিতীয় ফিফটি। সব মিলিয়ে তার টানা চতুর্থ পঞ্চাশ ছোঁয়া রানের ইনিংস।
 
৮৬ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন সিলভা। এই সময়ে তার ব্যাট থেকে আসে ৭টি চার।

স্লিপে জীবন পেলেন লাকমল
 
আবার হাত থেকে ছুটল ক্যাচ। স্লিপ ফিল্ডারের ব্যর্থতায় নষ্ট হল আরেক সুযোগ। সুরঙ্গা লাকমলকে এবার শূন্য রানে জীবন দিলেন সাব্বির রহমান। 
 
দারুণ এক ওভারে নিজের তৃতীয় উইকেটটি পাওয়া হল না মুস্তাফিজের। ব্যাট ছুঁয়ে প্রথম স্লিপে ক্যাচ যায় দেশের সেরা ফিল্ডার হিসেবে বিবেচিত সাব্বিরের কাছে। কিন্তু হাতে জমাতে পারেননি তিনি।
 
৫৭ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার স্কোর ১৮১/৮। রোশেন সিলভা ৪৪ ও লাকমল ২ রানে ব্যাট করছেন। অতিথিরা ২৯৩ রানে এগিয়ে।

মুস্তাফিজের প্রতিশোধ
 
আকিলা দনঞ্জয়া  গোল্ডেন ডাকের স্বাদ দিয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমানকে। প্রথম সুযোগেই তা ফিরিয়ে দিয়েছেন বাঁহাতি এই পেসার। অভিষেক টেস্টে দনঞ্জয়াকে দিয়েছেন গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ।
 
অফ স্টাম্পের বাইরের বল ঠিকমতো খেলতে পারেননি দনঞ্জয়া। তার ব্যাট ছুঁয়ে আসা ক্যাচ গ্লাভসে নেন লিটন দাস।

ফিরেই উইকেট পেলেন মুস্তাফিজ
 
চার হাঁকিয়ে নতুন স্পেলে মুস্তাফিজুর রহমানকে স্বাগত জানান দিলরুয়ান পেরেরা। পরের বলে তাকে ফিরিয়ে দেন মুস্তাফিজ।
 
বাঁহাতি পেসারের আগের স্পেল থেকেই এগিয়ে এসে কিপিং করছিলেন লিটন দাস। দিলরুয়ানের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে আসা ক্যাচ গ্লাভসে জমান তিনি। রিভিউ নিয়েছিলেন ব্যাটসম্যান কিন্তু সিদ্ধান্ত পাল্টায়নি।

অবশেষে তাইজুল ফেরালেন ডিকভেলাকে
 
দুইবার জীবন পাওয়া নিরোশান ডিকভেলাকে ফিরিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। 
 
বাঁহাতি স্পিনারের অফ স্টাম্পের ফুল লেংথের বল সুইপ করেন ডিকভেলা। পার করতে পারেননি স্কয়ার লেগের ফিল্ডার মাহমুদউল্লাহকে। লাফিয়ে ক্যাচ হাতে জমান অধিনায়ক। ১০ রান করে ফিরে যান ডিকভেলা। 
 
৫৪ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার স্কোর ১৭৪/৬। ক্রিজে রোশেন সিলভার সঙ্গী দিলরুয়ান পেরেরা।
 
আবার বাঁচলেন ডিকভেলা
 
ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলে যাওয়া নিরোশান ডিকভেলা জীবন পেলেন আবারও। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে এবার তার ক্যাচ ছাড়লেন বদলি ফিল্ডার তানবীর হায়দার।
 
অফ স্পিনারে বলে রিভার্স সুইপ ঠিক মতো করতে পারেননি ডিকভেলা। ক্যাচ যায় পয়েন্টের ফিল্ডার তানবীরের কাছে। কিন্তু জায়গা থেকে নড়েনই তিনি। শেষে সামনে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ মুঠোয় নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার আগেই মাটি স্পর্শ করে বল। ৪ রানের পর এবার ৯ রানে জীবন পেলেন ডিকভেলা।

জীবন পেলেন ডিকভেলা
 
টানা দ্বিতীয় ওভারে উইকেট পেতে পারতেন মেহেদী হাসান মিরাজ। অফ স্পিনারের বলে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে গেছেন নিরোশান ডিকভেলা। 
 
বোলারের মাথার ওপর দিয়ে উড়াতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। টাইমিং করতে পারেননি, উঠে যায় ক্যাচ। মিড অন থেকে ছোটেন আবদুর রাজ্জাক, দৌড়ে আসেন মিড অনের ফিল্ডার মুশফিকুর রহিমও। বলের নিচে গিয়েছিলেন রাজ্জাকই। কিন্তু ক্যাচ মুঠোয় নিতে পারেননি তিনি। 
 
সে সময় ৪ রানে ব্যাট করছিলেন ডিকভেলা। 
 
৪৯ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৫৩ রান। রোশেন সিলভা ২৮ ও ডিকভেলা ৭ রানে ব্যাট করছেন। অতিথিরা ২৬৫ রানে এগিয়ে।

চান্দিমালকে ফিরিয়ে প্রতিরোধ ভাঙলেন মিরাজ
 
আগের বলে দুই রান নিয়ে দিনেশ চান্দিমাল জুটিকে নিয়ে গেলেন পঞ্চাশ রানে। পরের বলে হয়ে গেলেন এলবিডব্লিউ।
 
বোলিংয়ে ফিরেই আঘাত হানেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার নিচু হয়ে ভেতরে ঢোকা বলে লেগে ঘুরাতে চেয়েছিলেন চান্দিমাল। বলে-ব্যাটে করতে না পেরে এলবিডব্লিউ হয়ে যান অধিনায়ক। ভাঙে ৫১ রানের জুটি। 
 
পরের বলেই আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেন নিরোশান ডিকভেলাকে। শ্রীলঙ্কার উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান বাঁচেন রিভিউ নিয়ে। 
 
৪৭ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার স্কোর ১৪৪/৫। ক্রিজে ডিকভেলার সঙ্গী রোশেন সিলভা।

করুনারত্নেকে ফেরালেন মিরাজ
 
তৃতীয় সেশনের শুরুতে উইকেট পেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ফিরিয়ে দিলেন ওপেনার দিমুথ করুনারত্নেকে।
 
লেগ স্টাম্পের ফুল লেংথ বল বেরিয়ে এসে ফ্লিক করতে গিয়ে ধরা পড়েন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। মিডউইকেটে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচ নেন ইমরুল কায়েস। ১০৫ বলে ৩২ রান করে ফিরে যান করুনারত্নে।
 
৩৩ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার স্কোর ৯৩/৪। ক্রিজে দিনেশ চান্দিমালের সঙ্গী রোশেন সিলভা। অতিথিরা এগিয়ে ২০৫ রানে।

দ্বিতীয় সেশনে ৩ উইকেট
 
দ্বিতীয় সেশনে শ্রীলঙ্কার তিন উইকেট তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। ৭৮ রান যোগ করে নিজেদের ভালো অবস্থানে নিয়ে গেছে অতিথিরা। 
 
চা-বিরতিতে যাওয়ার সময় শ্রীলঙ্কার স্কোর ৮৭/৩। দিমুথ করুনারত্নে ২৯ ও দিনেশ চান্দিমাল ৪ রানে ব্যাট করছেন। অতিথিরা এগিয়ে ১৯৯ রানে। 
 
ফিরে গেছেন কুসল মেন্ডিস, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও দানুশকা গুনাথিলাকা। একটি করে উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান, তাইজুল ইসলাম ও আব্দুর রাজ্জাক। আঁটসাঁট বোলিং করা মেহেদী হাসান মিরাজ পাননি কোনো উইকেট।

গুনাথিলাকাকে ফেরালেন মুস্তাফিজ
 
দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে আঘাত হেনেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। বাঁহাতি এই পেসার ফিরিয়ে দিয়েছেন দানুশকা গুনাথিলাকাকে।
 
মুস্তাফিজের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন গুনাথিলাকা।  বলের লাইন বুঝতে পারেনি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। অফ স্টাম্পে সরে গিয়ে ডিফেন্স করার চেষ্টায় ব্যাটে-বলে করতে পারেননি। ফিরে যান ১৭ রান করে। 
 
২৭ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার স্কোর ৮৪/৩। ক্রিজে দিমুথ করুনারত্নের সঙ্গী দিনেশ চান্দিমাল। অতিথিরা এগিয়ে ১৯৬ রানে।

ধনঞ্জয়াকে থামালেন তাইজুল
 
উইকেটে গিয়ে আক্রমণাত্মক খেলছিলেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। তাইজুল ইসলামকে এক ওভারে বাউন্ডারি মেরেছিলেন তিনটি। আউট হলেন সেই তাইজুলের বলেই।
 
মিডল স্টাম্পে পিচ করা বল টার্ন করে বেরিয়ে গেছে আরেকটু। বলের লাইন কাভার না করে ডি সিলভা জায়গা থেকেই ডিফেন্স করার চেষ্টা করেছিলেন ব্যাটের মুখ উন্মুক্ত করে। ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে বল লাগে স্টাম্পে।
  
২৪ বলে ২৮ রান করে আউট ডি সিলভা। শ্রীলঙ্কার রান ২ উইকেটে ৫৩, লিড ১৬৫ রানের।

রিভিউ নষ্ট
 
দিমুথ করুনারত্নের বিরুদ্ধে রিভিউ নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু কাজে আসেনি। হারাতে হয়েছে একটি রিভিউ।
 
মেহেদী হাসান মিরাজের একটু জোরের ওপর করা ফুল লেংথ বল ডিফেন্সের চেষ্টা করেছিলেন করুনারত্নে। বল আগে লাগে প্যাডে। আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা গেল বল লাগত স্টাম্পেই, কিন্তু ইমপ্যাক্ট ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে। 
 
করুনারত্নের রান তখন ১৫। শ্রীলঙ্কার রান ১ উইকেটে ৩৭।

মেন্ডিসকে ফেরালেন রাজ্জাক
 
দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে আঘাত হানলেন আব্দুর রাজ্জাক। ফিরিয়ে দিলেন কুসল মেন্ডিসকে।
 
বাঁহাতি স্পিনারের দারুণ ডেলিভারিতে আসে প্রথম সাফল্য। অ্যাঙ্গেলে ভেতরে ঢোকা বল পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন মেন্ডিস। বলে-ব্যাটে করতে পারেননি। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর পর রিভিউ নিয়েছিলেন। তাতে পাল্টায়নি সিদ্ধান্ত।
 
৭ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার স্কোর ১৯/১। ক্রিজে দিমুথ করুনারত্নের সঙ্গী ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। অতিথিরা এগিয়ে ১৩১ রানে।

দারুণে সেশনে চালকের আসনে শ্রীলঙ্কা
 
দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনের দারুণ বোলিংয়ে ঢাকা টেস্টে চালকের আসনে বসেছে শ্রীলঙ্কা।
 
৪ উইকেটে ৫৬ রান নিয়ে দিন শুরু করা বাংলাদেশের শেষ ৬ উইকেট তুলে নিয়েছে ৫৪ রানে। স্বাগতিকদের ১১০ রানে থামিয়ে নিয়েছে ১১২ রানের লিড। 
 
লাঞ্চের আগে দুই ওভার ব্যাটিং করে কোনো উইকেট না হারিয়ে যোগ করেছে ৯ রান। দিমুথ করুনারত্নে ৬ ও কুসল মেন্ডিস ৩ রানে অপরাজিত। অতিথিরা এগিয়ে ১২১ রানে।

শ্রীলঙ্কার ১১২ রানের লিড
 
টার্নিং উইকেটে প্রথম ইনিংসে ১১২ রানের বড় লিড পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। অতিথিদের ২২২ রানের জবাবে ৪৫.৪ ওভারে বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে ১১০ রানে। ৭ বছর পর দেশের মাটিতে দেড়শ রানের নিচে অলআউট হল তারা। 
 
টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পর দায়িত্ব নিতে পারেনি মিডল অর্ডার। দলের বিপদে এগিয়ে আসতে পারেনি টেলএন্ডারও। নাইট ওয়াচম্যান মেহেদী হাসান মিরাজ কেবল দেখিয়েছেন এই উইকেট কেমন ব্যাটিং দরকার ছিল।
 
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
 
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৪৫.৪ ওভারে ১১০ (প্রথম দিন শেষে ৫৬/৪) (তামিম ৪, ইমরুল ১৯, মুমিনুল ০, মুশফিক ১, লিটন ২৫, মিরাজ ৩৮*, মাহমুদউল্লাহ ১৭, সাব্বির ০, রাজ্জাক ১, তাইজুল ১, মুস্তাফিজ ০; লাকমল ১২-৪-২৫-২, দিলরুয়ান ১১.৪-৪-৩২-২, দনঞ্জয়া ১০-২-২০-৩, হেরাথ ১২-১-৩১-০)

৩ রানে পড়ল শেষ ৫ উইকেট
 
দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনেই গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ। স্বাগতিকরা শেষ ৫ উইকেট হারাল মাত্র ৩ রানে। মুস্তাফিজুর রহমানকে এলবিডব্লিউ করে বাংলাদেশকে ১১০ রানে গুটিয়ে দেন দিলরুয়ান পেরেরা। রিভিউ নিয়েছিলেন মুস্তাফিজ কিন্তু তাতে কাজ হয়নি।
 
ঘরের মাঠে ৭ বছর পর দেড়শ রানের নিচে অলআউট হল বাংলাদেশ। দারুণ ব্যাটিং করা মেহেদী হাসান মিরাজ অপরাজিত থাকেন ৩৮ রানে।

রান আউট তাইজুল
 
কুসল মেন্ডিসের তৎপরতায় রান আউট হয়ে ফিরে গেছেন তাইজুল ইসলাম। 
 
মিডল স্টাম্পে দিলরুয়ান পেরেরার ফুল লেংথ বল কব্জির মোচড়ে ঘুরিয়ে একটু এগিয়ে গিয়েছিলেন তাইজুল। সুযোগটা কাজে লাগান শর্ট লেগের ফিল্ডার কুসল মেন্ডিস। বল ধরেই সরাসরি থ্রোয়ে বেলস ফেলে দেন।

দনঞ্জয়ার তৃতীয় শিকার রাজ্জাক
 
অভিষেকে উজ্জ্বল আকিলা দনঞ্জয়া পেলেন তৃতীয় উইকেট। ফিরিয়ে দিলেন আব্দুর রাজ্জাককে। অফ স্পিনারকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। 
 
৪৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১১০/৮। ক্রিজে মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গী তাইজুল ইসলাম।

এলেন আর গেলেন সাব্বির
 
হঠাৎ করেই টেস্ট দলে ফেরা সাব্বির রহমান টিকলেন মাত্র তিন বল। ফিরলেন শূন্য রানে। 
 
এক ওভারে মাহমুদউল্লাহর পর সাব্বির রহমানকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের লিডের আশা প্রায় শেষ করে দিলেন আকিলা দনঞ্জয়া। এই অফ স্পিনারকে স্ট্রেট ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন সাব্বির। বল স্পিন করায় যেভাবে খেলতে চেয়েছিলেন পারেননি। মিডউইকেটে নিচু ক্যাচ চলে যায় দিনেশ চান্দিমালর হাতে। 
 
৪৩ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ১০৭ রান। ক্রিজে মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গী আব্দুর রাজ্জাক।

অভিষেকে দনঞ্জয়ার প্রথম শিকার মাহমুদউল্লাহ

 
টেস্ট অভিষেকে নিজের প্রথম উইকেট পেলেন আকিলা দনঞ্জয়া। অফ স্পিনার ফিরিয়ে দিলেন মাহমুদউল্লাহকে।
অফ স্টাম্পের বাইরের স্পিন করে ভেতরে ঢোকা বল পা বাড়িয়ে খেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। বল ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে এলোমেলো করে দেয় স্টাম্প। 
১৭ রান করে ফিরে যান মাহমুদউল্লাহ।

বাংলাদেশের একশ
 
ঝুঁকিপূর্ণ শটে মাহমুদউল্লাহর চারে একশ রানে গেছে বাংলাদেশের সংগ্রহ। তিন অঙ্ক ছুঁতে স্বাগতিকদের লেগেছে ৩৯.২ ওভার।
 
রঙ্গনা হেরাথের জায়গায় বোলিংয়ে আসা অফ স্পিনার দিলরুয়ান পেরেরাকে রিভার্স সুইপ করে বাউন্ডারি তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ। একটুর জন্য প্রথম স্লিপে দিনেশ চান্দিমালের হাতে যায়নি ক্যাচ।
 
৪০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১০১/৫। মেহেদী হাসান ৩৩ ও মাহমুদউল্লাহ ১৬ রানে ব্যাট করছেন।

৩২ ওভারেই দুই রিভিউ শেষ শ্রীলঙ্কার
 
দ্বিতীয় দিন আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং করা মেহেদী হাসান মিরাজকে ফেরাতে রিভিউ নিয়ে ব্যর্থ হয় শ্রীলঙ্কা। 
 
সুরঙ্গা লাকমলের সুইং করে ভেতরে ঢোকা বল ব্যাটে খেলতে পারেননি মিরাজ। আঘাত হানে প্যাডে। আম্পায়ার জোরালো আবেদনে সাড়া না দিলে রিভিউ নেন দিনেশ চান্দিমাল। বল ট্র্যাঙ্কিংয়ে দেখা যায় লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে যেত বল; ছিল ওপরেও।   
 
৩২ ওভারেই শেষ হয়ে গেল শ্রীলঙ্কার দুই রিভিউ। এর আগে প্রথম দিন ১৯তম ওভারে রিভিউ নিয়ে নিয়ে ব্যর্থ হয়েছিল তারা।
 
৩২ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৮০/৫। মিরাজ ২৫ ও মাহমুদউল্লাহ ৩ রানে ব্যাট করছেন।

দিনের শুরুতেই ফিরলেন লিটন

 
বাজে শটে ফিরে গেলেন লিটন দাস। শরীর থেকে অনেক দূরের বল তাড়া করতে গিয়ে হলেন বোল্ড।
দারুণ লাইন লেংথে বোলিং করে ইনিংসে নিজের তৃতীয় উইকেট পেলেন সুরঙ্গা লাকমল। ছেড়ে দেওয়ার মতো বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে স্টাম্পে টেনে আনেন লিটন। 
দ্বিতীয় দিন সকালে দুই প্রান্তে দুই রকম শুরু পায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভারে লাকমলকে চার হাঁকান মেহেদী হাসান মিরাজ। পরের ওভারে লং অফ দিয়ে উড়ান রঙ্গনা হেরাথকে। অন্য প্রান্তে লিটন ছিলেন সাবধানী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফিরলেন বাজে শটে। 
২৮ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৭৫/৫। ক্রিজে মিরাজের সঙ্গী অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।

লিড সম্ভব?

বোলিংয়ের খুশি মিলিয়ে গেছে ব্যাটিংয়ের শুরুটায়। প্রথম দিনের শেষ বেলায় ব্যাট করতে নেমে ফিরে গেছেন প্রথম চার ব্যাটসম্যান। লিড নিতে লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির রহমানদের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ।

প্রথম দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৫৬ রান। ক্রিজে লিটনের সঙ্গী নাইটওয়াচম্যান মিরাজ। স্বাগতিকরা এখনও ১৬৬ রানে পিছিয়ে।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার সকালে সাড়ে নয়টায় শুরু হবে দ্বিতীয় দিনের খেলা।

প্রথম থেকে বল টার্ন পাচ্ছেন স্পিনাররা। কিন্তু আনপ্লেয়েবল নয় মিরপুরের উইকেট। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে রান পাওয়া সম্ভব। শ্রীলঙ্কার রোশেন সিলভা, বাংলাদেশের লিটন প্রথম দিন দেখিয়েছেন প্রয়োগ ঠিক থাকলে রান আসবেই।  

২ উইকেট বেশি হারিয়েছে বাংলাদেশ

একটি চার মেরে ইনিংসের প্রথম ওভারে ফিরে যান তামিম ইকবাল। দৃষ্টিকটু দুই আউটে বিদায় নেন মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম। চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে ইমরুল কয়েস ফিরে যাওয়ার সময় দলের রান ৪৫। বাকি সময়টা নাইটওয়াচম্যান মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে কাটিয়ে দেন লিটন দাস।

দিনের খেলা শেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা আব্দুর রাজ্জাক জানান, প্রথম দিন দুটি উইকেট বেশি হারিয়েছেন তারা। এখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর আত্মবিশ্বাস আছে স্বাগতিকদের।

শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং কোচ থিলান সামারাবিরা মনে করেন, প্রথম ইনিংসে ৩০ রান কম করেছেন তারা। প্রথম দিন শেষে তার কাছে দুই দল সমানে-সমান।

প্রথম দিন শেষে স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২২ ওভারে ৫৬/৪ (তামিম ৪, ইমরুল ১৯, মুমিনুল ০, মুশফিক ১, লিটন ২৪*, মিরাজ ৫*; লাকমল ৭-৩-১৫-২, দিলরুয়ান ৮-৩-২৫-১, দনঞ্জয়া ৩-১-৪-০, হেরাথ ৪-০-১১-০)

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ২২২