কারানের নৈপুণ্যে অস্ট্রেলিয়াকে হারাল ইংল্যান্ড

অস্ট্রেলিয়ার নতুন মাঠে শোনা গেল নতুন তারকার পদধ্বনি। পার্থ স্টেডিয়ামের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে দেখা গেল তরুণ টম কারানের বোলিং দ্যুতি। তার পাঁচ উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রোমাঞ্চকর ম্যাচে দারুণ জয় পেল ইংল্যান্ড।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2018, 12:40 PM
Updated : 28 Jan 2018, 12:40 PM

পঞ্চম ও শেষ ওয়ানডেতে ১২ রানে জিতেছে ওয়েন মর্গ্যানের দল। ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ ঘরে তুলেছে ইংল্যান্ড।

রোববার অতিথিদের ২৫৯ রান তাড়ায় ২৪৭ রানে থেমে যায় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস।

অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ভেন্যু ওয়াকায় আর আন্তর্জাতিক ম্যাচ হবে না। ওয়াকার জায়গা নিয়েছে ৫৫ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার পার্থ স্টেডিয়াম।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দলকে ভালো শুরু এনে দেন জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো। দুই জনে ১১.৩ ওভারে তুলেন ৭১ রান। জুটিতে অগ্রণী ছিলেন রয়। ৪৬ বলে ফিরেন ৪৯ রান করে।

অ্যালেক্স হেলসের সঙ্গে ৪৬ রানের জুটি গড়ে ফিরে যান বেয়ারস্টো। ৪৮ বলে ৪৪ রান করা ওপেনারকে বোল্ড করেন মিচেল স্টার্ক।

সিরিজ সেরা জো রুট আর হেলস দলকে ২ উইকেটে ১৫১ রানের দৃঢ় ভিতের ওপর দাঁড় করান। সেখান থেকে তিনশ রানে ছিল অতিথিদের নজর।

কিন্তু পরের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় এক সময়ে আড়াইশ রান করা নিয়েই শঙ্কায় পড়ে ইংল্যান্ড। তবে ৬৮ বলে মাত্র দুটি চারে ৬২ রান করা রুটের ব্যাটে লড়াইয়ের পুঁজি পায় দলটি।

৪৫ রানে ইংল্যান্ডের শেষ ৫ উইকেট তুলে নিয়ে লক্ষ্যটা নাগালে রাখে অস্ট্রেলিয়া। শেষের দিকে দারুণ বোলিং করা অ্যান্ড্রু টাই ৪৬ রানে ৫ উইকেট নিয়ে স্বাগতিকদের সেরা বোলার। মিচেল মার্শ ২ উইকেট নেন ২৪ রানে।

বাজে একটা ওয়ানডে সিরিজ কাটানো ডেভিড ওয়ার্নার বড় রান পাননি শেষ ম্যাচেও। বাঁহাতি ওপেনারকে ফিরিয়ে প্রথম ধাক্কাটা দেন কারান। মার্কাস স্টয়নিসের সঙ্গে ৬২ রানের জুটি গড়ে ফিরে যান আরেক ওপেনার ট্রাভিস হেড।

স্টয়নিস খেলছিলেন দারুণ। কিন্তু মইন আলির ছোবলে স্টিভেন স্মিথ ও মিচেল মার্শের দ্রুত বিদায়ে চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া।

দলে ফেরা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে ৫৬ রানের জুটিতে ধাক্কা সামাল দেন স্টয়নিস। এক সময়ে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ছিল ৪ উইকেটে ১৮৯ রান। ম্যাচ ঝুঁকে ছিল স্বাগতিকদের দিকে। কিন্তু বারবার রঙ পাল্টানো ম্যাচের তখনও অনেক নাটকীয়তা বাকি।

৯৯ বলে ৬টি চার ও চারটি ছক্কায় ৮৭ রান করা স্টয়নিসকে ফিরিয়ে ম্যাচের চিত্রটা পাল্টে দেন লেগ স্পিনার আদিল রশিদ। কারানের জোড়া আঘাতে ফিরে যান ম্যাক্সওয়েল ও স্টার্ক। দারুণ বোলিং করা মইন আলি দ্রুত ফিরিয়ে দেন টাইকে।

১৪ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকে যায় অস্ট্রেলিয়া। ব্যক্তিগত ৬ রানে হেলসের হাতে জীবন পাওয়া টিম পেইনের ব্যাটে জেগে উঠে স্বাগতিকদের আশা।

শেষ ৪ ওভার ২ উইকেট ২৫ রান দরকার ছিল অস্ট্রেলিয়ার। সে সময়ে বোলিংয়ে ফিরে পরপর দুই ওভারে কারান তুলে নেন ২ উইকেট। তৃতীয় ম্যাচে পান ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ উইকেটের স্বাদ।

অ্যাডাম জ্যাম্পাকে বোল্ড করার পর শেষ বাধা পেইনকেও বোল্ড করেন ২২ বছর বয়সী কারান। ৩৫ রানে ৫ উইকেট নিয়ে জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। অফ স্পিনে মইন ৫৫ রানে নেন ৩ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড: ৪৭.৪ ওভারে ২৫৯ (রয় ৪৯, বেয়ারস্টো ৪৪, হেলস ৩৫, রুট ৬২, মর্গ্যান ৩, বাটলার ২১, মইন ৬, রশিদ ১২, উইলি ২, কারান ১১*, বল ০; স্টার্ক ১/৬৩, হেইজেলউড ০/৫১, মার্শ ২/২৪, টাই ৫/৪৬, জ্যাম্পা ১/৪৬, ম্যাক্সওয়েল ০/২৩)

অস্ট্রেলিয়া: ৪৮.২ ওভারে ২৪৭ (ওয়ার্নার ১৫, হেড ২২, স্টয়নিস ৮৭, স্মিথ ১২, মার্শ ১৩, পেইন ৩৪, স্টার্ক ০, টাই ৮, জ্যাম্পা ১১, হেইজেলউড ০*; উইলি ০/৩৭, কারান ৫/৩৫, মইন ৩/৫৫, রশিদ ১/৫৫, বল ০/৫৮)

ফল: ইংল্যান্ড ১২ রানে জয়ী

সিরিজ: ৪-১ ব্যবধান জয়ী ইংল্যান্ডে

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: টম কারান

ম্যান অব দ্য সিরিজ: জো রুট